Unwanted Phone Calls

স্বাভাবিক অবস্থা

সেই সমস্ত ব্যক্তি এবং সংস্থার ক্ষেত্রেই এই খসড়া নির্দেশিকা প্রযোজ্য, যারা শুধু নিজেদের সুবিধার জন্য গ্রাহকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁকে ফোন করছে অথবা বার্তা পাঠাচ্ছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪ ০৭:৪৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বহু দিন ধরেই মোবাইলে আসা ব্যবসায়িক সংস্থার অবাঞ্ছিত প্রচারমূলক কল ও বার্তা নিয়ে তিতিবিরক্ত গ্রাহকেরা। অভিযোগ, এই সব অবাঞ্ছিত কলের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে বেশ নিয়মিতই। শুধু তা-ই নয়, অনেকেরই অভিযোগ যে, ‘ডু নট ডিসটার্ব’ (ডিএনডি) পরিষেবা নেওয়ার পরেও এমন এসএমএস বা কল থেকে রেহাই মিলছে না। এই সব কল-বার্তা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা দফতর একটি খসড়া নির্দেশিকা প্রকাশ করল। সেই সমস্ত ব্যক্তি এবং সংস্থার ক্ষেত্রেই এই খসড়া নির্দেশিকা প্রযোজ্য, যারা শুধু নিজেদের সুবিধার জন্য গ্রাহকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁকে ফোন করছে অথবা বার্তা পাঠাচ্ছে।

Advertisement

২০১৮ সালে অবাঞ্ছিত কল আটকানোর নিয়ম তৈরি করে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)। সেই নিয়ম অনুযায়ী বাণিজ্যিক কল, অর্থাৎ কোনও পণ্য বা পরিষেবা বিপণনের জন্য ফোন করতে হলে পৃথক লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। এ জন্য আলাদা কোড-সহ তাদের নম্বর দেয় টেলিকম পরিষেবা সংস্থা, যাতে মোবাইল গ্রাহক সেই কোড দেখে বাণিজ্যিক কল চিহ্নিত করতে পারেন। গ্রাহক চাইলে কলটি ধরবেন, না চাইলে নয়। নিয়ম অমান্যে জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, কিছু টেলিমার্কেটিং সংস্থা সেই লাইসেন্স এড়িয়ে সাধারণ মোবাইল মারফত কল বা এসএমএস করে। তাই গ্রাহকও বুঝতে পারেন না, এটি কোনও বাণিজ্যিক প্রচার কি না। দেখা যায়, এই ধরনের টেলিকলাররা একাধিক সংযোগ ব্যবহার করেন এবং ঘন-ঘন সিমও বদলান। নিয়ম অনুযায়ী টেলিমার্কেটারদের তাঁদের নম্বর রেজিস্টার করাতে এবং অযাচিত ফোন করার আগে ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ বা ডিএনডি পঞ্জি দেখে নিতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এঁরা সেই নিয়মের ধার ধারেন না এবং গ্রাহক অভিযোগ করলে দ্রুত নম্বর বদলে ফেলেন। এই জাতীয় সংস্থাগুলির উপর নজরদারি চালানো মুশকিল, তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারাও সহজ নয়।

ভারতে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে ‘ডিফল্ট অপশন’ বা ‘স্বাভাবিক ব্যবস্থা’ হল, তাঁদের ফোনে অযাচিত বাণিজ্যিক কল আসতেই থাকবে— তাঁরা যদি নিষ্কৃতি চান, তবে তাঁদের নিজেদের নম্বরটি ডিএনডি পঞ্জিতে নথিভুক্ত করাতে হবে। সে তালিকায় নাম তুললেও যে অবাঞ্ছিত কলের থেকে পুরোপুরি মুক্তি মেলে, তা নয়— কিন্তু প্রশ্ন হল, ‘স্বাভাবিক অবস্থা’টি এমন কেন? মোবাইল সংযোগমাত্রই তা ডিএনডি-তে নথিভুক্ত থাকবে, এবং কোনও গ্রাহক যদি বাণিজ্যিক কল গ্রহণে আগ্রহী হন, তবে তিনি উদ্যোগ করে নিজের নম্বরটি সেই পঞ্জি থেকে সরিয়ে নেবেন, এই ‘ডিফল্ট অপশন’ অবাঞ্ছিত কলের সমস্যা দূর করতে কার্যকর হতে পারে। আচরণবাদী অর্থনীতিতে ‘ডিফল্ট’ বিকল্প নিয়ে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষ সচরাচর ‘ডিফল্ট সেটিং’ পরিবর্তন করেন না। সে কারণেই, মানুষের পক্ষে ইতিবাচক বিকল্পকে ‘স্বাভাবিক ব্যবস্থা’ হিসাবে রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতির স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই সংযোগ নেওয়ার গোড়া থেকেই গ্রাহকদের এই সুবিধা দিক সরকার। বরং গ্রাহক যদি স্বেচ্ছায় এমন প্রচারমূলক কল বা বার্তা দ্বারা পীড়িত হতে চান, তিনি নিজ উদ্যোগে এই বিশেষ পরিষেবাটি বন্ধ করে দিন। কোনও সংস্থা নিয়ম অমান্য করলে কঠিন পদক্ষেপ করা হোক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement