Delhi Diary

জোটের মাটিও আঁকড়ে রাখবে মোদীর বৃক্ষাসন?

গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেই হোক বা দেশের প্রধানমন্ত্রী, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জোট ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে কখনও মাথা ঘামাতে হয়নি মোদীকে।

Advertisement

অগ্নি রায়, প্রেমাংশু চৌধুরী, অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪ ০৭:৩৪
Share:

আসছে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস (২১ জুন)। প্রধানমন্ত্রিত্বের তৃতীয় দফার শুরুতেই মোদী সক্রিয়, এ বারেও যোগকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয়ত্বের বার্তা দিতে চান। দিনটিকে উৎসবমুখর করতে আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতির পাশাপাশি মোদী নিজস্ব ঢঙে শুরু করেছেন প্রচার। এক্স হ্যান্ডলে নিজের মুখের আদলে অ্যানিমেশন করা ভিডিয়ো দিয়েছেন। সেখানে বৃক্ষাসন করে দেখাচ্ছেন মোদী। ভিডিয়োতে বলা হচ্ছে, বৃক্ষাসনের প্রধান গুণ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করা। বিশেষজ্ঞদের মত, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই আসনটির উপকারিতা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেই হোক বা দেশের প্রধানমন্ত্রী, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জোট ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে কখনও মাথা ঘামাতে হয়নি মোদীকে। এই প্রথম তিনি পুরোপুরি ভাবে নির্ভরশীল শরিক টিডিপি এবং জেডি(ইউ)-র উপর। বিরোধীরা হালকা চালে বলছেন, সরকার টিকিয়ে রাখতেও এ বার রাজনৈতিক বৃক্ষাসনের প্রয়োজন হতে পারে মোদীর!

Advertisement

প্রয়াস: অতীতে ২১ জুনে নরেন্দ্র মোদীর যোগাভ্যাস।

লাল ঝড়, প্রযত্নে রাহুল

লালে লাল হয়ে যাচ্ছে লখনউয়ের প্রকাশনী সংস্থা ইস্টার্ন বুক কোম্পানি। তাদের প্রকাশিত লাল রঙের পকেট সাইজ় সংবিধানের চাহিদা এতটাই তুঙ্গে যে, তারা নাকি কুলিয়ে উঠতে পারছে না! গোটা লোকসভা প্রচারে রাহুল গান্ধী ঘুরেছেন ওই পকেট-সংবিধানটি নিয়ে। প্রতিটি জনসভায়, সাংবাদিক সম্মেলনেও সেটিকে তুলে ধরে বলেছেন, মোদী সরকার এলে এই সংবিধান বদলে দেবে। ফলে সাবধান। এর পরই চাহিদা বাড়তে শুরু করে ওই পকেট-সংবিধানের। ফলাফলের পর তো বিক্রি হচ্ছে হুহু করে। ইতিমধ্যেই দশম সংস্করণ চলছে। এই কয়েক মাসের বিক্রি গোটা বছরের বিক্রয়ের সংখ্যাকে ছুঁয়ে ফেলেছে। প্রকাশনীর সংবিধানের সংস্করণটি তৈরি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট গোপাল শঙ্করনারায়ণন।

Advertisement

নতুন সমীকরণ

মায়াবতী উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকতে আইএএস অফিসার নবনীত সহগল বহেনজির আস্থাভাজন ছিলেন। পরে অখিলেশ যাদব লখনউয়ের তখ্‌তে বসলেন, তাঁর আমলেও নবনীত বড় দায়িত্ব পেলেন। পালাবদলের পর বিজেপি ক্ষমতায় এল। মুখ্যমন্ত্রী হলেন যোগী আদিত্যনাথ। নবনীত সহগল তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্যসচিব হলেন। একেবারে যোগীর বাসভবনেই তাঁর নিত্য যাতায়াত। কিন্তু আস্থায় বোধ হয় ফাটল ধরল। অবসরের পরে যোগীর আস্থাভাজন অন্য আমলারা নতুন দায়িত্ব পেলেন। নবনীত বাদ পড়লেন। সেই নবনীতকে এখন মোদী সরকার দিল্লিতে প্রসার ভারতীর চেয়ারম্যান পদে নিয়ে এসেছে। চার বছর খালি পড়ে ছিল এই চেয়ারম্যানের পদ। যোগীর অপছন্দের তালিকায় চলে যাওয়া আমলার মোদী সরকারের পছন্দের তালিকায় প্রবেশের রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে কি না— জোর চর্চা চলছে দিল্লিতে।

স্পিকারের প্রত্যাবর্তন?

নজরে: ওম বিড়লা।

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। মীরা কুমার আর ভোটে জেতেননি। সুমিত্রা মহাজনকে বিজেপি আর প্রার্থীই করেননি। কুড়ি বছরের গেরো কাটিয়ে গত লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ফের নির্বাচনে জিতে লোকসভায় ফিরলেন। অনেকের ধারণা ছিল, রাজস্থানের কোটার সাংসদ ওম বিড়লাকে এ বার কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। তা হলে কি তিনি ফের লোকসভার স্পিকার হবেন? বিজেপির একাংশের মতে, ভালই হবে। এ বার বিরোধীদের শক্তি বেশি। তাই কড়া স্পিকার প্রয়োজন। তেলুগু দেশম পার্টি স্পিকারের পদ চাইছিল বটে। অটলবিহারী বাজপেয়ীর এনডিএ সরকারের আমলে তেলুগু দেশমের জিএমসি বালাযোগী লোকসভার স্পিকার হয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। তেলুগু দেশমের নেতাদের মনটা তাই খচখচ করছিল। বিজেপি অবশ্য স্পিকারের পদ ছাড়তে নারাজ। সেখানে ওমের প্রত্যাবর্তন হয় কি না, এ বার সেটাই দেখার।

সপরিবার শপথগ্রহণে

মোদী জমানায় পরিবারকে সাধারণত অন্তরালেই রাখেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার মুহূর্তে গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের সঙ্গে ছিল তাঁর পুরো পরিবার। রেল প্রতিমন্ত্রী হিসাবে রভনীত সিংহ বিট্টুর দায়িত্ব নেওয়ার সময়েও উপস্থিত ছিল পুরো পরিবার। মোদী মন্ত্রিসভায় যে বিজেপি প্রার্থীরা হেরেও মন্ত্রী হয়েছেন, বিট্টু তাঁদের অন্যতম। রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ঠ ওই নেতা ভোটের ঠিক আগে বিজেপিতে যোগদান করলেও, লুধিয়ানা থেকে লড়ে হেরে যান। মূলত পঞ্জাবের শিখ প্রতিনিধি রাখার জন্য তাঁকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement