জাপানের ‘মিয়াজ়াকি’ আমের একখানার দামই ১০,০০০ টাকা। তবে জাপানে নয়, সে আমের চাষ হচ্ছে এখন খাস বাংলায়। এর সঙ্গে তাইল্যান্ডের ‘কিং অব চাকাপাত’, আমেরিকার ‘রেড পামার’ থেকে ৭,০০০ টাকার ইন্দোনেশিয়ার ‘ব্ল্যাক স্টোন’ আমও বাংলা থেকে দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত ‘বাংলার আমমেলা’য় হাজির হয়েছিল। বাংলার নিজস্ব হিমসাগর, লক্ষ্মণভোগ, ল্যাংড়া, কোহিতুর, ফজলি, মল্লিকার জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকা দিল্লির মানুষ এই বচ্ছরকার আমমেলার দিকে চেয়ে থাকেন। তাঁরা হতাশ হননি। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, বাঁকুড়া, নদিয়া থেকে আসা ৪০,০০০ কেজি আম বিক্রি হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের তথ্য উপ-অধিকর্তা শাশ্বত দাঁ জানাচ্ছেন, দিল্লির জনপথে হ্যান্ডলুম হাটের মেলাটিতে দু’সপ্তাহে মোট ৩৮,৪৪,০০০ টাকার আম বিক্রি হয়েছে। আরও প্রায় ৫,৯০,০০০ টাকার আচার থেকে জেলির মতো আমের তৈরি নানা খাদ্যপণ্য বিক্রি হয়েছে। আম কিনতে এসে দিল্লির মানুষ এক কোটি টাকার বেশি মূল্যের বাংলার হস্তশিল্পও কিনেছেন।
আমদরবার: দিল্লির জনপথে আয়োজিত ‘বাংলার আমমেলা’র এক ঝলক।
পরিচয়পত্র কোথায়
অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনে সর্বক্ষণ সাংসদের আই-ডি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেল তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রবীণ সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে। সদ্য সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পেয়েছে আধাসামরিক বাহিনী সিআইএসএফ। তাদের কাছে সাধারণ দর্শক থেকে সাংসদ— সকলেই এক। ডিএমকে দলের এক লোকসভা সাংসদ কেন লোকসভা কক্ষের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রক্ষীরা। শেষে তাঁকে গলা চড়াতে হয়, “আমি সাংসদ। যত বার ইচ্ছে তত বার লোকসভায় যাব।” ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে অভব্যতার অভিযোগও জমা পড়েছে সংসদ সচিবালয়ে। সব দেখে তিন বারের সাংসদ সুখেন্দুর মন্তব্য— “কী দরকার এদের সঙ্গে ঝামেলার? বলব এক, বুঝবে আর এক। বরং আই কার্ড গলায় থাকাই ভাল।”
আয়ুষ্মান সাংসদেরা
সরকারের আয়ুষ্মান ভারত নিয়ে বলতে গিয়ে নতুন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা সহ-সাংসদদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমরা সবাই ষাটের কোঠায়। সত্তর পার হলেই এই যোজনার সুবিধা আমরাও পাব।” মন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছিলেন যে কেন্দ্রীয় যোজনাটির সুবিধা প্রত্যেকেই পাবেন, সে তাঁর আর্থিক বিত্ত যা-ই হোক না কেন। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় সঙ্গে সঙ্গে মনে করিয়ে দেন কংগ্রেস সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি সত্তর পেরিয়ে গিয়েছেন, ফলে তিনি আয়ুষ্মান ভারত যোজনার আওতাভুক্ত! অনেকে মনে করিয়ে দেন যে, জয়রাম রমেশও রয়েছেন এই বয়সবন্ধনীতে।
শৌখিন সুদীপ
নবরূপে সুদীপ বন্দ্যোপধ্যায়।
তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোশাকের প্রশংসায় বরাবরই মুখর তাবড় সাংসদরা। খোদ প্রধানমন্ত্রী থেকে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী পর্যন্ত তাঁর জওহর কোটের তারিফ করেছেন। শীতকালীন অধিবেশনে সুদীপের শালও ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রে। তবে এ বার পোশাক নয়, সুদীপের বদলে যাওয়া কেশবিন্যাস সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনের মুখ্য আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠল। নুন-মরিচ চুলদাড়িতে সুদীপকে দেখেই অভ্যস্ত নেতারা। কিন্তু লোকসভা ভোট জিতে আসার পর দেখা গেল ধপধপে সাদা এবং বেশ দ্যুতিময় তাঁর কেশ। বিন্যাসও ভিন্ন। এমনটা আগে কখনও দেখা যায়নি। রাজ্যসভার তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন তো বলেই ফেললেন, বর্ষীয়ান এই নেতাকে এ বার ব্রিটিশ পার্লামেন্টেই মানাবে ভাল! সনিয়া গান্ধীও এই পরিবর্তন দেখে অবাক। অধিকাংশেরই প্রশ্ন, এই রং স্বাভাবিক ভাবে চুল পেকে হয়েছে, না কোনও বিশেষ রং ব্যবহার করা হয়েছে? সুদীপ একান্তে জানিয়েছেন, তিনি কারও ভুল ভাঙাচ্ছেন না! বাড়িতে সিনেমা জগতের লোক থাকলে, এমন অনেক কিছুই তো ঘটে!
মনোযোগের কেন্দ্রে
লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গের নতুন সাংসদদের মধ্যে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সংসদে কর্মরত বাঙালি কর্মীদের মধ্যেও প্রবল আগ্রহ তাঁকে ঘিরে। অনেকেই এসে হাত মিলিয়ে যাচ্ছেন। সাংবাদিকেরাও ঘিরে ধরছেন তাঁকে। সংসদে নতুন ইনিংস শুরু করছেন তিনি। সময় পেলেই ভাল করে ঘুরে নিচ্ছেন গোটা সংসদ। তাঁর কথায়, “এখন কেবল শিখছি।”