London Diary

লন্ডন ডায়েরি: এ বার প্রকাশ্যে আসুক গোপন ইতিহাস

ভারতে তখন ব্রিটিশ শাসন। ১৯৪৩ সালে বাংলার দুর্ভিক্ষে প্রাণ গিয়েছিল অন্তত ত্রিশ লক্ষ বঙ্গবাসীর। এ বার সেই ঘটনা ৮০ বছরে পা দেবে।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৫:২৬
Share:

ফাইল ছবি।

ব্রিটেনের রাজপরিবারের ইতিহাস সহজে মেলার উপায় নেই তেমন। উইনসর দুর্গের ‘রয়্যাল কালেকশন’-এ সযত্নে লুকিয়ে রাখা তেমনই বিভিন্ন নথি এ বার সাধারণ মানুষের জন্য প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন ব্রিটেনের ইতিহাসবিদরা। সেই সব নথি জানা গেলে রাজপরিবারের ইতিহাস নাকি অনেক পাল্টে যেত। এক গবেষক সম্প্রতি দাবি করেছেন, রাজপরিবারের নথি পাননি বলে একটি বইয়ের প্রকল্প মাঝপথে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তাঁর দাবি, তিনি ব্রিটেনের রাজা ষষ্ঠ জর্জের ভাই, যুবরাজ জর্জের উপরে বই লিখতে চেয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, ১৯৪২ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান যুবরাজ। তিনি তখন রয়্যাল এয়ার ফোর্সের সদস্য ছিলেন।

Advertisement

ইতিহাস: যুবরাজ জর্জ ও রানি এলিজ়াবেথ

ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, অষ্টম এডওয়ার্ড যখন রাজত্ব ছেড়ে দেন, তখন তাঁর ভাই, যিনি রাজা ষষ্ঠ জর্জ হিসেবে সিংহাসনে বসেন, তিনি আদৌ শাসক হিসেবে সফল হবেন কি না, তা নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহ ছিল। মনে করা হয়েছিল যে, রানি মেরি একটা সময় পর্যন্ত রাজত্ব দেখাশোনা করবেন। তার পরে যুবরাজ জর্জই হবেন পরবর্তী রাজা। সে রকম হলে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ ব্রিটিশ রাজসিংহাসনে বসতেই পারতেন না। রাজা হতেন তাঁর খুড়তুতো ভাই ডিউক অব কেন্ট। কিন্তু রাজপরিবারের ইতিহাস কেউ জানতে পারে না বলেই এই তথ্য কখনও প্রকাশ্যে আসেনি, দাবি ওই গবেষকের।

ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার

Advertisement

গত বছর মাত্র ছ’মাসের মধ্যে তিন বার প্রধানমন্ত্রী বদল হয়েছিল ব্রিটেনে। আন্তর্জাতিক স্তরে ব্রিটেনের কনজ়ার্ভেটিভ পার্টিকে নিয়ে আড়ালে-আবডালে হাসিঠাট্টাও চলেছে বিস্তর। তবে তা মোটেও ভাল চোখে দেখেননি ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। বিশ্বের দরবারে ব্রিটিশ রাজনীতি তথা নিজের দলকে আরও এক বার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সুযোগ খুঁজছিলেন তিনি। রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানকে তাই হাতিয়ার করতে চান ঋষি। ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের শেষকৃত্যে সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাষ্ট্রনেতা ও তাঁদের প্রতিনিধিরা লন্ডনে এসেছিলেন। রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে তার থেকেও বেশি সংখ্যক রাজনৈতিক নেতার উপস্থিতি চাইছেন ঋষি। আগামী ৮ মে তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক হওয়ার কথা। অনুষ্ঠানকে ঘিরে এখন থেকেই সাজো সাজো রব ব্রিটেনে। বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়নেও কোনও কিছুর ত্রুটি রাখতে চাইছে না ঋষি সরকার।

দুর্ভিক্ষের আট দশক

ভারতে তখন ব্রিটিশ শাসন। ১৯৪৩ সালে বাংলার দুর্ভিক্ষে প্রাণ গিয়েছিল অন্তত ত্রিশ লক্ষ বঙ্গবাসীর। এ বার সেই ঘটনা ৮০ বছরে পা দেবে। বাংলার দুর্ভিক্ষ তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের কর্মকালের এক কালো অধ্যায় বলে মনে করেন ব্রিটেনের এখনকার প্রজন্ম। এক সময় চার্চিলই নায়ক ছিলেন। বিশেষত, এখন যাঁদের বয়স ষাটের উপরে, তাঁদের অনেকেই মনে করেন যে, ঔপনিবেশিক রাজত্বকালে চার্চিল ব্রিটেনের অন্যতম সফল শাসক তথা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু ব্রিটেনের বর্তমান সেকেন্ডারি স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীদের বাংলার দুর্ভিক্ষের ইতিহাস পড়াচ্ছেন তাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। যেখানে বলা হচ্ছে, বাংলার শস্যভান্ডারে টান পড়বে জেনেও জোর করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াইরত ব্রিটিশ সেনাদের জন্য বস্তা বস্তা চাল পাঠিয়েছিলেন চার্চিল।

মহামূল্য: নিলামে মুর্শিদাবাদের মুদ্রা

মুদ্রার দাম

পুরনো মুদ্রা দামে বাড়ে। গত ৪৫ বছর ধরে ১২০০-রও বেশি মুদ্রা সংগ্রহ করেছেন ব্রিটিশ দম্পতি রজার ও নরমা পুডেস্টার। সামনের মাসে নিলামে উঠবে সে সব মুদ্রা। দাম উঠতে পারে ২০ লক্ষ ডলার পর্যন্ত। এর বেশির ভাগই ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালের সময়কার। এক সময়ে ভারতে ছিলেন পুডেস্টার দম্পতি। তখন কম দামে মুদ্রাগুলি সংগ্রহ করেছিলেন তাঁরা। সোনা, রুপো, তামার মতো ধাতু দিয়ে তৈরি মুদ্রাগুলো এখন দুষ্প্রাপ্য। ব্রিটেনের রানি প্রথম এলিজ়াবেথের নাম রয়েছে এর কয়েকটিতে। ১৫ টাকার একটি সোনার মোহরেরই অন্তত দেড় লক্ষ পাউন্ড দর উঠতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। সেই নিলামে বাংলারও যোগ রয়েছে বিলক্ষণ। মুর্শিদাবাদের নবাব দ্বিতীয় শাহ আলমের নামাঙ্কিত একটি মুদ্রারও প্রচুর দর উঠবে বলে ধারণা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement