London Diary

লন্ডন ডায়েরি: ইন্ডিয়া হাউসের দরজা খুলল সবার জন্য

২০২২-এর শেষে কিঞ্চিৎ ফাঁপরেই পড়েছিলেন ব্রিটেনের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। এক দিকে ডাকবিভাগ, স্বাস্থ্যকর্মী ও সীমান্ত সুরক্ষাকর্মীদের ধর্মঘট নিয়ে নাজেহাল।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৪:৫৩
Share:

লন্ডন ডায়েরি। ফাইল চিত্র।

ভারতীয় হাই কমিশনের ভবন ‘ইন্ডিয়া হাউস’-এর অন্দরসজ্জা কেমন— দীর্ঘ দিন ধরেই তা নিয়ে কৌতূহল মানুষের। নতুন বছরে তা নিরসন হবে ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সৌজন্যে। এ বার থেকে সাধারণের জন্য হাই কমিশনের বিশেষ বিশেষ জায়গা ঘুরে দেখানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Advertisement

সালটা ১৯২২। কমিশনের তখন নিজস্ব কোনও বাড়ি নেই। তৎকালীন ভারতীয় হাই কমিশনার অতুল চট্টোপাধ্যায় প্রথম এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। বিস্তর চিঠি চালাচালির পরে নিজস্ব দফতরের অনুমতি পাওয়া যায়। ব্রিটিশ স্থাপত্যবিদ হারবার্ট বার্কারকে দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্মাণের। কাজ শুরু করেন স্থপতি। অবশেষে, ১৯৩০ সালে, রাজা পঞ্চম জর্জ সোনালি চাবি ঘুরিয়ে দ্বারোদ্ঘাটন করেন ‘ইন্ডিয়া হাউস’-এর।

অন্দরসজ্জায় ভারতীয় শিল্পকলাকেই মূলত প্রাধান্য দিয়েছিলেন বার্কার। বাংলা থেকে মুরাল আঁকতে লন্ডনে আমন্ত্রণ জানানো হয় চার বিখ্যাত শিল্পীকে— ললিতমোহন সেন, রণদাচরণ উকিল, ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ দেব বর্মা ও সুধাংশুশেখর চৌধুরী। কেনসিংটনের রয়্যাল কলেজ অব আর্টসের অধ্যাপক স্যর উইলিয়াম রথেনস্টাইনের কাছে তাঁরা দীর্ঘ ১৮ মাস তালিম নেন। হাতেকলমে অভিজ্ঞতার জন্য ভেনিস ও রোম সফরেও যান তাঁরা। তার পরে চার শিল্পীর অনবদ্য দেওয়ালচিত্রে সেজে ওঠে হাই কমিশন। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিল্পীদের কাজ দেখতে এখানে এসেছিলেন। লন্ডনের অন্যতম দিকচিহ্ন এই ভবন।

Advertisement

ঐতিহ্য: ইন্ডিয়া হাউস-এর অন্দরসজ্জা; ডান দিকে, দ্বারোদ্ঘাটনের সোনালি চাবি

বাড়তি

নতুন করে কী কী বিতর্ক উস্কে দেবে রাজকুমার হ্যারির আত্মজীবনী স্পেয়ার, জল্পনা এখন তা নিয়েই। বিতর্ক বইটির নামেও। রাজকুমারের নিজের বয়ানে, রাজপরিবারের প্রথম সন্তান হচ্ছেন ‘এয়ার’ বা উত্তরাধিকারী, যাঁর জন্য সংরক্ষিত থাকে সিংহাসন। আর বাকি সন্তানেরা ‘স্পেয়ার’ বা বাড়তি, অর্থাৎ উপস্থিত থাকা ছাড়া যাঁদের কোনও কাজে লাগে না। তিনি নিজেও সে রকমই এক ‘স্পেয়ার’ বা বাড়তি, লিখেছেন হ্যারি। আত্মজীবনীতে তুলে ধরেছেন ‘স্পেয়ার’ হওয়ার নানা সমস্যার কথা। জোর চর্চা, হ্যারি সম্ভবত রাজা তৃতীয় চার্লস ও কুইন কনসর্ট ক্যামিলাকে নিয়ে বেশ কিছু তথ্য দেবেন। বাদ যাবেন না তাঁর দাদা যুবরাজ উইলিয়ামও। যাঁর বিরুদ্ধে হ্যারির অভিযোগ, প্রায়শই ভাইয়ের উপরে চিৎকার করতেন তিনি। হ্যারির এই বই নিয়ে প্রবল অস্বস্তিতে রাজপরিবার। সূত্রের খবর, এ বার স্যানড্রিংহ্যামের বড়দিনের পার্টিতে একটাই অলিখিত নিয়ম ছিল— হ্যারি-মেগানের প্রসঙ্গ যেন কোনও মতেই তোলা না হয়।

নতুন ভাবমূর্তি

২০২২-এর শেষে কিঞ্চিৎ ফাঁপরেই পড়েছিলেন ব্রিটেনের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। এক দিকে ডাকবিভাগ, স্বাস্থ্যকর্মী ও সীমান্ত সুরক্ষাকর্মীদের ধর্মঘট নিয়ে নাজেহাল। অন্য দিকে, একটি হোমলেস সেন্টার পরিদর্শনে গিয়ে এক গৃহহীনকে বেফাঁস প্রশ্ন করে ঘরে-বাইরে নিন্দার মুখে পড়েন তিনি। নতুন বছরে তাই নতুন ভাবমূর্তি নিয়ে হাজির হতে চান ঋষি সুনক। এবং এই কাজে অবশ্যই তাঁর পাশে আছেন স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি। সম্প্রতি এক লাইফস্টাইল পত্রিকার কভার স্টোরিতে ঠাঁই পেয়েছেন অক্ষতা। পত্রিকার এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে তাঁর প্রিয় বন্ধুদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে। তাঁরা সকলেই এক বাক্যে জানিয়েছেন, অক্ষতা অত্যন্ত বিনয়ী এবং সন্তানদের সাধারণ ভাবেই বড় করতে চান।

সেই বাড়ি এবং তাঁদের ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের সরকারি বাসভবন, দু’জায়গার অন্দরসজ্জাই অক্ষতা করেছেন নিজের হাতে। ব্যবহার করেছেন স্থানীয় হস্তশিল্প। বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁর স্ত্রী ক্যারি সরকারি বাসভবনটিকে সাজিয়েছিলেন অত্যন্ত বিলাসবহুল ভাবে। অক্ষতা সেই রাস্তায় হাঁটেননি।

অর্ধাঙ্গিনী: ঋষি সুনকের স্ত্রী অক্ষতা

শুধুই একটি নম্বর

কারাগারে সকলেই একটি নম্বর— নতুন বছরে এমনই অনুভূতি বিশ্বের প্রাক্তন পয়লা নম্বরের টেনিস প্লেয়ার বরিস বেকারের। সম্পত্তি গোপন করে নিজেকে ‘কপর্দকহীন’ ঘোষণা করার জন্য জেল হয়েছিল তাঁর। সম্প্রতি ছাড়া পেয়েছেন। জেলে তাঁর নম্বর ছিল এ২৯২৩ইভি। এক সাক্ষাৎকারে বরিস বলেন, “জেলে আমায় কেউ বরিস বলে ডাকেনি। সকলের কাছেই আমি ছিলাম ওই নম্বরটা।” জেলে তিনি কয়েদিদের জার্মান ও অঙ্ক শেখাতেন বলে জানিয়েছেন বেকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement