সম্মান: লন্ডনের বাড়ির বাইরে যুবরানি ডায়ানা
বিয়ের আগে লন্ডনের চেলসি-র ফ্যাশনদুরস্ত এলাকা ৬০ কোলের্ন কোর্টের ফ্ল্যাটে থাকতেন ডায়ানা। এ বছর তাঁর ৬০ বছরের জন্মদিনে (জন্ম ১৯৬১), সেখানে ‘ব্লু প্লাক’ (নীল ফলক) বসবে। অষ্টাদশী লেডি ডায়ানা স্পেনসারের জন্য ৫০,০০০ পাউন্ডে এক প্রাসাদের অংশবিশেষ কিনেছিলেন তাঁর বাবা-মা। ডায়ানা তখন সেন্ট্রাল লন্ডনের কিন্ডারগার্টেনে কর্মরতা। ডায়ানা বলেছেন, তিন বেডরুমের ফ্ল্যাটে তিন বান্ধবীর সঙ্গে জীবনের সুখীতম সময় কেটেছে। বলেছেন, “বালখিল্য, নিষ্পাপ, জটিলতাবিহীন। হাহাহিহিতে ভরা।”
ডায়ানা যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে বাগ্দানের খবর দিচ্ছেন বন্ধুদের, দ্য ক্রাউন টিভিসিরিজ়ের দর্শকদের মনে পড়বে এই দৃশ্য। তিন বন্ধু ক্যারোলিন, ভার্জিনিয়া ও অ্যান ডায়ানাকে সপ্তাহে ১৮ পাউন্ড ভাড়া দিতেন, চার জনে পালা করে ফ্ল্যাট তকতকে রাখতেন। চার্লসের সঙ্গে ডায়ানার নাম জুড়তেই পাপারাৎজি জমতে শুরু করল ফ্ল্যাটের বাইরে।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগের রাতে ক্ল্যারেন্স হাউসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। নীল ফলকের জন্য ডায়ানার নাম প্রস্তাব করেছেন লন্ডনবাসীরা। রাজপরিবারের প্রাক্তন সদস্যদের মধ্যে তাঁকে মর্যাদার শীর্ষে পৌঁছে দেবে এই সম্মান। সমাজসেবা, সাংস্কৃতিক আইকন রূপে আজও তাঁর গ্রহণযোগ্যতার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। সকলের সঙ্গে সহজে মিশতে পারতেন। মৃত্যুর প্রায় ২৫ বছর পরেও তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা না পড়ার সেও এক কারণ। ১৯৯৭-এ প্যারিসে গাড়ি-দুর্ঘটনায় প্রয়াত হন ডায়ানা।
নীল ফলক বসবে ফ্ল্যাটটিতে।
বিদায় ফিলিপ
যুগান্ত: প্রিন্স ফিলিপ (১৯২১-২০২১)
৭৩ বছর ধরে রানির পাশে থেকেছেন তাঁর স্বামী প্রিন্স ফিলিপ। ৯৯ বছরে বয়সে তাঁর মৃত্যুর পর, বাকিংহাম প্রাসাদ ও উইনসর কাস্লের বাইরে জমছে ফুলের স্তূপ। কোভিড ১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও শ্রদ্ধা জানিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। যুবরানি ডায়ানার মৃত্যুর পর এই প্রথম জনসাধারণ রাজপরিবারের সদস্যের মৃত্যুতে এই পর্যায়ের শোক পালন করছে। ২০০২-এ প্রিন্সেস মার্গারেট ও রাজমাতার মৃত্যুর পরেও কিন্তু এতটা দেখা যায়নি। গত দু’দিন ধরে রেডিয়ো ও টিভিতে লাগাতার শ্রদ্ধাজ্ঞাপন চলছে। মিউজ়িক চ্যানেল ও রেডিয়োয় বাজছে সময়োপযোগী সঙ্গীত। উচ্চগ্রামের রক বা পপ গান আপাতত স্থগিত। যুবরানি ডায়ানার মৃত্যু-পরবর্তী সময়ের মতো, যখনই সিংহাসন সমস্যায় পড়েছে, রানিকে ভরসা জুগিয়েছেন প্রিন্স ফিলিপ। পরিবারের সঙ্গে হ্যারি-মেগানের বিচ্ছেদ, ওপরা উইনফ্রে-র শো-এর পরে ইদানীং ফের ঝড়ের মুখে রাজতন্ত্র। তাই প্রিন্স ফিলিপের শূন্যতা এখন আরও বেশি অনুভব করবেন রানি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, উইনসরে ডিউক অব এডিনবরার শেষকৃত্যেই বহু মাস পরে উইলিয়াম আর হ্যারির দেখা হবে। সম্পর্কের চিড় কি একটু জুড়বে তখন?
আবার জমবে নাটক
শেক্সপিয়র স্মৃতিধন্য লন্ডনের গ্লোব থিয়েটারে নাট্যপ্রেমীরা ফিরবেন মে মাসে। তবে কিছু বদল থাকবে। সামাজিক দূরত্ব মানতে ও জমায়েত এড়াতে পানশালায় সুরাপাত্র থাকবে না, শৌচবিরতিও থাকবে না। নাটক হবে টানা, বিরতি ছাড়া। শেক্সপিয়রের আমলেও নাকি গ্লোবে এমনটাই হত। আর নাটকের মধ্যে তো কোথাও বিরতির উল্লেখ নেই, ওতে নাটকের গতি ও ছন্দ বিঘ্নিত হয়। তবে, থিয়েটারের শিল্পনির্দেশকের আশ্বাস, টানা আড়াই ঘণ্টার নাটকের মধ্যে প্রয়োজনে শৌচাগার ঘুরে এলেও ক্ষতি নেই। মহাকবি তো সব কিছুই অন্তত তিন-চার বার করে বলেছেন। তবে, শেক্সপিয়রের সময় যেমনটা হত, দর্শকেরা মঞ্চের সামনে তেমন ভাবে ভিড় করে দাঁড়াতে পারবেন না। অতিমারি-কালে সেই দাঁড়ানোর জায়গাটায় দূরত্ববিধি মেনে চেয়ার সাজানো থাকবে। নতুন মরসুমে দেখা যাবে আ মিডসামার নাইট’স ড্রিম, রোমিয়ো অ্যান্ড জুলিয়েট, টুয়েলফ্থ নাইট।
নয়া আকর্ষণ
অতিমারি, লকডাউনের জেরে খাঁ-খাঁ করছে অক্সফোর্ড স্ট্রিট। এক সময় ভারত, চিন, জাপান, পশ্চিম এশিয়ার পর্যটকে গমগম করত এই রাস্তা। টপশপ, ডেবেনহ্যামস প্রভৃতি মেগাব্র্যান্ডগুলিও দোকান তুলে দিয়েছে। অতিমারির পর মানুষকে ফেরাতে রাস্তার প্রান্তে শ্বেতপাথরের খিলানের উপর একটি মঞ্চের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২৫ মিটার উঁচু, ঘাসে মোড়া অস্থায়ী মঞ্চটিতে দাঁড়ালে দেখা যাবে হাইড পার্ক, মেফেয়ার, মার্লিবোন। মঞ্চটি উদ্বোধনের কথা গ্রীষ্মে।