লন্ডন মিউজ়িয়ামে ঢুকে পড়ল ট্রাম্প-বেলুন
হোয়াইট হাউস ছাড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তাঁর আদলে তৈরি বিখ্যাত ‘বেবি ট্রাম্প’বেলুন লন্ডনে মিউজ়িয়ামে ঢুকে পড়ে ইতিহাসে জায়গা পাকা করে ফেলল। হাওয়ায় ভরা ট্রাম্পের ছ’মিটার উঁচু ব্যঙ্গপ্রতিরূপটি আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের প্রতিবাদের প্রতীক। জনতহবিলে বানানো হিলিয়াম গ্যাস ভরা বেলুনটিতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ন্যাপি পরা কমলা রঙের দাঁত খিঁচোনো শিশু, খুদে হাতে স্মার্টফোন খামচে আছেন। ২০১৮-য় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম ব্রিটেন-সফরকালে প্রতিবাদ হিসাবে পার্লামেন্ট স্কোয়্যারের আকাশে উড়েছিল এই বেলুন। ২০১৯-এ ট্রাম্প আবার ব্রিটেনে এলে ফের ভেসে উঠেছিল বেলুন। উড়েছিল ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, আয়ারল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায়।
লন্ডন মিউজ়িয়াম জানিয়েছে, জাদুঘরের ‘প্রতিবাদ সংগ্রহ’-এ ভোটাধিকার, জলবায়ু, শান্তি আন্দোলনের শিল্পস্মারকগুলির সঙ্গে ট্রাম্প-বেলুনটিও থাকবে। রাজনীতি নিয়ে জাদুঘর মাথা ঘামায় না। তবে ব্যঙ্গবিদ্রুপ ব্রিটিশদের ভারী পছন্দের প্রতিক্রিয়া, বেলুনটিতে তারই ছোঁয়া মেলে। জাদুঘর-কর্ত্রী বলেছেন, “আমরা কৌতুকের ঢালাও ব্যবহার করি। নেতাদের নিয়ে ঠাট্টা করি। আক্ষরিক অর্থেই এটি তার বিরাট উদাহরণ। আর এসেছেও দারুণ সময়ে। ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প’ যখন শেষ লগ্নে। মজার কথা, জাদুঘরে বেলুনটি এখন কোয়রান্টিনে। সাজিয়ে রাখার আগে সব কিছুকেই কোয়রান্টিনে রাখা হয়। পোকামাকড় থাকতে পারে তো, তাই।”
প্রতিবাদ: ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদলে তৈরি ‘বেবি ট্রাম্প’ বেলুন।
ক্যাথিড্রালে প্রতিষেধক
উইনচেস্টারের স্যালিসবেরির বাসিন্দারা প্রতিষেধক নেবেন ৮০০ বছর বয়সি ক্যাথিড্রালে। ঘষা কাচের জানলা আর হলঘরে সাজানো সুউচ্চ চূড়ার সুবিখ্যাত স্যালিসবেরি ক্যাথিড্রাল এখন ব্রিটেনের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ও ঐতিহাসিক প্রতিষেধক প্রদানকেন্দ্র। লকডাউনে ক্যাথিড্রালে ‘সার্ভিস’ (সমবেত উপাসনা) বন্ধ। স্যালিসবেরির ডিন এটিকে প্রতিষেধককেন্দ্র হিসাবে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বলেছেন, “ঈশ্বরের মহিমা প্রচার ও এলাকাবাসীর সেবাই ৮০০ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্য সাধনে টিকাকরণ আয়োজনের চেয়ে ভাল আর কী? এত সুন্দর বাড়িতে এলেই তো মানুষ সুচের ব্যথা ভুলে যাবেন।” প্রতিষেধকের প্রতীক্ষারত বয়স্ক মানুষদের আনন্দ দিতে ক্যাথিড্রালে ফাদার উইলিসের উনিশ শতকের অর্গানে বাজনাও চলছে।
সমর্থন: ব্রিটেনের প্রতিবাদী শিখ শিশু।
ছোটদের আন্দোলন
ব্রিটেনের শিখ কচিকাঁচারা ভারতের কৃষিবিক্ষোভকে সমর্থন করছে। অনলাইনে #স্ট্যান্ডউইদফার্মার্স ব্যবহার করে প্রতিবাদ করছে। অনেকেরই দাদু-ঠাকুমা পঞ্জাবের কৃষক। লন্ডন, স্লাও, ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস-এর শিখ পরিবার অধ্যুষিত অঞ্চলে প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। উইন্ডসরের আট বছরের অ্যাশলিন কউর গিলের পরিবারটি লুধিয়ানার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো পোস্ট করেছে সে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশ্যে লিখেছে, ‘ভারত সরকারকে থামতে বলুন, আমাদের সাহায্য করুন।’ ভারতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন অ্যাশলিনের ঠাকুমা।
উল্ভারহ্যাম্পটনের ছ’বছরের লিল রেরে’র ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার ২৬,০০০। সেও ভিডিয়ো বানিয়েছে। বলেছে, ‘আমাদের পরিবার পঞ্জাবের বিলগা আর নকোদরের। চাষবাসই আমাদের শিকড়।’ ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে প্রচারমূলক বিলবোর্ডে তার ছবি। তাতে লেখা ‘কিসান একতা মোর্চা জিন্দাবাদ।’ উলউইচের ১১ বছরের মুন্সিমার কউর লিখেছে, “এঁরা আমাদেরই লোক। পঞ্জাব আমাদের মাতৃভূমি।” প্রতিবাদস্বরূপ তার শিল্পকীর্তির ছবিও পোস্ট করেছে। তার নবতিপর ঠাকুমা ক’দিন আগেও ভারতে পারিবারিক জমিতে নিজে ফসল ফলিয়েছেন।
ভারতযোগ
ব্রিটেনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা ভ্যাকসিনটির একটি ভারতীয় যোগসূত্র আছে। ভারতীয় ওষুধপ্রস্তুতকারক ও জৈবপ্রযুক্তি সংস্থা ‘ওয়োখাট’ ভ্যাকসিনগুলি কাচের শিশিতে ভরছে, তার পর পাচ্ছেন মানুষ। দিনে ১,৫০,০০০ শিশি তৈরি করছে সংস্থা; লক্ষ্য, প্রতি বছর ৩০ কোটি ডোজ়ের প্রস্তুতি। সংস্থার সদর দফতর মুম্বইতে, ২০ বছর ধরে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের বৃহত্তম জোগানদার। রেক্সহ্যামে সংস্থার কারখানা ঘুরে প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।