গ্রীষ্ম, ১৯৪৩। লন্ডনের ব্লুমসবেরির বাড়িতে মা-বোনকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন নুর ইনায়েত খান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিলেন তিনি। প্রথম মহিলা রেডিয়ো-অপারেটর হিসেবে নাৎসি-অধিকৃত ফ্রান্সে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। নির্যাতনের পর দাকাউ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে গুলি করে মারা হয়েছিল ৩০ বছর বয়সে। ১৯৪৪-এ, আজকের দিনে। নুরের সাহসিকতা স্মরণে আজ ৪, ট্যাভিটন স্ট্রিটের বাড়িটিতে ‘ব্লু প্লাক’ বসাচ্ছে ‘ইংলিশ হেরিটেজ’। নুর এশীয় বংশোদ্ভূত প্রথম মহিলা, যিনি এই সম্মান পেলেন। বিখ্যাত ব্যক্তির বসতবাড়ির সামনে এই বৃত্তাকৃতি পোর্সেলিন ফলকটি লাগানো হয়। কয়েক জন ভারতীয় মনীষীর লন্ডনের বাসস্থানের বাইরে ‘ব্লু প্লাক’ দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে আছেন রামমোহন রায়, বি আর অম্বেডকর, মহাত্মা গাঁধী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
খুশি হতেন প্রণববাবু
নুরের ‘ব্লু প্লাক’ দেখলে খুশি হতেন প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়। তখন তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ২০০৬ সালের এক সফরে প্যারিসের উপকণ্ঠে নুরের পারিবারিক ভিটে ‘ফজ়ল মঞ্জিল’-এ গিয়েছিলেন। নুরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। বাড়ির বাগানেই রয়েছে শ্বেতপাথরে তৈরি সুফি স্মৃতিসৌধ। সেখানে ইউনিফর্ম পরিহিতা নুরের ছবির সামনে মোমবাতির আলো। সে দিকে নির্নিমেষ তাকিয়েছিলেন প্রণববাবু। দর্শনার্থীর বইটিতে লিখেছিলেন তাঁর শ্রদ্ধানুভূতির কথা। সেই প্রথম ভারত সরকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত নুরকে সম্মান জানিয়েছিল।
স্বীকৃতি: ৪ ট্যাভিটন স্ট্রিটে নুর ইনায়েত খানের বসতবাড়িেতে ‘ব্লু প্লাক’
জনসনের বিপত্তি
জনপ্রিয়তা নামছে বরিস জনসনের। খেপে উঠছেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন, বিরোধী নেতা কেয়র স্টার্মার আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি (আইআরএ)-র সন্ত্রাসবাদীদের সাহায্য করতেন। স্টার্মার শুনিয়ে দেন, আইনজীবী থাকাকালীন তিনি আইআরএ সংক্রান্ত মামলা লড়তেন ও বিচার সুনিশ্চিত করতেন। ব্যক্তিগত আক্রমণ করায় স্পিকার পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে ভর্ৎসনা করেন। অধিবেশন শেষে জনসন নাকি তাঁর কর্মীদের এই তথ্যভ্রান্তির জন্য ধমকান। স্টার্মারের রেকর্ড ঘেঁটে অন্য খুঁত খুঁজে দিতে বলেন। কনজ়ারভেটিভ নেতাদের অনেকেই জনসনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। ২৪.৬% জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্যাবিনেট-সদস্যদের মধ্যে ১৯তম স্থানে জনসন। টোরিরা কিন্তু খুব নির্মম। জনসন বোঝা হয়ে উঠছেন মনে করলে, মার্গারেট থ্যাচারের মতো তাঁকেও গদি থেকে টেনে নামাতে দ্বিধা করবে না।
দায়মুক্ত হ্যারি-মেগান
হ্যারি ও মেগান (ছবি) ঘোষণা করেছেন, তাঁরা ব্রিটিশ করদাতাদের ২৪ লক্ষ পাউন্ডের ঋণ মিটিয়ে দিয়েছেন। ফ্রগমোর কটেজটি নতুন করে সাজাতে ওই অর্থ ব্যয় করেছিলেন তাঁরা। রাজপরিবার ছেড়ে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হয়। বলা হয়, দামি গৃহসজ্জায় করদাতাদের অর্থ অপচয় করলেন। অথচ, সেখানে থাকলেনই না। দম্পতি এখন ক্যালিফোর্নিয়া-বাসী। সম্প্রতি তথ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র তৈরির জন্য নেটফ্লিক্সের সঙ্গে বাৎসরিক দশ থেকে কুড়ি লক্ষ ডলারের চুক্তি সই করেছেন। লন্ডনের ঠিকানা হিসেবে ফ্রগমোর কটেজটি রেখে দিচ্ছেন।
সুরতর্পণ
বিশেষ কনসার্টে প্রয়াত পিতা রবিশঙ্করকে শ্রদ্ধা জানালেন অনুষ্কা শঙ্কর। ফাঁকা রয়্যাল অ্যালবার্ট হলের অনুষ্ঠানটি বিবিসি-তে সম্প্রচারিত, প্রশংসিত। প্রথমার্ধে পিতার সুরকীর্তিগুলিকে সম্মান জানালেন। তার মধ্যে ছিল ইহুদি মেনুহিন ও ফিলিপ গ্লাসের সঙ্গে পণ্ডিতজির যৌথবাদ্য। সুরকার গোল্ড পান্ডা-র সঙ্গে মিলে, বাবার কিছু সৃষ্টি ‘ভ্যারিয়েশন’ নামে নতুন করে বুনেছেন অনুষ্কা। দ্বিতীয়ার্ধে শোনালেন নিজস্ব বাদ্যসঙ্গীত। দ্য ডেলি টেলিগ্রাফ-এর বর্ণনায়, “যেখানে সেতার কখনও পৌঁছায়নি, সেখানে সেতারের দৃপ্ত পদক্ষেপ।” এই হলেই আগামী বছর রবিশঙ্করের শ্রদ্ধার্ঘ্য অনুষ্ঠানটি পুনর্নির্ধারিত হয়েছে। এক সঙ্গে অনুষ্ঠান করবেন দুই বোন, নোরা জোনস ও অনুষ্কা। জনসমক্ষে প্রথম।