ক্রিসমাসে দ্রষ্টব্য চার্লস ডিকেন্সের জাদুঘর
চার্লস ডিকেন্সকে অনেকেই বলেন, ‘বড়দিন উৎসবের উদ্ভাবক’। ডিকেন্সের প্রবল জনপ্রিয় ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ উপন্যাসটি— পরিবারকে ভালবাসা, অকাতরে দান, পরোপকারের মূল্যবোধকে উদ্বুদ্ধ করে। বইটির সাফল্যের পর এই ধরনের আরও বই বেরোয়। এই সব গল্পের সুবাদেই ধুমধাম করে বড়দিন পালনের চল শুরু। ঢালাও খানাপিনা, উপহার বিনিময় বড়দিনের রীতি হয়ে ওঠে।
বড়দিন পার্বণীতে ডিকেন্সের অবদান স্মরণে, ডিকেন্স মিউজ়িয়াম এক বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এই জাদুঘর লন্ডনের ডউটি স্ট্রিটে। ১৮৩৭-৪০ পর্যন্ত এখানে লেখক সপরিবার বাস করেছেন। ‘বিউটিফুল বুকস: ডিকেন্স অ্যান্ড দ্য বিজ়নেস অব ক্রিসমাস’ প্রদর্শনীতে বড়দিনে প্রকাশিত নানা বই সাজানো। পৃথিবীর প্রথম ক্রিসমাস খাম, প্রথম মুদ্রিত ক্রিসমাস কার্ডটিও আছে। ডিকেন্সের বিশাল চার তলা বাড়িটিও ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে। এখানেই তাঁর প্রথম সন্তান জন্মায় এবং তিনি ধুমধাম করে বড়দিন পালন করেন, আর এক বছর পরে উদ্যাপন করেন প্রথম ‘টুয়েলফ্থ নাইট পার্টি’ (বড়দিনের ১২ দিন পরে হয় এই উৎসব)। ম্যাজিক শো, নাচ-গান-নাটক মিলিয়ে এলাহি আয়োজন। একতলার যে-ঘরে ডিকেন্সরা বড়দিনের ভোজে বসতেন, যে বৈঠকখানায় নিমন্ত্রিত আত্মীয়-বন্ধুদের নিজের বই পড়ে শোনাতেন গৃহকর্তা, সেগুলি দেখছেন দর্শকরা। দেখছেন সেই ডেস্ক, যেখানে তিনি লিখেছিলেন ‘গ্রেট এক্সপেক্টেশনস’, ‘আ টেল অব টু সিটিজ়’। ডিকেন্স যখন এখানে এসেছিলেন তখন তাঁর বয়স ২৫, বোজ় ছদ্মনামে লেখেন, অখ্যাত লেখক। আর বাড়ি যখন ছেড়ে গেলেন তখন ‘পিকউইক পেপারস’, ‘অলিভার টুইস্ট’, ‘নিকোলাস নিকলবি’ লিখে ফেলেছেন— সারা বিশ্ব এক ডাকে চেনে।
প্রদর্শনী: চার্লস ডিকেন্সের স্মৃতিবিজড়িত ঘর ও আসবাব
জনসন কোথায়?
ব্রিটেনে নির্বাচনী প্রচার জোরকদমে। নেতারা প্রায়ই টেলিভিশনে হাজির হচ্ছেন। একটি টিভি বিতর্কের বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন। সেটিতে গরহাজির হয়ে প্রবল সমালোচিত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ। আয়োজকরা বিরক্ত হয়ে তাঁদের জায়গায় দুটো পোডিয়াম দাঁড় করিয়ে উপরে গলন্ত হিমবাহের ভাস্কর্য রেখে দেন। অন্য নেতারা বিতর্ক চালিয়ে যান। এ ভাবেই টিভিতে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়। কনজ়ারভেটিভ পার্টি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে। টিভি বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ায় অবশ্য বরিসের বেশ দুর্নাম। তিনি কিছুতেই বিবিসি-র দুঁদে উপস্থাপক অ্যান্ড্রু নিল-এর সঙ্গে মুখোমুখি হচ্ছেন না। এ দিকে, প্রধানমন্ত্রীও সাক্ষাৎকার দেবেন মনে করে অন্য নেতারা সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হন। বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন প্রথম ওই শো-তে যান, কিন্তু বিশেষত ব্রেক্সিট-বিষয়ক প্রশ্নে অ্যান্ড্রু তাঁকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়েন। লেবার পার্টি বলে, ‘‘এই শো-তে প্রধানমন্ত্রী এলে কী হয় দেখবেন।’’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো গরহাজির, করবিনের হয়তো মনে হচ্ছে, বরিস তাঁকে ঠকিয়েছেন। নিল তো আর ফাঁকা চেয়ারকে প্রশ্ন করবেন না!
নারহোয়ালের দাঁত
আবার লন্ডনে সন্ত্রাস। তার মধ্যে আশার আলো— জীবন তুচ্ছ করে লোকজন জঙ্গিকে নিরস্ত করতে ছুটে গিয়েছিলেন। পেটে ক্ষত সত্ত্বেও একটা নারহোয়ালের দাঁত তুলে জঙ্গির দিকে তেড়ে যান এক পোলিশ রাঁধুনি। তিনি এখন নায়ক। গুগল, টুইটারে নারহোয়াল নিয়ে মানুষের অদম্য কৌতূহল। নারহোয়াল হল মাঝারি আকৃতির দেঁতো তিমি। গ্রিনল্যান্ড, কানাডা ও রাশিয়ার কাছে আর্কটিক সাগরে বছরভর ঘোরে। তারই শিঙের মতো ছুঁচালো দাঁত মাছওয়ালার দেওয়ালে বহু যুগ ধরে ঝুলছিল। কেউ জানত, তা জঙ্গিদমনের অস্ত্র হিসেবে কাজে দেবে!
সাহিত্য ও সংলাপ
স্মরণ: নবনীতা দেব সেন
আজ স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ়ে নবনীতা দেব সেনের স্মরণসন্ধ্যা। অনুষ্ঠানের আয়োজনে যুক্ত ‘গ্রন্থী’-র ইংল্যান্ড শাখাও। আজ শ্রদ্ধাবাসরে প্রয়াত সাহিত্যিকের স্মৃতিচারণা করবেন রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক মঞ্জুভাষ মিত্র। নবনীতার লেখা পাঠ করবেন কবি ও বিদগ্ধজন। আত্মপ্রকাশ করবে ‘সংলাপ’ নামের একটি বাংলা ফোরাম। সুকুমার রায়ের ‘মণ্ডা ক্লাব’ থেকে অনুপ্রাণিত এই আসর। উদ্দেশ্য, ইংল্যান্ডে থাকা বা বেড়াতে আসা বিভিন্ন শাখার শিল্পীদের কাজ জনসমক্ষে আনা। ‘সংলাপ’ উদ্বোধনের আগে অভিনীত হবে জনপ্রিয় যাত্রা ‘বেদের মেয়ে জোসনা’।