সম্পাদক সমীপেষু: প্রতিবন্ধীর অধিকার

প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়ে সরকারি প্রচার তো আছে। তা হলে কেন এমন ঘটবে?

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০৪
Share:

কলকাতা বিমানবন্দরে প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়ে সমস্যার প্রেক্ষিতে সম্পাদক (‘শেষ অবধি’, ২০-১১) পরামর্শ দিয়েছেন প্রশাসনকে সহমর্মী হতে ও পরিষেবা যে কানুনের অন্তর্গত তা স্বীকার করতে। কিন্তু প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়ে সরকারি প্রচার তো আছে। তা হলে কেন এমন ঘটবে? কর্তৃপক্ষ হয়তো বলবেন, বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র। কিন্তু বিমান, রেল বা অন্য গণপরিবহণ, বা যেখানেই হোক, প্রতিবন্ধী-বান্ধব পরিষেবায় কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা যায় না।

Advertisement

দৈহিক প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে এমন আচরণ ভাবা যায় না, অটিজ়ম সংক্রান্ত মানসিক সমস্যা থাকার জন্য বিমানে উঠতে না দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। মূল কারণ, প্রতিবন্ধীদের সমস্যা নিয়ে সাধারণের মধ্যে অজ্ঞতা, অবহেলা। আমি নিজে প্রতিবন্ধী। সেই কারণে আমার পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু, সহকর্মীরা বোঝেন, প্রতিবন্ধীদের সমস্যা অনেক ব্যাপক ও জটিল। বিশ্বে ১৫% মানুষ নানা কারণে প্রতিবন্ধী। এঁদের মধ্যে ২-৪% গুরুতর অক্ষম। ভারতে ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ২.৬৮ কোটি মানুষ প্রতিবন্ধী, সমগ্র জনসংখ্যার ২.২১%। আমাদের পোশাকি নাম physically challenged থেকে differently abled হয়েছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে আমাদের challenge বা ability-র খবর পৌঁছয়নি।

সম্পাদক লিখেছেন উন্নত দেশগুলির পরিষেবার কথা। আমেরিকায় দেখেছি হোটেল, রেস্তরাঁ, স্কুল, লাইব্রেরি, মল, ওয়াশরুম, মিউজ়িয়াম, এমনকি নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখার দুর্গম জায়গাতেও দৈহিক প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ারে যাতায়াতের সুবন্দোবস্ত।

Advertisement

আমাদের দেশে ইদানীং প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। বিমানে তাই বয়স্ক ও দুর্বল যাত্রীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফলে হুইলচেয়ারের লাইন লেগে যায়। হুইলচেয়ার ঠেলার কর্মীর অভাব। আবার কর্মী থাকলেও, হয়তো তাঁরা উপযুক্ত পারিশ্রমিক পান না, তাই উপরির প্রত্যাশা না থাকলে এই কাজে উৎসাহ থাকে না। সহমর্মিতার অভাবের এটাও কারণ।

শুভ্রাংশু কুমার রায়

ফটকগোড়া, হুগলি

গোত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কোচবিহার সফরকালে সেখানকার বিখ্যাত মদনমোহন মন্দিরে গেলেন, আরতি করলেন, পুজো দিলেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে, তিনি পুজো দিলেন মা-মাটি-মানুষের গোত্রে। আবহমান কাল ধরে চলে আসছে, নিজের নামে এবং নিজের গোত্রে পুজো দেওয়ার প্রথা। নিজের পরিবারের কল্যাণ কামনা করে। মুখ্যমন্ত্রী মা-মাটি-মানুষের গোত্রে পুজো দিয়ে অনন্য নজির গড়লেন। ক্ষুদ্র ব্যক্তিগত স্বার্থের গণ্ডি পরিত্যাগ করে, বৃহত্তর পরিসরে রাজ্যের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করলেন। জনমনে তাঁর এই চিন্তাধারার ব্যাপ্তি ঘটুক।
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল
কোন্নগর, হুগলি

কতটা নমনীয়
বড়জোড়ায় রেলের উড়াল পুল উদ্বোধনে স্থানীয় সাংসদকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। তাই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সাংসদের বক্তব্য, “ওই উড়াল পুল কেন্দ্রের প্রকল্প ছিল। গোটা উড়াল পুলটিই কেন্দ্রের টাকায় তৈরি করা হয়েছে। অথচ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংসদকেই ডাকা হল না। এ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে তৃণমূল।” স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে। কথাটা ফায়দা তোলা বা না তোলার ব্যাপার নয়। এটা রাজনৈতিক সৌজন্য। এখন ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে, দলনেত্রীর নির্দেশে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মাঠেঘাটে ঘুরছেন। এমনকি ঠেলায় পড়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের কাছেও যাচ্ছেন। এটা দলের নেতাদের ঔদ্ধত্য ত্যাগ করে নমনীয়তার প্রকাশ, সন্দেহ নেই। তা সত্ত্বেও তৃণমূল এখনও পূর্ণ নমনীয় হতে পারেনি। জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে বিরোধী দলের সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সদস্যদের ডাকা হচ্ছে না। অথচ তাঁরাও প্রশাসনের অংশ। আর রেলের উড়াল পুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্রাত্য করে রাখা হল স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ককে। পরামর্শ মেনেই কি এ সব হচ্ছে?
কৃষ্ণা কারফা
বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া

ভাগের পক্ষে
‘কমিউনিস্ট, ভারত ভাগ’ (১৭-১১) চিঠির প্রসঙ্গে জানাই, কমিউনিস্টরা ভারত ভাগের পক্ষে ছিল। ওই দলের দলিলে তার প্রমাণ আছে। জিন্না তথা মুসলিম লিগের তালে তাল মিলিয়ে, বাংলার কোন কোন অংশ পাকিস্তানে যাওয়া উচিত, তার মানচিত্র সিপিআই তৈরি করে ফেলেছিল। তাতে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও দিনাজপুর জেলাকে পাকিস্তানের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পি সি জোশীর লেখা ‘গান্ধী-জিন্না আপসের পথ’ বইয়ে তা ছাপা হয়েছিল। অমূল্য ঘোষের লেখা ‘সাম্প্রদায়িক সমস্যা’ বইয়েও সিপিআইয়ের তৈরি মানচিত্র আছে। তাতে কলকাতাকেও পাকিস্তানের অংশ করার সুপারিশ ছিল।
ভারত ভাগ এবং পাকিস্তান গড়ার জন্য জিন্নার দাবিতে সিপিআইয়ের যে সায় ছিল, তা জোশীর একটি লম্বা চিঠিতে ধরা আছে। চিঠিটি নিয়ে দুই খণ্ডে বিভক্ত বই আছে: ‘কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির অভিযোগের উত্তরে কমিউনিস্টদের জবাব’। তাতে বেশ কয়েক বার লেখা আছে, লিগের দাবিকে সিপিআই সমর্থন করে, কারণ দাবিটি ‘ন্যায্য’। লেখা হয়েছে, ‘‘লাহোর প্রস্তাবে লিগের যে লক্ষ্য বর্ণিত হইয়াছে আমরা তাহা সমর্থন করি। নিজ বাসভূমিতে মুসলমানদের সার্বভৌম স্বাধীনতা ছাড়া এই লক্ষ্য আর কিছুই নহে।’’
এই সব তথ্য থেকে কেউ যেন না মনে করেন, সিপিআইয়ের মদত ছিল বলেই জিন্না পাকিস্তান কায়েম করতে সফল হয়েছিলেন, বা, পাকিস্তান কায়েম করার ক্ষেত্রে, সিপিআই-ও জিন্নার মতোই খলনায়ক। শুধু উক্ত চিঠির ভুল বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। দ্বিতীয়ত, এটা বোঝা দরকার, সিপিআই সংখ্যালঘুদের (এই ক্ষেত্রে মুসলমানদের) অধিকারের ধুয়া তুলে লিগের দাবি সমর্থন করে আত্মঘাতী ভুল করেছিল।
ভুলটা ধরা পড়তে বেশি সময় লাগেনি। ১৯৪৮ সালে সিপিআইয়ের দ্বিতীয় কংগ্রেসের পলিটিক্যাল থিসিসে অনেক ভাল কথার পসরা সাজিয়ে বলা হয়েছিল, মুসলিম লিগকে বুঝতে তাদের ভুল হয়েছিল। মুসলমানদের পিছিয়ে পড়া অবস্থাকে মুসলিম লিগ নেতারা কাজে লাগিয়েছিলেন। নৌ-বিদ্রোহের সমর্থনে হিন্দুদের সঙ্গে বিক্ষোভে শামিল না হতে জিন্না ফতোয়া দিয়েছিলেন। জিন্নার এই ভূমিকায় মুসলমানদের স্বাধীনতা দান এবং তাঁদের হিন্দুদের কবল থেকে রক্ষা করার ভণ্ডামি ধরা পড়ে গিয়েছিল।
মিহির গঙ্গোপাধ্যায়
কোন্নগর, হুগলি

ক্লাসে মোবাইল
হাওড়া জেলার একটি অঞ্চলের স্কুল পরিদর্শক মহাশয়, ক্লাস চলাকালীন ওই অঞ্চলের কয়েকটি স্কুলে মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। কিন্তু এখন বহু স্কুলেই শিক্ষকেরা ক্লাসে বসে মোবাইলে মগ্ন থাকেন, কেউ কেউ ছাত্রদেরও তাঁর মোবাইল থেকে ছবি বা খবর দেখাতে থাকেন। এমনও হয়, শিক্ষক ক্লাসে না গিয়ে স্টাফরুমে বসে মোবাইলে মগ্ন, আবার ছাত্রেরা ডাকতে গেলে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করছেন! তাই, শিক্ষকদের ক্লাসে মোবাইল ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা সব স্কুলেই জারি হোক।
ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য
বুনোকালীতলা, হুগলি

সঙ্গে সেলফি
‘মৃত ডলফিনের সঙ্গে চলছে ছবি তোলা’ (১৭-১১) ছবিটি দেখে গভীর দুঃখ পেলাম। সে দিন বোধ হয় দূরে নেই, যখন সদ্যপ্রয়াত মা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement