বজবজের বাসিন্দা আমি। অনেক দিন ধরে দেখছি বজবজ পুরসভার অন্তর্গত মূল রাস্তাটার অবস্থা খুব শোচনীয়। যেটা মূলত মহাত্মা গান্ধী রোড নামেই পরিচিত। ডান দিকে মহেশতলা আর বাঁ দিকে পূজালির রাস্তা দুটোর মধ্যে হয়তো সবচেয়ে দুর্বিষহ অবস্থা বজবজের রাস্তার। সংস্কারের দায়িত্ব পিডব্লিউডি না পুরসভার, সে বিতর্কে না গিয়ে বলতে পারি সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। তার উপর চড়িয়ালের রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ কয়েক বছর হল অসমাপ্ত অবস্থায় থমকে যাওয়ায় যাতায়াতে চরম অসুবিধে হয়। চড়িয়ালের জ্যাম বরাবরই বজবজের চিরাচরিত সমস্যাগুলোর অন্যতম। কিন্তু এই অভিযোগ জানাব কাকে? সাধারণ নাগরিক হিসেবে অভিযোগ জানাতে গেলে বা রাস্তা সারানোর সমবেত দাবি তুললে, তার উপর রাজনৈতিক সিলমোহর মারা হয়, যেটা সব আমলেরই রাজনৈতিক রেওয়াজ। আর সে রকম কোনও বিশ্বাসযোগ্য বিরোধী রাজনৈতিক স্বর না থাকায় পরিকাঠামোগত দাবি তোলার পরিসর নেই। তাই এই সমস্যাগুলোর সমাধানের ক্ষেত্রে শাসক দলের অনুকম্পা বা সহানুভূতির মুখাপেক্ষী থাকা ছাড়া আমাদের গতি নেই।
ছোট-বড়-মাঝারি নেতা, মন্ত্রী বা আমলারা তো বিভিন্ন প্রয়োজনে বজবজের উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। বিনীত অনুরোধ, পারলে এক বার আপনাদের জমকালো গাড়িগুলো থেকে নামুন। মিনিট দশেক পায়ে হেঁটে এগিয়ে যান। হাজারও গর্ত-খানাখন্দ পেরিয়ে যাঁরা রোজ যাতায়াত করতে বাধ্য হন, সেই সব মানুষের দুর্দশা কিছুটা হলেও টের পাবেন। গর্ত বুজিয়ে লোকদেখানো প্যাচওয়ার্ক নয়, একটা সুস্থ সম্পূর্ণ রাস্তা চাই আমরা। তার জন্য শুধু প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিক সদিচ্ছা আর একটু আন্তরিকতাও কাম্য।
সুগত কর্মকার
কলকাতা-১৩৭
এত দাম কেন
এখন যেখানে থাকি, সেই ফ্ল্যাট ছেড়ে দিতে হবে। সংবাদপত্র ঘেঁটে যোগাযোগ করলাম নতুন বহুতলের ব্যাপারিদের সঙ্গে। প্রথম বিস্ময়, বিজ্ঞাপিত এলাকার থেকে প্রজেক্টের দূরত্ব। ৫০০ মিটার (আধ কিলোমিটার) থেকে শুরু করে যা এক, দেড় বা ততোধিক কিলোমিটার হতে পারে। এক বহুতলের মালিক এসি গাড়িতে করে আমাদের কর্তা-গিন্নিকে নিয়ে গেলেন এবং ফ্ল্যাট দেখার পরে বাড়িতে পৌঁছেও দিলেন। নতুন ফ্ল্যাটগুলোর সিলিং মেঝে থেকে মাত্র আড়াই মিটার উচ্চতায়। মেঝেয় মার্বেল বসানো। সদর দরজা প্লাইউডের। জানলা বলতে ঘরের মাঝখানে ঢাউস কাচ বসানো ফাঁকা জায়গা। সবচেয়ে বড় ঘর সাধারণত দশ ফুট বাই দশ ফুট মাপের। এ ছাড়া ক্ষুদ্র বারান্দা ও রান্নাঘর আছে। দাম দিতে হবে ভিতর-বাইরে মিলিয়ে প্রায় দু’টি ফ্ল্যাটের। এ ছাড়া মাসে মাসে ৪৫০০ টাকা থেকে ৬৫০০ টাকা লাগবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। কেনার সময় একলপ্তে আরও কিছু আনুষঙ্গিক খরচ দিতে হবে, কিছু ক্ষেত্রে নগদে। ফ্ল্যাট বড় হলে অথবা মহানগর সংলগ্ন এলাকায় হলে, তার দাম গাণিতিক হারে বাড়বে।
সংস্থার কর্মীরা জানান, সব প্ল্যান সরকারি বিধি মেনে বানানো। এলাকা, ফ্ল্যাটের মাপ ও দামের ব্যাপারে সরকারের কি কিছু করার নেই? বিশেষত এক বছর যাবৎ যখন সরকার নানা ডিউটি মকুব করছে! ক্রমসঙ্কুচিত ‘লিভিং এরিয়া’র পরিমাপ নির্দিষ্ট করা, জানলায় গ্রিল বসানো বাধ্যতামূলক করা এবং এলাকার পরিকাঠামো তৈরির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা কি সম্ভব?
সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা-৯১
উচ্চতা বৃদ্ধি
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ঢাকুরিয়া স্টেশনে প্রতি দিন যে সব নিত্যযাত্রী ওঠানামা করেন, তাঁরা খুবই অসুবিধার শিকার। কারণ, প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনের বগির উচ্চতা। একটু অসাবধান হলে যে কোনও সময়ে হাত-পা ভাঙতে পারে। এই শাখার অন্যান্য স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধি হলেও ঢাকুরিয়া দীর্ঘ বঞ্চনার শিকার। দায়িত্বপ্রাপ্ত রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, ঢাকুরিয়া প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ করলে যাত্রীসাধারণের সুবিধে হবে।
ভবেশ চন্দ্র রায়
কলকাতা-৩১
অসার নিয়ম
জনস্বার্থে বিধি-নিয়ম এক দিকে যেমন তৈরি হয়, তেমনই উপযুক্ত দেখভালের অভাবে বহু ক্ষেত্রে অসারও হয়ে যায়। বেচাল, বেনিয়ম দেখে আমরা অভ্যস্ত। উদাহরণ হিসেবে পথ-দুর্ঘটনার কথাই ধরা যাক। চোখের সামনে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। কিছু দিন হইচই হয়। পুলিশ-প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। তড়িঘড়ি একটা বিধিনিয়ম চালু হয়। তার পর সব ভেস্তে যায়! কয়েক বছর আগে সিঁথি-কুঠিঘাট রুটে ভিড়ে ঠাসা অটোরিকশা থেকে পড়ে গিয়ে একটি স্কুলফেরত শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছিল। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছিল। নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল যে, কোথাও চার জনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। কিছু কাল তা বজায়ও ছিল। শোরগোল চাপা পড়ে যেতেই যে-কে-সেই! জনবহুল রাস্তা আটকে অটো-টোটোর বিড়ম্বনা বাধ্য হয়ে মেনে নিতে হয়। পুলিশ নির্বিকার দাঁড়িয়ে থাকে। বাসের রেষারেষি আজ পর্যন্ত কেউ বন্ধ করতে পারেনি। রাস্তার দৈন্যদশা, নেশা করে কিংবা ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালানোর ট্র্যাডিশনও সমানে চলছে।
এক শ্রেণির মানুষের অসচেতনতা এবং বেপরোয়া মনোভাব যেমন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী, তেমনই দায়ী কিছু অসাধু পুলিশকর্মী। এঁদেরই দেখা যায় ভক্ষকের ভূমিকায়। প্রকাশ্য দিবালোকে গাড়ি আটকে তোলাবাজির দৃশ্য জনতার দৃষ্টি এড়িয়ে যায় না। ঘুষ দিয়ে রেহাই পেয়ে যায় বলেই কিছু মানুষ বড় বেপরোয়া হয়ে ওঠে কালে কালে। নিয়ম কেবল নামের মধ্যে সীমিত থাকলে, ক্রমে প্রহসনে পরিণত হয়। এ সবের বিরুদ্ধে যোগ্য এবং মজবুত প্রশাসন তৈরি হয় না বলেই জনগণকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বাবুলাল দাস
ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
কর ফাঁকি?
সম্প্রতি নাগেরবাজারের একটি শপিং মলের মাল্টিপ্লেক্সে সপরিবারে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। মাল্টিপ্লেক্সের ভিতরে বেশ কয়েকটা খাবারের স্টল আছে। একটি স্টল থেকে খাবার অর্ডার করার পরে দেখলাম কোনও বিল দেওয়া হল না। একটি সাদা খাতায় অর্ডার লিখে মাল্টিপ্লেক্সের মধ্যে খাবার দেওয়া হচ্ছিল। স্টলের কর্মীকে বিলের বিষয়ে প্রশ্ন করায় উত্তর আসে, কোভিড পরিস্থিতিতে বিল দেওয়া বন্ধ। কিন্তু কাউন্টারে লেখা ছিল, বিল না দিতে পারলে খাবার ফ্রি! কিন্তু তা তো করা হয়নি। তা হলে এই দ্বিচারিতা কেন? তা ছাড়া, খাবারের দামও অত্যন্ত বেশি। এই বেলাগাম দামে কেন রাশ টানা হবে না? বিল না দেওয়া তো বেআইনি কাজ। এটা কর ফাঁকি দেওয়ার কৌশল নয় তো? এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার।
সৌমিত্র বিশ্বাস
কলকাতা-২৮
প্রবীণদের জন্য
কিছু দিন আগে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিবাহ উপলক্ষে সাঁতরাগাছি যাওয়ার জন্য হাওড়া স্টেশনে গিয়েছিলাম। সেখানে পনেরো নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে খড়্গপুর লোকাল ধরি। কিন্তু ট্রেন ধরতে মোটামুটি চারশো মিটার হাঁটতে হয়। শুনেছি রেল কর্তৃপক্ষ প্রবীণ নাগরিকদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। প্রবীণ নাগরিক হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, ওই শাখার ট্রেনগুলো যদি প্ল্যাটফর্মের মুখ থেকে ছাড়ার ব্যবস্থা করা যায়, তবে অনেক বয়স্ক মানুষের উপকার হবে।
স্বপন কুমার আঢ্য
ভান্ডারহাটি, হুগলি