মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কোনও হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না নিলে তাকে রেয়াত করা হবে না। কিন্তু বাস্তবটা কী? সত্যিই কি পাওয়া যাচ্ছে সরকারি বিমা, না কি ছুতোনাতায় ঘোরানো হচ্ছে রোগীদের? বিষয়টি নিয়ে রোগীর পরিবার এবং বেসরকারি হাসপাতালের চাপানউতোর, রাজ্য সরকারি প্রকল্পটিকে প্রশ্নের সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে। অনেক বেসরকারি হাসপাতাল এই কার্ড গ্রহণ করছে না। কিন্তু যারা নিচ্ছে, তারা রোগীর পরিবারের কাছ থেকে চিকিৎসা খরচও নিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালগুলোর বক্তব্য, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বিভিন্ন চিকিৎসা-প্যাকেজ এবং শয্যার যে টাকা সরকার নির্দিষ্ট করেছে, সেটা অবাস্তব। তাতে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।
এ ছাড়াও রোগীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথীতে নথিভুক্ত কোন হাসপাতালে কোন চিকিৎসা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে কোনও স্বচ্ছতা নেই। অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে রাজি হয়েও পরিষেবা দিতে অনেক দেরি করে। ফলে, সরকার ও বেসরকারি হাসপাতালের টানাপড়েনে পড়ে নাকাল হচ্ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত রোগীরা।
মুখ্যমন্ত্রী কড়া মনোভাব দেখিয়ে বলেছেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান করলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে এফআইআর করা যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, রোগীর পরিবার সঙ্কটাপন্ন রোগীর জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে, না কি রোগীকে ফেলে রেখে থানায় গিয়ে এফআইআর করবে? বিষয়টি বিবেচনা করার সময় এসেছে বলেই আমার অভিমত।
পরেশনাথ কর্মকার, রানাঘাট, নদিয়া
ওষুধের অপচয়
এমন বহু পরিবার আছে, যাদের সারা বছর খাওয়ার খরচ যত, তার তুলনায় চিকিৎসা-বাবদ খরচ অনেক বেশি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে অসুস্থ সদস্যদের সুস্থ করতে গিয়ে সাধ্যাতীত খরচ করতে হয়। চিকিৎসক অনেক সময় রোগীকে দেখা ও বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার পর নতুন ওষুধ খেতে বলেন সাত দিনের জন্য। ওষুধের দোকানে গিয়ে নির্দিষ্ট ওষুধটি চাওয়ার পর হাজির করা হল ১০ বা ১৫টি ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের একটি পাতা। যখনই দোকানদারকে সাত দিনের জন্য সাতটি ওষুধের কথা বলা হয়, তিনি সাধারণত জানিয়ে দেন, পুরো পাতাটাই নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে রোগী ওই অতিরিক্ত (১০টির পাতা হলে ৩টি, ১৫টির ক্ষেত্রে ৮টি) ওষুধ নিয়ে কী করবেন?
রোগীর পরিবার ডাক্তারবাবুকে নিশ্চয়ই বলতে পারে না যে, সাত বা চোদ্দো দিন নয়, এক পাতায় যত ওষুধ থাকে, তার পুরোটাই রোগীকে খাইয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিন। বরং, যে ক’টি ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল দরকার, সেই ক’টি মূল পাতা থেকে কেটে দেওয়ার ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা উচিত। এতে ওষুধ বিক্রেতাদের অসুবিধা কোথায়? প্রয়োজনে, ১০ বা ১৫টির পাতা ২০ বা ৩০-এর আকারে তৈরি করলে তার থেকে এই রকম খুচরো সংখ্যায় বেচা-কেনা উভয়ের পক্ষেই স্বস্তির। আমরা, যাঁরা বার বার চিকিৎসকের কাছে যেতে বাধ্য হই, তাঁদের নানা কারণে ওষুধের অদলবদল ঘটেই। এমনিতেই অনেক পুরনো ওষুধ বাতিল করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, এই অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও তার জন্য কষ্টার্জিত অর্থের অপচয় দুর্বহ যন্ত্রণার কারণ হয়ে ওঠে সংশ্লিষ্ট রোগী-সহ তাঁর পরিবারের কাছে। প্রশাসন, ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা, চিকিৎসক মহল-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।
দীপক ঘোষ, মছলন্দপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
জমা জল
বঙ্গে বর্ষা এসে গিয়েছে। এখানে-ওখানে আবার জল জমবে। মশার বংশবৃদ্ধিতে সুবিধে হবে। জনগণের আতঙ্ক বাড়বে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি নিয়ে। বর্ষার কথা বাদ দিলেও দু’-দশকের বেশি সময় ধরে দেখছি, রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার ৩৩ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের খোলা নর্দমায় জঞ্জাল জমে জল বেরোতে পারে না। কোথাও কোথাও গৃহনির্মাণের পরিত্যক্ত ইটের টুকরো, প্লাস্টিক ও জঞ্জাল ড্রেনেই জমাট বেঁধে জল আটকায়। জল বেরিয়েই বা যাবে কোথায়। চতুর্দিকে ঘরবাড়ি হচ্ছে, ছোটখাটো ডোবা ভরিয়ে বাস্তুর সঙ্গে জুড়ে গৃহস্থজন কাজে লাগাচ্ছেন বা চাষাবাদ করছেন। ফলে, এলাকার জলধারণের জায়গাও অপ্রতুল হয়ে উঠছে। আর দেরি না করে নিকাশিনালার মাস্টারপ্ল্যান করে এখনই কাজ না এগোলে ভবিষ্যতে দুর্দশা বাড়বে এলাকাবাসীর।
দু’টি ওয়ার্ডের কিছু কিছু অংশে পাকা ড্রেন হলেও বেশির ভাগই কাঁচা অবস্থায় রয়েছে। জমা জলে মশার উপদ্রব বাড়ছে। পুরসভা থেকে মশা মারার তরল স্প্রে করলেও তার মেয়াদ ক’দিন। ব্যবহার করা জল তো সব সময় জমছে। পুর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, খোলা নর্দমাগুলোর মাটি সরানো উচিত, যাতে সেগুলিতে জল এক জায়গায় জমে না থাকে। কলকাতার জন্য বর্ষার আগে ডেঙ্গিদমন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন মহানাগরিক। শহরতলির পুরসভা কর্তৃপক্ষও সমান তালে কাজে হাত লাগালে জনসাধারণের উপকার হবে।
সৌম্যেন্দ্র নাথ জানা, কলকাতা-১৫৪
সারমেয় সমস্যা
অভিজিৎ রায়ের লেখা ‘কোর্টের রায়’ (সম্পাদক সমীপেষু, ১০-৬) শীর্ষক চিঠির প্রেক্ষিতে কিছু কথা না বলে পারছি না। দেশের শীর্ষ আদালত পথকুকুরদের খাওয়ানোর ব্যাপারে শুনানির শুরুতেই কিছু প্রশ্ন রেখেছিলেন। একটি যেমন, পথকুকুরদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার সঠিক অনুশীলনের ব্যবস্থা না থাকায়, তাদের বাড়বাড়ন্ত রোখা সম্ভব হবে? কথাটি কতটা সত্যি, তা প্রতিনিয়ত অনুভব করি।
বর্তমানে যে অঞ্চলে বাস করি, সেখানে সারমেয়প্রেমীদের দৌলতে পথকুকুরদের সংখ্যা প্রতি দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের কারণে এলাকার অধিবাসীরা অতিষ্ঠ। রাতে বাড়ির বাইরে বেরোনো যায় না, এমনকি দিনের বেলাতেও খুব সন্তর্পণে বেরোতে হয়। রাস্তাঘাট নোংরা করার কথা আর তুলছি না। কারণ একটাই, ওদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। রাতে ওদের সম্মিলিত চিৎকারে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
দেশের শীর্ষ আদালত শেষপর্যন্ত পথকুকুরদের খাবার পাওয়ার অধিকারের উপর জারি করা স্থগিতাদেশ খারিজ করে দেয়। ব্যক্তিগত ভাবে শীর্ষ আদালতের এই রায়ের ব্যাপারে আমি সন্তুষ্ট নই, কিন্তু আদালতের রায় শিরোধার্য। তবে পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে পশুপ্রেমীর দল যদি উদ্যোগী হয়, তা হলে মানুষের উপকার হবে। পথকুকুরদের প্রতি দরদ সে ভাবেই দেখানো উচিত, যাতে তারা মানুষের বিপদের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।
অরুণ গুপ্ত, কলকাতা-৮৪
বেহাল রাস্তা
মামুদপুর পঞ্চায়েতের দোগাছিয়ায় গান্ধীর মোড় থেকে ৭৩ নম্বর বাস রুট পর্যন্ত রাস্তাটি বিপজ্জনক হয়ে আছে। জায়গায় জায়গায় মোরাম উঠে গিয়ে গর্তের আকার ধারণ করেছে। গ্রামের প্রধান রাস্তা হওয়া সত্ত্বেও রাস্তাটি সম্পূর্ণ অবহেলিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তাপস বসু, নৈহাটি, উত্তর ২৪ পরগনা