প্রতিবাদ করলে জোটে তির্যক মন্তব্য অথবা দুর্ব্যবহার।
এই রাজ্যে কিছু নামী প্রতিষ্ঠান বাদে অন্য যে মিষ্টির দোকানগুলি আছে, তাদের বেশির ভাগই ক্রেতাকে মিষ্টি দেওয়ার সময় শারীরিক সুরক্ষাবিধির ধার ধারেন না। দেখেছি, অনেক দোকানেই কর্মীরা শুকনো মিষ্টি বাক্সে দেওয়ার সময় খালি হাতে সেগুলি তোলেন এবং সেই হাতেই নগদ টাকার লেনদেন করেন। এ ছাড়া, বেশির ভাগ দোকানদার রসে ডোবানো মিষ্টি খুব নিম্ন মানের প্লাস্টিকে রস-সহ ভরে দেন। এগুলি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরেই এই রীতি চলে আসছে। বহু বার হাতবদলের ফলে কাগজের টাকা ও ধাতুর মুদ্রায় যে পরিমাণ জীবাণু জমা হয়, তার একটা বড় অংশ টাকা বা কয়েনের মাধ্যমে সরাসরি মানুষের পেটে যায়। এর ফলে মানুষ অসুস্থ হতে পারেন। বিশেষত এই কোভিডকালে তা আরও বেশি আশঙ্কার।
বহু বার স্থানীয় প্রশাসন থেকে প্লাস্টিক বর্জনের জন্য প্রচার চালানো হয়েছে। অন্তত আমাদের ছোট শহর আরামবাগের ক্ষেত্রে প্রায়ই সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়। যদিও ফল হয় তাৎক্ষণিক। বেশির ভাগ সময়ই এই ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক নির্দেশ মানেন না। ক্রেতারা প্রতিবাদ করলে তির্যক মন্তব্য অথবা দুর্ব্যবহার জোটে।
শুনেছি, রাজ্যে নাকি এঁদের বড় সংগঠন আছে। তাই প্রশাসনকে অনুরোধ, বিষয়গুলি নিয়ে সংগঠনের সঙ্গে কথা বলা হোক এবং সমান্তরাল ভাবে প্রতিনিয়ত সচেতনতামূলক প্রচার করা হোক।
এ ছাড়া, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক দফতরের তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা খুবই দরকার। কারণ, এই ধরনের অভ্যাস খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেওয়ার থেকে কোনও অংশে কম অপরাধ নয়।
অনিরুদ্ধ সিংহ, আরামবাগ, হুগলি
স্টিকার নয়
ইদানীং হাটে-বাজারে আম, সিঙ্গাপুরি কলা, আপেল প্রভৃতি ফল কিনতে গিয়ে ওই সব ফলের গায়ে বা খোসায় বিভিন্ন উৎপাদক কোম্পানির রঙিন স্টিকার প্রায়শই চোখে পড়ে। আঠা দিয়ে লাগানো স্টিকারগুলি ভাল করে জল দিয়ে ধুলেও ওঠে না। অনেকেই খোসা সমেত আপেল, আম খেয়ে থাকেন। এর ফলে এই না-ওঠা আঠা এঁদের পেটে ঢুকছে। স্টিকারের আঠা আদৌ স্বাস্থ্যকর নয় বলেই মনে হয়, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। অবিলম্বে বিভিন্ন ফলের গায়ে স্টিকার লাগানো বন্ধ করা জরুরি।
তুষার ভট্টাচাৰ্য, কাশিমবাজার, মুর্শিদাবাদ
রাস্তা সারাই
তারাতলা রোড ধরে গার্ডেনরিচের দিকে এগোলে কম-বেশি তিন কিলোমিটার দূরে সন্তোষপুর লেভেল ক্রসিং। এই লেভেল ক্রসিংয়ের সামান্য আগে বাঁ দিকে আছে একটি সরু, কিন্তু ব্যস্ত রাস্তা। সারা দিন ধরে সেখান দিয়ে বড় বড় কন্টেনারবাহী লরির যাতায়াত। শীত বা গ্রীষ্মে এই রাস্তাটির বিশাল বিশাল গর্ত থেকে ধুলোর ঝড় ওঠে, আর বর্ষায় সব গর্ত জলে ভরে ছোটখাটো ডোবার আকার ধারণ করে। প্রায়শই এই রাস্তায় মোটরবাইক উল্টে যায় বা প্রাণ হাতে বড় বড় ট্রাকের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পথচারীরা পা পিছলে পড়ে যান। চার দিকে এত সৌন্দর্যায়নের মাঝে এই সামান্য ১ কিলোমিটার রাস্তাটি বছরভর এমন মৃত্যুফাঁদ হয়ে পড়ে থাকছে কেন? যে দিন কোনও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটবে, সে দিন হয়তো কোনও কমিটির ঘোষণা হবে। অদূর ভবিষ্যতের সেই দিনটির কথা ভেবে এখনই নাহয় কমিটি তৈরি থাকুক, যাতে চটজলদি ঘোষণা সম্ভব হয়।
শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা-৩৪
ট্রেন চালু হোক
অতিমারির সময় থেকে গত দেড়-দু’বছর হল শিয়ালদহ থেকে বজবজগামী লোকালগুলোর মধ্যে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিট এবং ২টো ৩২ মিনিটের দুটো ট্রেন বাতিল করে দেওয়ায় চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। মূলত, দক্ষিণ শাখায় বজবজ লাইনে শুধুমাত্র বজবজ লোকালই চলার ফলে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। যার জেরে দুপুর ১টা ১৪ মিনিটের পর সেই ৩টে ৮ মিনিটের লোকাল পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। শিয়ালদহ থেকে বজবজ চল্লিশ মিনিট অন্তর ট্রেন। তাতেও যদি এই রকম অনিয়মিত পরিষেবার সম্মুখীন হতে হয়, তা হলে খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়। অন্য দিকে, গোটা স্টেশন জুড়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী, অলঙ্কার ইত্যাদির দোকান তৈরি হয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত কোনও প্রতীক্ষালয় গড়ে তোলা হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রবীণ যাত্রী, মহিলা এবং শিশুদের বিশ্রামের পর্যাপ্ত জায়গার অভাব দেখা যাচ্ছে। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া হয় যে, কোভিড নিয়ন্ত্রণের জন্য একটা-দুটো ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল, তা হলে অতিমারি নিয়ন্ত্রণে আসার পরেও সেই ট্রেনগুলো আবার চালু করা হবে না কেন? দুপুরে যাত্রী-সমাগম আশানুরূপ হবে না বলে ট্রেন চালানো লাভজনক হবে না— এ রকম সঙ্কীর্ণ ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি কি জন-পরিষেবার ক্ষেত্রে আদৌ ইতিবাচক? এর আশু সমাধান প্রয়োজন।
একই সঙ্গে আর একটা সমস্যার সমাধানেও রেল কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক হতে অনুরোধ করব। বজবজ স্টেশন সংলগ্ন রাস্তা ডিএ চৌধুরী রোড রেলগেট পর্যন্ত প্রসারিত। অসংখ্য নিত্যযাত্রী ও অটো চলাচলের জন্য একমাত্র রাস্তাটার খুবই বেহাল অবস্থা। রাস্তাটি রেল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে। দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়ে যাওয়ায় বর্ষায় জল জমে রাস্তাটা গাড়ি চলাচলের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই রাস্তার একটা রুটিনমাফিক সংস্কার হওয়া দরকার।
সুগত কর্মকার, বজবজ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
দৈনিক এক টাকা
উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভা নোটিস জারি করেছে যে, প্রত্যেক বাড়িপিছু (একটা ফ্ল্যাটবাড়ির প্রত্যেক ফ্ল্যাট মালিক-সহ) দৈনিক ১ টাকা করে দিতে হবে আবর্জনা নিয়ে যাওয়ার জন্য। এবং এই নীতি দ্রুত কার্যকর করার জন্য চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পুরসভা নোংরা তোলা বন্ধ করে দিয়েছে। এমন কাজও সম্ভব? এক টাকা হিসাবে প্রত্যেক বাড়ি থেকে বছরে তিনশো পঁয়ষট্টি টাকা দিতে হবে পুরসভায়। যদি অঞ্চলে আনুমানিক ষাট হাজার বাড়ি থেকে এই টাকা দেওয়া হয়, তা হলে বছরে আদায় হবে প্রায় দু’কোটি উনিশ লক্ষ টাকা। এত টাকা আবর্জনা দূরীকরণে লাগার কথা নয়। এই টাকা অন্য কোথাও চালান হবেই। হয়তো, পুরসভায় সরকারি অনুমোদন বহির্ভূত কর্মী, যাঁরা শাসক দলের অনুগত, তাঁদের মাইনে দিতে এবং পার্টি সম্পর্কিত কাজকর্মে এই টাকা ব্যবহৃত হবে। জনপ্রতিনিধিরা এখন সর্বশক্তিমান। তাঁরা যা ভাববেন, তা-ই হবে। আর, আমাদের টাকা গুনে যেতে হবে।
অজিত মুখোপাধ্যায়, উত্তরপাড়া, হুগলি
মৃত পশুর কবর
বর্তমানে বারাসত শহরে বেওয়ারিশ মৃত পশুদের নিয়ে আমরা বিপদে পড়েছি। আগে পুরসভা থেকে গাড়ি পাঠিয়ে মৃত পশু নিয়ে যাওয়া হত। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে এদের নিজেদের বাড়িতেই মাটিতে পুঁতে দিতে হবে। বেওয়ারিশ মৃত পশু বাড়ির মধ্যে কেন কবরস্থ করতে বাধ্য করা হবে আমাদের? সম্প্রতি আমার বাড়িতে মৃত অবস্থায় ছিল একটা পথকুকুর। সেটিকে বাড়িতে কবরস্থ করতে বাধ্য হয়েছি। কাজটি করার জন্য পুরসভা থেকে অবশ্য লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আমাকেই তাঁদের পারিশ্রমিক দিতে হয়েছিল, যদিও এর জন্য তাঁরা কোনও রসিদ দেননি আমাকে। মৃত পশুদের কবরস্থ করার বিষয়ে প্রশাসনকে একটা সুষ্ঠু নীতি নিতে অনুরোধ করছি।
অমিতাভ দাশ, কলকাতা-১২৬