কয়েক দিন আগে শ্রীরামপুরের চাতরা মান্নাপাড়া নিবাসী একটি ছেলে ব্যবসায়িক কাজে বাইকে করে তারকেশ্বর যাচ্ছিল। লোকনাথের কাছে পথে হঠাৎ একটি কুকুর দৌড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে ছেলেটির চলন্ত বাইকের মধ্যে ঢুকে পড়ে। ছেলেটি বাইক থেকে পড়ে যায়। ভাগ্য ভাল, সেই সময়ে পথে অন্য কোনও দ্রুতগামী যান ছিল না।
রাস্তায় পড়ে থাকার সময় হরিপাল থানার এক সিভিক পুলিশ কাছেপিঠে থাকায় দৌড়ে এসে ছেলেটিকে বাঁচিয়ে রাস্তার ধারে আনেন। বাইকটিকেও রাস্তার ধারে টেনে নিয়ে আসেন। ওই সিভিক পুলিশ নিজের জলের বোতল থেকে চোখে-মুখে জল ছিটিয়ে ছেলেটিকে ধাতস্থ করেন। এর পর এলাকার কয়েক জন লোকের কাছে বাইকটি গচ্ছিত রেখে টোটো ভাড়া করে সরাসরি তারকেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলেটিকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার সময় চিকিৎসকদের সব রকম সহযোগিতা করেন তিনি। ইঞ্জেকশন, ওষুধ ও ড্রেসিং-এর পরে ছেলেটিকে সঙ্গে নিয়ে আবার টোটোয় করে দুর্ঘটনার জায়গায় ফিরে আসেন। শুধু তা-ই নয়, এর পরে নিজেই বাইক চালিয়ে ছেলেটিকে পিছনে বসিয়ে তাঁর বাড়িতেও পৌঁছে দিয়ে যান।
এ রকম পরোপকারী মানুষ আজকাল খুব একটা দেখা যায় না। মানুষ এখন অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। তাই এই সময়ে এ রকম মানবিক মুখ সমাজের কাছে একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তো বটেই।
প্রদীপ কুমার দাস
শ্রীরামপুর, হুগলি
প্ল্যাটফর্ম সংস্কার
শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন মছলন্দপুর। বাংলাদেশ সীমান্ত হাকিমপুর থেকে শুরু করে স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া ব্লক ও হাবড়া-১ ব্লকের মানুষদের কলকাতা যাতায়াতের একমাত্র রেলস্টেশন এটি। কিন্তু এই স্টেশনের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ উদাসীন। এখানকার দুটো প্ল্যাটফর্মেই দু’টি ছোট ছোট শেড আছে। যার ফলে বেশির ভাগ যাত্রীকেই উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি রেল পারাপারের ওভারব্রিজেও কোনও শেড নেই। দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে মহিলাদের জন্য কোনও ওয়াশরুম নেই। অত্যধিক ভিড় এড়াতে দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি টিকিট কাউন্টার প্রয়োজন। প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনের পাদানি অনেকটা উঁচুতে। বিশেষ করে বয়স্কদের ওঠানামায় খুব অসুবিধা হয়। তাই প্ল্যাটফর্ম দুটোর উচ্চতা বৃদ্ধি করা দরকার। এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রাসমোহন দত্ত
মছলন্দপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
বোধোদয় হোক
‘পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে’ (২৫-৯) সম্পাদকীয়টি অত্যন্ত সময়োচিত ও অপরিহার্য লেখা। কলকাতা পুরসভা রাস্তায় মূত্রত্যাগের জন্য ৫০০ টাকা জরিমানা করবে, সেটা সাধু প্রস্তাব। তবে, জরিমানার সঙ্গে শুভ বুদ্ধিরও উদয় হওয়া দরকার। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে, গুরুসদয় রোডের এক-একটি বিশিষ্ট জায়গায় যেখানে ক্লাব, বহুতল ইত্যাদি আছে, প্রস্রাবের দুর্গন্ধে ও নোংরায় ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যায় না। পঙ্কজ মল্লিক সরণির ম্যাডক্স স্কোয়্যার পার্কে পাবলিক টয়লেটের সুবিধা থাকা সত্ত্বেও লোকেরা পার্কের মধ্যেই প্রস্রাব করছে, এমন হামেশাই দেখা গিয়েছে। কারণ, মূত্রত্যাগের জন্য শৌচালয়ে ২ টাকা লাগে আর পার্কের মধ্যে ফ্রি! ৫০০ টাকা জরিমানায় নিশ্চয়ই কিছু লোক ভয় পাবেন, কিন্তু পুরনো অভ্যাস কি সহজে ছাড়া যায়? তাই জনতার মধ্যে সচেতনতা আনতে হবে। রেডিয়ো, টিভি তো বটেই, যে সব রাস্তায় লোকেরা নিজেরাই গণ মূত্রত্যাগের জায়গা তৈরি করেছে, সেখানে পোস্টার, আয়না লাগাতে হবে, যাতে মানুষের মধ্যে লজ্জাবোধ জাগে। প্রয়োজনে সিসিটিভি ক্যামেরাও বসানো যায়। এ ছাড়া, পুরসভাকে আরও গণ-শৌচালয় তৈরি করে দিতে হবে।
অরুণাভ লাহিড়ি
কলকাতা-১৯
মূর্তির দূষণ
সামনেই শারদোৎসব। উচ্ছৃঙ্খলতা না করে কোনও উৎসব পালন করতে আমরা বোধ হয় অপারগ। এ বারও আমরা সমাজ সচেতন ও পরিবেশ সচেতন কিছু মানুষের সাবধান-বাণী শুনব, পড়ব এবং যথারীতি ভুলেও যাব। কিন্তু আমরা কি একটু অন্য ভাবে ভাবতে পারি না? বহু বছর যাবৎ লন্ডনের বাঙালিরা এখান থেকে মূর্তি নিয়ে গিয়ে দুর্গাপুজো করেন, কিন্তু তাঁরা সেই মূর্তি টেমস নদীর জলে বিসর্জন দেওয়ার কথা কল্পনাও করতে
পারেন না।
মূর্তি তৈরির প্রক্রিয়াতে কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে শতকরা আশি ভাগ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব। যেমন, কিছু সুন্দর পুতুল দেখেছি যেগুলোর দৃশ্যমান অংশটুকু অর্থাৎ, মুখ-হাত-পা মাটি, চিনেমাটি, প্লাস্টিক ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হয়। বাকি অংশ সবটাই পোশাকে ঢাকা থাকে। সে অংশের ভিতরে থাকে তারের খাঁচা। অনুরূপ ভাবে মূর্তি গড়লে ক্ষতিকারক রং এবং অন্যান্য রাসায়নিকের কারণে নদী-দূষণ কমবে, মূর্তির ওজন কম হলে দুর্ঘটনাও কমবে এবং মূর্তি তৈরির খরচও কম হবে। ছোট পুতুলের ক্ষেত্রে যে অংশ তারের খাঁচা দিয়ে তৈরি, বড় মূর্তির ক্ষেত্রে সে অংশ লোহার রড, কিংবা বাঁশ-কঞ্চি দিয়েও তৈরি হতে পারে। প্রতিমা শিল্পীদের কথাটা ভেবে দেখতে অনুরোধ করি।
মানস বিশ্বাস
রৌরকেলা, ওড়িশা
ট্রেন চাই
রাজ্যে রেলের প্রায় সমস্ত ডিভিশনে স্টাফ ট্রেন চালু হয়েছে, টিকিট বিক্রি ও চেকিংও হচ্ছে। কেবল হাওড়া ডিভিশনের বর্ধমান-কাটোয়া লাইনে কোনও স্টাফ ট্রেন চালু হয়নি। করোনা পূর্ববর্তী সময়ে এই রুটে ছয় জোড়া ট্রেন চলত। কাটোয়া স্টেশনটি উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। এ ছাড়া এই স্টেশনটি বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলার সংযোগস্থল। প্রচুর মানুষ এই ট্রেন রুটের উপর নির্ভরশীল। তাই অবিলম্বে যাতে বর্ধমান-কাটোয়া লাইনে স্টাফ ট্রেন চালু হয় তার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নিয়ামুল হোসেন মল্লিক
বড়মুড়িয়া, পূর্ব বর্ধমান
ইঞ্জিন ভ্যান
রাজ্যে সাম্প্রতিক কালে গ্রাম এবং শহরতলিতে বিভিন্ন পণ্য পরিবহণের জন্য ইঞ্জিন ভ্যান নামক যানে ভরে গিয়েছে। সম্পূর্ণ হাতুড়ে প্রযুক্তিতে তৈরি এই যানটি যে শুধু ব্যাপক পরিবেশ দূষণ করে তা-ই নয়, সময়ে সময়ে মানুষের জীবন বিপন্ন করে তোলে। এই বিপজ্জনক যানে মানুষ-সহ লোহার রড, ডেকরেটার্সের বাঁশ ইত্যাদি প্রায়শই বহন করা হয়। অধিকাংশ সময় ওভারলোড করা হয়। এর ব্রেকের প্রযুক্তি কৌশল অত্যন্ত নিম্নমানের। হঠাৎ ব্রেক কষলে যেমন উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তেমনই অনেক সময় স্কিড করে দুর্ঘটনা ঘটায়। এদের কোনও হেডলাইট না থাকা সত্ত্বেও রাতের বেলা রড, বাঁশ ইত্যাদি নিয়ে প্রবল বেগে যাতায়াত করে। সামনে পুজোর মরসুম। এদের বিপজ্জনক গতিবিধি বাড়বে। ভ্যানগুলোয় যাতে ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে, সে বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অজয় দাস
উলুবেড়িয়া, হাওড়া