Cholera

সম্পাদক সমীপেষু: সমাধান কোথায়

দীর্ঘ দিন বাদে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেল কামারহাটি পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:০৩
Share:

কামারহাটি পুরসভার অন্তর্গত বেলঘরিয়ায় বাস করি। কিছু নাগরিক অস্বাচ্ছন্দ্য সম্পর্কে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।

Advertisement

এক, দীর্ঘ দিন বাদে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেল কামারহাটি পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলে। আমরা দুশ্চিন্তায়, আমাদের কলের জলে জীবাণু নেই তো? থাকলে, এর সমাধান কোথায়?

দুই, বি টি রোড থেকে বেলঘরিয়া প্রবেশের প্রধান পথ নীলগঞ্জ রোড। সেই পথে বি টি রোড ও ফিডার রোডের সংযোগকারী অংশটির বেহাল দশা। বড় বড় গর্ত এবং ভাঙাচোরা রাস্তায় আজকাল রিকশা, অটো বা টোটো চলতে পারে না। মোটরগাড়ি ও বাস অত্যন্ত বিপজ্জনক ভাবে পার হয়, সাসপেনশন ভাঙা এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি-পরবর্তী সময়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বেলঘরিয়া থানার ঠিক পিছনে, পুরসভার ২০০ মিটার দূরত্বে এবং কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যানের ঘরের পাশের রাস্তার এই দুর্গতি যে কর্তৃপক্ষের গোচরে নেই, তা হতে পারে না। তা হলে এরও সমাধান নেই কেন?

Advertisement

তিন, বেলঘরিয়ার প্রধান রাস্তা ফিডার রোড দিয়ে ভারী লরি প্রবেশ নিষেধ। অন্তত সাইনবোর্ড তাই বলে। তবু সব সময় বড় বড় ট্রাক ভিড়ে ভরা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। যে কোনও সময়ে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়।

চার, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের নামে বেলঘরিয়া আছে, কিন্তু বেলঘরিয়ার সঙ্গে কোনও সংযোগকারী রাস্তা নেই। দক্ষিণেশ্বর বা নিমতা দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে ধরতে হয়। এর সমাধানই বা কোথায় পাব?

স্বপ্নেন্দু মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-৫৬

কার্ড হয়রানি

রেশন কার্ড ও আধার কার্ডের লিঙ্ক করার বিষয়টি এক বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইদানীং। খাদ্য দফতরের ওয়েবসাইটটিতে এই সংক্রান্ত কাজে এক চরম হয়রানির শিকার হতে হয় মোবাইল ফোনে ওটিপি আসা নিয়ে। কখনও আসে, কখনও সেই ওটিপি আসার জন্য দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। সব ধরনের কাজের উল্লেখ থাকলেও সেগুলি ওই ওয়েবসাইট থেকে কোনও ভাবেই হচ্ছে না।

গত এক মাস ধরে অনেকেই কোনও সাইবার কাফেতে টাকা খরচ করে লিঙ্ক করার আবেদন জমা করেছেন বা এখনও করছেন। এরই মাঝে আবার সরকারি ভাবেও ক্যাম্প করা হয়েছে বিনা খরচে রেশন কার্ড ও আধার কার্ডের লিঙ্ক করে দেওয়ার জন্য। সেখানেও গিয়ে জানা যাচ্ছে, অনলাইনে যাঁরা আগেই লিঙ্কের কাজ বাইরে থেকে করিয়েছেন, তাঁদের কারও কারও লিঙ্ক হয়েছে, আবার অনেকেরই হয়নি। যদি কাজই না হয়, তবে কেনই বা ওই রকম অকেজো ওয়েবসাইট রাখা, আর কেনই বা তার মাধ্যমে মানুষের সময় আর অর্থ নষ্ট করা? কেন সরকারি কাজে সাধারণ মানুষের অর্থ নষ্ট হবে? এই ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট সরকারি নির্দেশিকা জারি করা হয়নি কেন?

রেশন কার্ড সংক্রান্ত আর একটি কাজে আমি নিজেও ভুক্তভোগী। আমার স্ত্রী’র রেশন কার্ডটি বিয়ের পরে স্থানান্তর করার জন্য গত বছর ডিসেম্বর মাসে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছিলাম। আমাকে বারকোডযুক্ত একটি স্লিপ সঙ্গে সঙ্গে ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই বারকোডের নম্বর ধরে ফর্মের ব্যাপারে স্টেটাস চেক করতে গিয়ে জানতে পারি, ফর্মটি নাকি সাইটে সংশ্লিষ্ট কর্মীর দ্বারা আপলোডই করা হয়নি। এর পর কোনও কাজ না হওয়ায় গত ২৩ মার্চ এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করি ও আমাকে একটি নম্বর দেওয়া হয় পরবর্তীতে স্টেটাস জানার জন্য। এক মাস অতিক্রান্ত হলেও কোনও সাড়া না পাওয়ায় আমি সাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করলে বলা হয়— ভোটের জন্য এখন কিছু করা যাবে না। ভোটের পর কাজ হবে। ভোট অতিক্রান্ত হওয়ার প্রায় দেড় মাস পর আবার ফোন করলে বলা হল— কাজ চলছে। ধৈর্য ধরুন। এত তাড়াহুড়ো করলে হবে না! যা-ই হোক, ধৈর্য ধরে এখনও বসে আছি। আর কত মাস পরে ওই কার্ড পাব, তা জানতে চাই। না কি আমাকে বলা হবে আবার ফর্ম পূরণ করতে?

সর্বোপরি, আর একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়— রেশন কার্ড কেন নির্ভুল হয় না বা হবে না? প্রায় ৮০ শতাংশ রেশন কার্ডে নাম, ঠিকানা কিছু না কিছু ভুল থাকে। সেগুলিকে সংশোধন করতে দিলে আবার তার জন্য ফর্ম পূরণ করতে হয়। বোঝাই যাচ্ছে সাধারণ মানুষের এই হয়রানি কমবে না!

মিলন কান্তি সরকার

পাঠকপাড়া, বাঁকুড়া

খোয়াইয়ের হাট

বেশ কিছু দিন আগে গিয়েছিলাম বোলপুর শান্তিনিকেতন। খোয়াইয়ের পাশের একদা জমজমাট ‘শনিবারের অন্য হাট’-এর বর্তমান অবস্থা দেখে মন খারাপ হয়ে গেল। ২৫-৩০ জন মানুষ নিয়ে গড়ে ওঠা সে দিনের সেই পুরনো হাট আজ পরিসীমা বিস্তৃত হয়ে যেন জনবহুল গড়িয়াহাট। কিলবিল করছে শহুরে হুজুগে মানুষের দল আর তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গজিয়ে ওঠা দোকানপাটের ভিড়। সেই দোকানের সব বিক্রেতা যে স্থানীয়, তাও মনে হয় না। অথচ, অতীতের সেই ‘শনিবারের অন্য হাট’-এর জায়গা আজ ফাঁকা, জঙ্গলে পরিণত হয়েছে প্রায়। মাত্র দু’জন বিক্রেতা রয়ে গিয়েছেন আজ মাটি আঁকড়ে। আর ক্রেতা? শূন্য। আমাদের মতো শহুরে মানুষের ভিড়, আদিখ্যেতা আর রাজনীতির হলাহল কি তবে শান্তিনিকেতনের পরিবেশের গলা টিপে মারছে?

উজ্জ্বল দত্ত

শ্রীরামপুর, হুগলি

ভুল ওষুধ

ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিক্স অ্যাক্ট, ১৯৪০ অনুযায়ী, এক জন রেজিস্টার্ড মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনও ওষুধ ওষুধের দোকান থেকে পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু অনেক ওষুধের দোকানদার তাঁর দোকানের রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্টের অনুপস্থিতিতে ব্যবসার খাতিরে রোগী এসে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধ চাইলে, সেটা দিয়ে দেন। বিশেষ করে শেডিউল জি, শেডিউল এইচ এবং শেডিউল এক্স-এর ওষুধ, যেগুলো প্রেসক্রিপশন ছাড়া দেওয়াই যায় না, সেগুলোও তাঁরা অনেক সময় দিয়ে দেন প্রেসক্রিপশন ছাড়াই। রিফিলিং-এর ক্ষেত্রেও সেই একই ভাবে রোগীরা শুধু শেষ হয়ে যাওয়া ফাঁকা ওষুধের পাতা দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে নেন। বিপত্তি হতে পারে এখানেই।

ঘটনাচক্রে এই ওষুধের পাতা দেখিয়ে ওষুধ নিতে গিয়ে সমস্যা হয়েছিল আমার ৭০ বছর বয়সি দিদিমার। দিদিমা হাইপারটেনশনের রোগী। প্রায় চার মাস আগে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনেছিলেন বাড়ির কাছের এক ওষুধের দোকান থেকে। যথারীতি ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে তিনি প্রেসক্রিপশন ছাড়া শুধুমাত্র ফাঁকা ওষুধের পাতাটি দেখিয়ে সেই ফার্মেসি থেকে ওষুধ আনতেন আর সেটাকেই প্রেশারের ওষুধ ভেবে নিয়মিত খেয়ে যেতেন। এক দিন আমার মামি ঠাকুমার ওষুধ আনতে গিয়ে খালি ওষুধের পাতাটা দেখিয়ে দোকানদারকে বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রেশারের ওষুধ এক পাতা আর তার সঙ্গে একটি অ্যাসিডের ওষুধের পাতা দিতে। দোকানদার পাতাটি দেখে জানান, পাতাটি অ্যাসিডের ওষুধের, প্রেশারের নয়। ভাগ্য ভাল, এত দিন অন্য ওষুধ খেয়ে আমার দিদিমার কিছু হয়নি।

তাই এক জন ফার্মাসিস্ট হিসাবে সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি, ওষুধ কিনতে গেলে প্রেসক্রিপশনটা সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত। ফার্মেসিতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের কাছেও অনুরোধ, তাঁরা যেন সব সময় রোগী বা রোগীর বাড়ির লোককে প্রেসক্রিপশন আনতে বলেন এবং এক জন রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্টের তত্ত্বাবধানে প্রেসক্রিপশনটা দেখে রোগীকে ঠিকঠাক ভাবে বুঝিয়ে দিন কোনটা কিসের ওষুধ ও কী ভাবে সেটা খেতে হয়। না হলে এই রকম ভুল কোনও ভাবেই আটকানো সম্ভব হবে না, রোগীর ক্ষতিও হতে পারে।

কৌশিক রঞ্জন ধাড়া

মাধবপুর, পূর্ব মেদিনীপুর

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement