‘আধার-যোগে বহু ভুয়ো রেশন কার্ড ধরে সাশ্রয়’ (৮-১০) খবরের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড সংযোগ করার ফলে যেমন ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হচ্ছে, তেমনই এর পাশাপাশি সরকারের অর্থ বা রেশনের খাদ্যদ্রব্য সাশ্রয় হবে। সেই সকল অর্থ বা খাদ্য সরকার অন্য কোনও জনকল্যাণমূলক কাজে লাগাতে পারলে গরিব মানুষদের সুবিধা হবে।
আধার সংযোগ করার ফলে মৃত নাগরিকদের রেশন কার্ড, একাধিক নামের ব্যক্তিদের রেশন কার্ড, এমনকি ঠিকানা পরিবর্তন করা নাগরিকদের রেশন কার্ডও বাতিল হবে। প্রকৃত উপভোক্তা ছাড়া অন্য কেউ রেশনের খাদ্যদ্রব্য তুলে নিতে পারবেন না। কারণ, এর জন্য প্রয়োজন ওটিপি। একটি আধারে একটিই রেশন কার্ড সংযোগ করা সম্ভব। বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ এমন ডিজিটাল প্রযুক্তি চালু করার জন্যই ভুয়ো রেশন কার্ড ধরা সম্ভব হচ্ছে। যত বেশি আধার লিঙ্ক করা যাবে, তত বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হবে।
পাশাপাশি রেশন কার্ড হোল্ডারদের নামের বানান সম্বন্ধে সচেতন থাকতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, রেশন কার্ডে এক বানান, আধার কার্ডে অন্য। অতএব কোনও নাগরিকের নামের বানান এক রাখতে পারলে আগামী দিনে এই পরিষেবায় আরও সুবিধা হবে, না হলে নামের গরমিলের এই সমস্যাটি থেকেই যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজর দিতে ভাল হয়।
মুন্সি দরুদ
সিউড়ি, বীরভূম
কেন এই প্রহসন
ন্যাশনাল ভোটারস’ সার্ভিসেস পোর্টাল-এ এক জন ভারতীয় নাগরিক তাঁর ভোটার কার্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য পেতে পারেন, আবার সংশোধন করতে পারেন উপযুক্ত তথ্যাদি দিয়ে— এমনই ছিল প্রতিশ্রুতি। আমার জন্ম হাওড়া শহরে, ভোটার কার্ডও ওখানকার। ২০১৭ সালে ব্রহ্মপুরে চলে আসি, যার বিধানসভা কেন্দ্র টালিগঞ্জ। এই ঠিকানায় আমি আধার কার্ড, বিদ্যুতের বিল, গ্যাস কানেকশন বিল ইত্যাদি পেয়ে যাই। এর পর ঠিক করি উপরের পোর্টালটি থেকে এক বিধানসভা ক্ষেত্র থেকে অন্য বিধানসভা ক্ষেত্রে ঠিকানা বদলের যে পদ্ধতি আছে (ফর্ম ৬), তা করে আমার ভোটার কার্ড আপডেট করে নেব। পোর্টালে যেমন বলা ছিল, সেইমতো গত ২০ সেপ্টেম্বর সব তথ্য, নিজের ছবি, জন্মতারিখের প্রমাণস্বরূপ আধার, ও ঠিকানার প্রমাণের জন্য গ্যাসের বিল জমা দিই ওয়েবসাইটে। ২৬ সেপ্টেম্বর জানানো হয়, এক জন বিএলও নিযুক্ত হয়েছেন। ২ অক্টোবর একটি মেসেজ আসে যে, জমা করা তথ্যাদি নাকি অসম্পূর্ণ, তাই সমস্ত তথ্য আবার ৯ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে হবে। কোথায়, তা বলা ছিল না। ওয়েবসাইটে লগ-ইন করে চেষ্টা করেছিলাম, নতুন করে ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার উপায় ছিল না। হেল্পলাইনে ফোন করেছিলাম। প্রথম তিন বার সেখান থেকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়— আবার নতুন করে আবেদন করুন, ওয়েবসাইটে অনেক সময় গোলমাল হয়, তাই আপনি ডকুমেন্ট আপলোড করলেও হয়তো ওয়েবসাইটে কোনও ভুল হয়েছে; এক সপ্তাহ পরে আবেদন করতে হবে; নতুন ওয়েব ব্রাউজ়ার থেকে আবেদন করতে হবে। এগুলো করে লাভ হয়নি। চতুর্থ বার ফোন করাতে এক জন বললেন, ইআরও অফিসে গিয়ে জমা দিন। যে মেসেজটা এসেছে, ওটাই নাকি হিয়ারিং-এর নোটিস। ৯ তারিখের মধ্যে জমা দিন। মেসেজে কোথায় জমা দিতে হবে, তা বলা ছিল না। এটাই প্রত্যাশিত যে, উপভোক্তা নিজেই তা চতুর্দিকে দিশেহারা হয়ে ফোন করে খুঁজে বার করবেন। ইতিমধ্যে ২ অক্টোবরই বিকেলে আর একটি মেসেজ আসে, বলা হয় আবেদনটি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আবার ফোন করি হেল্পলাইনে। তাঁরা জানান, নিজে গিয়ে নতুন করে আবেদন করুন ইআরও অফিসে। অনলাইনে হবে না। যদি এমনটাই হয়, তা হলে এই ওয়েবসাইট খুলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেন এই প্রহসন? অভিযোগ জানানোর একটি ইমেল-ও দেওয়া হয়। তাতে ইমেল করে কোনও প্রত্যুত্তর পাইনি।
অভীক রায়
কলকাতা-৯৬
শারীরশিক্ষা
‘গয়ংগচ্ছ’ (৬-১০) সম্পাদকীয়র প্রেক্ষিতে এই চিঠির অবতারণা। গত বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল যে ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, তা আর যা-ই হোক শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি সুবিচার করা হয়েছে বলা যেতে পারে না। সব রকমের কাজ চালু রেখে, শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার অধিকার হরণ করে, সবাইকে পাশ করিয়ে এক শ্রেণির ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের খুশি করা যেতে পারে। কিন্তু শিক্ষার উন্নতি কতটা হল, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ইতিমধ্যে একটি নির্বাচন শেষ হয়ে, পূর্ববর্তী সরকার ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। তাই এ বছর রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে এত দিনে কোনও একটা সিদ্ধান্ত ঘোষণার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক কর্তৃপক্ষ কিংবা শিক্ষা দফতরের এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও ঘোষণাই নেই। এই জায়গাটাই সম্পাদকীয়তে তুলে ধরে উচিত কাজ করা হয়েছে।
নির্বাচনের পর বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের একটু অদলবদল হলে, সাধারণ মানুষ নতুন কিছু আশা করতে পারেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে নতুন সভাপতি দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদে একই ব্যক্তি সভাপতির আসনে দীর্ঘ দিন ধরে রয়েছেন। তাই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছ থেকে নতুন কিছু আশা করা গেলেও, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির কাছ থেকে নতুন কিছু আশা না করাই ভাল। ২০১১ সালে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শারীরশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক আবশ্যিক বিষয় হিসাবে স্কুলগুলিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় প্রাথমিক স্কুল এবং উচ্চ প্রাথমিকে শারীরশিক্ষা চালুও হল। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও শারীরশিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করল। কিন্তু গত দশ বছরেও মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসারে নবম-দশম শ্রেণিতে তা চালু হল না। আমরা যারা শারীরশিক্ষা নিয়ে কাজ করি, সভাপতির কাছে বেশ কয়েক বার দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি।
যে শিক্ষা শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক ইত্যাদি গুণাবলির বিকাশ ঘটায়, শৃঙ্খলা শেখায়, নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা বাড়ায়, সেই শারীরশিক্ষাকে নবম-দশম শ্রেণিতে অনাবশ্যক অপশনাল বিষয় হিসাবে রেখে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাকে অপূর্ণ রেখে নবম-দশম শ্রেণিতে আজ পর্যন্ত আমাদের বাস্তবসম্মত দাবিকে অগ্রাহ্য করে, শারীরশিক্ষাকে আবশ্যিক লিখিত বিষয় হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হল না। বিশ্ববরেণ্য ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকর যেখানে বলছেন, প্রতি দিন স্কুলে এক ঘণ্টার শারীরশিক্ষার ক্লাস রাখতে হবে এবং সম্ভব হলে স্কুলের শুরুতে তা করতে হবে, সেখানে কে শোনে কার কথা! তাই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছ থেকে ভাল কিছু ঘোষণার আশা বাতুলতা মাত্র।
অজয় দেবনাথ
রানাঘাট, নদিয়া
বদলাবেন না
হাওড়া শহরের ফুসফুস মধ্য হাওড়ার ডুমুরজলায় রাজ্য সরকার স্পোর্টস সিটি গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনের সহায়তায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে। এটি এমনই একটি জায়গা, যেখানে এক সঙ্গে ফুটবল, হকি, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, সাঁতার ইত্যাদি খেলাধুলোর ব্যবস্থা আছে। এখানে সকাল-বিকেল প্রবীণ-নবীনেরা শরীরচর্চার জন্যও ভিড় জমান। লাফিং ক্লাব ও মাউন্টেনিয়ারিং ক্লাবও এখানে আছে। সেই জায়গাটাই ভবিষ্যতে কংক্রিটে রূপ নিতে চলেছে। রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, এত সুন্দর জায়গাটার আধুনিকীকরণ না করে বর্তমান অবস্থাতেই চিরকাল থাকতে দিন।
পিনাকীশুভ্র বকসি
কদমতলা, হাওড়া