গত কয়েক মাস ধরে সংবাদমাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় বিপুল খরচের একাধিক সংবাদ প্রকাশ্যে আসছে। শুধু করোনা কালে নয়, এই সব হাসপাতালে এমন আকাশছোঁয়া বিল হামেশাই হয়। সব সময় যে চিকিৎসকের সিদ্ধান্তের উপরে এই বিশাল খরচ নির্ভর করে তা নয়, বেসরকারি হাসপাতালেরও একটা ভূমিকা থাকে। সেখানে রোগীর সুস্থ হওয়ার তুলনায় অনেক ক্ষেত্রেই মুনাফা বড় হয়ে ওঠে। চিকিৎসায় প্রচুর অর্থব্যয়ের পরেও অনেক রোগী বাঁচেন না। বাঁচলেও, অনেককেই পরবর্তী সময়েও ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়, অনেককে আবার পরিজনদের উপর নির্ভর করে জীবন কাটাতে হয়। প্রিয়জনেরা যখন রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান, তখন তাঁরা জানেন না কোন চিকিৎসায় কত খরচ হতে পারে। তাঁরা সাধারণত চিকিৎসককে বলেন, “রোগীকে বাঁচানোর জন্য যা ভাল বোঝেন করুন।”
ডাক্তারবাবু যদি রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে বলে দেন, চিকিৎসার খরচ ২০-২৫ লক্ষ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে, এবং বাঁচলেও রোগী সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারবেন না, তখন তাঁর পরিজনরাই হয়তো ওই খরচের কথা ভেবে পিছিয়ে আসতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কোনও চিকিৎসক তাঁর নিজের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নিতেন— সেটা জানা গেলে, সাধারণ মানুষের পক্ষে একই পরিস্থিতিতে ঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হত। রোগী এবং তাঁর পরিজন— উভয়েরই সুবিধা হত।
অসিত কুমার রায়
ভদ্রেশ্বর, হুগলি
ফাঁকা কেন?
কোচবিহার ২ নম্বর ব্লক পুন্ডিবাড়িতে প্রথম লকডাউন থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত প্রধান সড়কের দু’দিকে খুচরো ও পাইকারি আনাজ ব্যবসা আর জলের ট্যাঙ্কের ভিতরে ও আশেপাশে মাছ, মাংস ও আনাজের ব্যবসা অবাধে চলছে। ওই জলের ট্যাঙ্কের সামনেই প্রতি দিন প্রচুর ছাগল, ভেড়া বলি দেওয়া হচ্ছে। সেই রক্ত এবং বর্জ্য ওখানেই পড়ে থাকছে। সেই সঙ্গে আনাজ বিক্রেতারাও এখানেই তাঁদের বর্জ্য ফেলে যান। এই অতিমারির সময় চার পাশে নোংরা ও জঞ্জাল জমে মাছি, মশা ও দুর্গন্ধের কারণে আশপাশের বাড়িতে টেকা দায় হয়ে পড়েছে।
বাজার চলাকালীন পুন্ডিবাড়ির সুভাষ পল্লি সড়ক ও প্রধান সড়ক দিয়ে চলাফেরা করা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখেন না। কোচবিহার মিলিটারি ব্যারাক থেকে যে সব অ্যাম্বুল্যান্স হাসিমারার দিকে যায়, সেগুলিকে পথচারী ও বিক্রেতাদের ভিড়ের কারণে বহু ক্ষণ পথে আটকে থাকতে হয়। অথচ, পুন্ডিবাড়িতে রাজ্য সরকারের দেওয়া সাত কোটি টাকা ব্যয়ে মাছের বাজার হয়েছে, এমনকি পাইকারি বাজারের জন্যেও নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। কিন্তু সেগুলো ফাঁকা পড়ে থাকে। তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি।
পঙ্কজ কুমার সাহা
পুন্ডিবাড়ি, কোচবিহার
মার্কশিট চাই
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা অনেক দিন হয়ে গিয়েছে। অনলাইনে ফল প্রকাশও হয়েছে। কিন্তু আমরা মার্কশিট এখনও হাতে পাইনি। ফলে আমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ’-এর ফর্ম ফিল-আপ করতে পারছি না। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা এর ফলে বিরাট সমস্যায় পড়েছেন। স্কলারশিপের পোর্টাল বন্ধ হয়ে গেলে যোগ্য নম্বর থাকা সত্ত্বেও দু’বছরের স্কলারশিপ আমরা পাব না। বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে চাই। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের মার্কশিট প্রদানের বন্দোবস্ত করা হোক।
অনন্যা সাধুখাঁ
কলকাতা-৬০
এখন পর্যটন?
বিধিনিষেধ সত্ত্বেও পর্যটকরা যাচ্ছেন দিঘা, বকখালি, টাকিতে। অনেকের সঙ্গে শিশুরাও থাকছে। ট্রেন না চললেও ব্যক্তিগত বা ভাড়ার গাড়িতে যাচ্ছেন তাঁরা। কিছু হোটেলও খোলা রয়েছে। এই অতিমারি পরিস্থিতিতে কোনও কোভিড বিধিই মানছেন না এই পর্যটকরা। এঁদের অনেককে বেপরোয়া ভাবে বলতেও শুনেছি, অতিমারির তৃতীয় ঢেউ আসার আগে ঘুরে নিই! তৃতীয় সংক্রমণের ঢেউয়ে শিশুদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সত্ত্বেও অভিভাবকরা এ ধরনের নির্বোধ বিলাসিতার সিদ্ধান্ত নেন কী করে? একঘেয়েমি আর ঘরবন্দি দশা কাটাতে এত বড় দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ! অফিস, স্কুল, উপার্জনের জায়গায় নিয়মিত লোকসান মেনে নিয়ে সবাই যখন অতিমারি ঠেকাতে একজোট, তখন এমন হঠকারিতায় ভয়, লজ্জা দুটোই পাচ্ছি। সমাজ ও দেশের স্বার্থে প্রশাসনের কাছে অন্তত আগামী দু’মাস এই নীতি বিবর্জিত পর্যটন রুখতে কড়া পদক্ষেপ করার অনুরোধ করছি। যদি আশঙ্কা সত্যি হয়, তা হলে আগামী প্রজন্মের কাছে মুখ দেখাতে পারব কি?
অরিত্র মুখোপাধ্যায়
শ্রীরামপুর, হুগলি
জাল কত দূর
‘বিষ চক্র’ (২৮-৬) সম্পাদকীয়টি সময়োপযোগী। সেখানে জাল টিকা কাণ্ডের নায়ক দেবাঞ্জন দেব যাতে কঠোরতম শাস্তি পান, সে ব্যাপারে সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর সদর্থক ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। খুব ভাল কথা। দেবাঞ্জন নামে এক জন সাধারণ ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে কলকাতা পুরসভার ভুয়ো ডেপুটি জয়েন্ট কমিশনার ও সরকারের শীর্ষকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে দিনের পর দিন ঠিকাদারদের সঙ্গে এবং বিভিন্ন ভুয়ো প্রকল্পের মাধ্যমে যে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে গিয়েছেন, তা কি সকলেরই অজানা? এ কথা কি বিশ্বাসযোগ্য? একার পক্ষে কি কলকাতার বুকে এত বড় দুর্নীতির জাল বিস্তার করে কোটি কোটি টাকা কামানো সম্ভব? আরও কী কী কাণ্ডে কীর্তিমান দেবাঞ্জন কত লোকের সর্বনাশ করেছেন, তাও তো জানা প্রয়োজন।
আজ হয়তো যুবকটি ভুয়ো টিকার বিষচক্রে ফেঁসে গিয়েছেন, কিন্তু এমন চক্রের জাল কত দূর বিস্তৃত বা এর সঙ্গে কোন কোন মন্ত্রী, নেতা, প্রশাসনিক আমলারা জড়িয়ে আছেন, তারও তো নিরপেক্ষ তদন্ত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
রাজ্যের রাজনৈতিক বিরোধীরা নির্বাচনে হারের জ্বালা মেটাতে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে বিরোধিতা করছেন এবং পুরসভা নির্বাচন পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থেই এই বিষয়টাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত, এ ক্ষেত্রে বিরোধীদের সরবতাকে গুরুত্ব না দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা। এবং তদন্তে যদি কোনও নেতা, মন্ত্রী বা আমলা ধরা পড়েন, তা হলে তাঁদের যথোপযুক্ত শাস্তি দিয়ে দল এবং ক্ষমতা থেকে বহিষ্কার করুন এবং জনগণের চোখে সরকার ও দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরান।
তপনকুমার বিদ
বেগুনকোদর, পুরুলিয়া
সচেতনতা নেই
‘প্লাস্টিকের বিপদ’ (১৯-৬) শীর্ষক সম্পাদকীয়টির পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। মানুষ সচেতন না হলে প্লাস্টিকের বিপদ কাটবে না। সম্প্রতি আবহাওয়া বিপর্যয়ে কলকাতা ভেসে গিয়েছিল। জমা জল বার করতে হিমশিম খেতে হয় পুরসভাকে। চার-পাঁচ দিন পরে পুরসভার তৎপরতায় ম্যানহোল খোলা হয়। দেখলাম, সেখানে প্লাস্টিকের মেলা আর পাঁক। প্রচুর প্লাস্টিকের জলের বোতলও ম্যানহোলগুলি থেকে ওঠে। কোন প্লাস্টিক মাটিতে মিশবে আর কোনটা মিশবে না, এ বিষয়েও ব্যবহারকারী ও বিক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা নেই। বিপদ কমাতে আগে প্লাস্টিকের ব্যবহার বিষয়ে সচেতনতা দরকার।
রীতা পাল
কলকাতা-২৪