করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় মাঝের কয়েক মাস বাদ দিলে আমজনতা প্রায় দেড় বছর ধরে গণপরিবহণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইফলাইন— রেল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। রাজ্য সরকারও পনেরো দিন ছাড়া এই ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে চলেছে। তবে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার নিয়ামক সংস্থাগুলি কিন্তু এত কিছুর মধ্যেই পরীক্ষার আয়োজন করে যাচ্ছে। ফলে, চরম অসহায়তার সম্মুখীন পরীক্ষার্থীরা। এ মাসের গোড়া থেকে শুরু হয়েছে আইবিপিএস-গ্রামীণ ব্যাঙ্কে নিয়োগের পরীক্ষা। এর পরেও বহু পরীক্ষার তারিখ কর্তৃপক্ষ ফেব্রুয়ারিতেই ঘোষণা করেছেন। তা হলে দূরদূরান্তের প্রার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে কী ভাবে পৌঁছবে? যেমন, সদ্যসমাপ্ত এসবিআই জুনিয়র অ্যাসোসিয়েট পরীক্ষা দিতে গিয়ে এই পত্রলেখকের গাড়িভাড়া হিসেবে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০০০ টাকা, যা সাধারণ অবস্থায় পড়ে মাত্র ৭০-৮০ টাকা! এক জন পরীক্ষার্থীকে একাধিক পরীক্ষা দিতে গেলে এই খরচের মাত্রা চিন্তা করা যায়? পরীক্ষার এই বিশেষ দিনগুলিতে যদি ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়, তা হলে বহু সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারে। সাধারণত পরীক্ষার্থীদের কাছে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড থাকে। অনায়াসেই যার চেকিং করা যায়। এই অবস্থায় স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সৌম্যদীপ্ত জানা
তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর
গেমের ফাঁদে
অনলাইন ক্লাসের সৌজন্যে শিশুশ্রেণি থেকে কলেজ পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের হাতে উঠে এসেছে স্মার্টফোন। এক সময় যে স্মার্টফোন থেকে ছেলেমেয়েদের দূরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হত, এখন সেটাই হয়ে উঠেছে একমাত্র ভরসার পাত্র। কিন্তু এর ফলে যে ভয়ানক ক্ষতি ছেলেমেয়েদের হচ্ছে, তা অপূরণীয়। অফলাইন গেমের পাশাপাশি ফ্রিফায়ার, বিজিএমআই, ফারলাইট-৮৪, কল অব ডিউটি-র মতো মাল্টিপ্লেয়ার অনলাইন গেমে ছেলেমেয়েরা আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনলাইন ক্লাসের মাঝেও যেমন গেম খেলা চলছে, তেমনই ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও এই নেশা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছে না। গেমের পাশাপাশি তাদের দেওয়া হচ্ছে নানান অনৈতিক প্রলোভন, এমনকি পাঠানো হচ্ছে অশ্লীল লিঙ্কও! রামি, অনলাইন ক্রিকেট-সহ প্রায় বিভিন্ন অনলাইন গেমের কারণে বাড়ছে জুয়া খেলার প্রবণতা। গেমের বিভিন্ন লেভেলে যাওয়ার জন্য সরাসরি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে অভিভাবকদের ক্ষেত্রে আরও বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনার সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে।
স্মার্টফোনের যে প্রয়োজনীয়তা নেই, তা নয়। কিন্তু ছোট, ছোট ছেলেমেয়েদের হাতে যদি ফোন থাকে, আর তাতে যদি তাদের পছন্দের জিনিস সরবরাহ করা হয়, তা হলে তারা তো বিপথে যাবেই। যে সংস্থা বা যারা এই সব গেম তৈরি করছে, তাদের কাছে রোজগারই একমাত্র উদ্দেশ্য। কোনও রকম সামাজিক দায়বদ্ধতা তাদের নেই। এই অবস্থায় সরকারকেই এই ধরনের অনলাইন গেম নিষিদ্ধ করার মতো কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে। না-হলে নতুন প্রজন্মের একটি বিশাল অংশ যেমন নানান মানসিক ও শারীরিক রোগের শিকার হবে, তেমনই কুকর্ম ও বদনেশাতেও আসক্তি বাড়বে।
কৌশিক সরকার
রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া
ভুয়ো দলিল
৬৫ বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করছি! নানা ভুয়ো পরিচয়ে সরকারি-বেসরকারি বিবিধ কাজেকর্মে সরল সাদাসিধে মানুষদের চরম আতান্তরে ফেলার প্রয়াস আগেও ছিল, এখনও তা বিদ্যমান। বেশ কয়েক বছর ধরে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা, নদিয়ার পলাশিপাড়া প্রভৃতি এলাকায় ভুয়ো দলিলচক্রের চরম উৎপাত চলছে। এই সব জেলার দেওয়ানি আদালতগুলিতে খোঁজ নিলেই প্রকৃত তথ্য জানতে পারা যাবে বলে মনে করি। প্রতি বছরই এদের কারণে অসংখ্য মানুষের অহেতুক হয়রানি, মনোকষ্ট ও অর্থের অপচয় হচ্ছে! তাই দুর্নীতির গোড়ায় আঘাত হেনে এই জাল-চক্রের সমূলে বিনাশ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছি।
পিনাকীচরণ দে
কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান
কেমন ব্যবস্থা
জমির খাজনা জমা দিতে গিয়েছিলাম খড়্গপুর এস ডি অফিসে। কতকগুলো বিসদৃশ জিনিস নজরে এল। এক, খাজনার টাকা জমা নেওয়া হয় চারতলায়। প্রবীণ নাগরিক-সহ সবাইকে বহু সিঁড়ি ভেঙে ওই চারতলায় উঠতে হয়। বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষ হলে সেখানে উঠতেই পারবেন না। অনায়াসেই দোতলায় খাজনার টাকা জমা নেওয়া যেতে পারে। দুই, চারতলায় বসার কোনও ব্যবস্থা নেই। দু’তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আট-দশটা বেঞ্চ দেওয়া থাকলে অনেকেই আরাম করে বসতে পারেন। তিন, সকাল সাড়ে আটটায় অফিসে পৌঁছে দেখলাম, একটি রুলটানা কাগজে অনেকের নাম লেখা আছে। আমিও সেই কাগজে নিজের নাম লিখে দিলাম। পরে শুনলাম, ওই কাগজের কোনও মূল্যই নেই। দশটার সময় অফিসের লোক এসে আসল কাগজ দিয়ে গেলেন। তখন আমি কিছু ক্ষণের জন্য বাইরে থাকায় নতুন কাগজে নাম লিখতে দেরি হয়ে যায়। চার, সপ্তাহে মাত্র দু’দিন টাকা জমা নেওয়া হয়। প্রক্রিয়াটি সপ্তাহে চার দিন হলে ভিড় অনেক কম হত। আর পাঁচ, খড়্গপুর একটি বিরাট শহর। খাজনা জমা নেওয়ার চার-পাঁচটি সেন্টার হলে জনগণের সুবিধা হয়।
সঞ্জয় চৌধুরী
খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
বন্যপ্রাণী বাঁচাতে
হাওড়ার গ্ৰামের দিকের রাস্তায় রাতের অন্ধকারে প্রায় দিনই গাড়ি চাপা পড়ে বন্যপ্রাণীরা মারা যাচ্ছে। এর ফলে এলাকায় কমে যাচ্ছে বিপন্ন প্রজাতির ভাম, খটাশ, শেয়াল, এমনকি রাজ্যপ্রাণী বাঘরোলও। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এই প্রাণীদের বাঁচাতে প্রশাসনের তরফ থেকে দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা
চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে সতর্ক করা দরকার। গাড়িচালকদের পরিবেশ সংক্রান্ত উপযুক্ত প্রশিক্ষণও দেওয়া উচিত, যাতে গাড়ি
চালানোর সময় তাঁরা সচেতন থাকতে পারেন। বন্যপ্রাণীদের করিডরে উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বাস্তুতন্ত্রে দেওয়া হোক
সুরক্ষা বলয়।
দীপংকর মান্না
চাকপোতা, হাওড়া
প্রতারণা রোধে
ইদানীং সংবাদপত্র খুললেই বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার খবর আমাদের আকৃষ্ট করছে। ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে সংবাদ-শিরোমণি দেবাঞ্জন দেবের রেশ কাটতে না কাটতেই একে একে আবির্ভূত হলেন আরও কয়েক জন। বহরমপুরের আইনজীবী সনাতন রায় চৌধুরী। ইনি আবার নীল-বাতি সমৃদ্ধ হয়ে জমি-বাড়ি বিক্রির প্রতারণা চক্রের পান্ডা। ধরা পড়লেন কৃষ্ণনগরের রাধারাণী বিশ্বাস, যাঁর কাজ ছিল চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানো। আবার এমন সংবাদও নিয়মিত— বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস-প্রতারণা। অবশেষে খুন কিংবা মামলা-মকদ্দমা।
প্রতারণা আগেও ছিল, পরেও থাকবে। কিন্তু বর্তমানে যে হারে প্রতারণা বেড়ে চলেছে তাতে সরকারের তৎপরতার সঙ্গে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। নইলে জাল বিছিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করতে পিছপা হবে না প্রতারকরা।
তপন কুমার দাস
নোনাচন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর