— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভর্তুকিযোগ্য রান্নার গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে বিক্রয় কেন্দ্রগুলিতে আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে গিয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থার চিত্র ফুটে উঠছে, যার প্রত্যক্ষ শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহক (গ্যাসের আধার যাচাই নিয়ে বাড়ছে হয়রানি, ১৪-১২)। গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা স্থির করা হয়নি। অথচ, বিক্রয়কেন্দ্রের ডিলাররা বলছেন, তেল সংস্থা থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব গ্রাহকের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রাপ্য ভর্তুকি বন্ধ হয়ে যাবে। মুখে মুখে ছড়াচ্ছে নানা আতঙ্ক, যার মধ্যে আছে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার আশঙ্কা। বিষয়টা যে আসলে কী, কত দিনের মধ্যে কাজটা সম্পন্ন করতে হবে, সে বিষয়ে সম্যক ধারণা নেই ডিলারদেরও। এক-এক কেন্দ্র থেকে এক-এক রকম নিদান দেওয়া হচ্ছে। আর গ্রাহকদের তো উদ্বেগের অন্ত নেই। সকাল সকাল কাগজপত্র নিয়ে ডিলারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। বেলা গড়াতে লাইন সর্পিল আকার নিচ্ছে। পরিষ্কার কোনও বিজ্ঞপ্তি না থাকায় লাইনে দাঁড়াচ্ছেন এমন অনেক গ্রাহক, যাঁরা ভর্তুকি প্রত্যাখ্যান করেছেন। অত্যধিক চাপ পড়ায় প্রায়ই ডিলারের সার্ভার জ্যাম হয়ে যাচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে গ্রাহকদের কেটে যাচ্ছে সারাটা দিন। কারণে অথবা অকারণে অসুস্থ এমনকি বৃদ্ধদেরও দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, যদিও বয়স্ক গ্রাহকদের বাড়ি গিয়ে যাচাইপর্ব সমাধা করার কথা। বর্তমান হয়রানি ফিরিয়ে আনছে ২০১৬-র নভেম্বরে নোট বাতিল পর্বে মানুষের বিপুল ভোগান্তির স্মৃতি।
উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, অবিলম্বে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকৃত প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে অবহিত করুন। বায়োমেট্রিক তথ্যসংগ্রহ যদি করতেই হয়, কতটা সুষ্ঠু ভাবে সেটা করা সম্ভব, ভাবুন। প্রয়োজনে গ্রাহকের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে যাচাইয়ের জন্য আলাদা দিন নির্ধারণ করুন এবং আগেভাগে তা জানিয়ে দিন। আর মানবিকতার খাতিরে বয়স্ক এবং অসুস্থদের দীর্ঘ ক্ষণ লাইনে দাঁড়ানো থেকে রেহাই দিন।
বিশ্বনাথ পাকড়াশি, শ্রীরামপুর, হুগলি
হয়রানি কেন
গ্যাসের আধার যাচাই নিয়ে হয়রানির খবরটি পড়লাম। গ্যাস এখন জনসাধারণের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। অসংখ্য গ্ৰাহকের আধার যাচাই করার কথা উপযুক্ত পদ্ধতিতে জনমানসে তুলে না ধরে গ্যাস বিতরণ কেন্দ্রে হাজার হাজার মানুষ, বিশেষত প্রবীণদের হয়রান করার দায় কার? গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলির প্রথমে উচিত ছিল প্রথম শ্রেণির দৈনিক পত্রিকা ও পরে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে পরিষ্কার করে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের উদ্দেশ্যটি তুলে ধরা। যেমন, আধার যাচাই না করালে কোনও ভাবেই গ্যাস বিতরণ বন্ধ হবে না। ভর্তুকি এই মুহূর্তে হয়তো বন্ধ হবে না, কিন্তু ভবিষ্যতে হতে পারে। গ্যাসে এখন ভর্তুকির মূল্যমান এতই কম যে, খুব কম সংখ্যক মানুষ তাতে উপকৃত হন। এতে স্বাভাবিক ভাবেই ভিড় কমত। প্রসঙ্গত, অবসরপ্রাপ্ত পেনশনজীবীদের বছরে এক বার সশরীরে গিয়ে ব্যাঙ্কে লাইফ সার্টিফিকেট দিতে হয়। বিকল্প হিসাবে অনলাইনে সাইবার ক্যাফে বা বাড়ি থেকেও জমা দেওয়া যায়। ডিজিটাল ইন্ডিয়াকে মান্যতা দিয়ে গ্যাস বুকিং হচ্ছে সশরীরে উপস্থিত না থেকেই। তবে আধারের বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের ক্ষেত্রে অন্যথা কেন?
অঞ্জন কুমার শেঠ, কলকাতা-১৩৬
নীতির গেরোয়
বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের গ্যাস কানেকশনের সঙ্গে আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক যোগ করার হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য অনেক মানুষকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আগে গ্যাস কানেকশনের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত করা হয়েছিল প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির অর্থ ঢুকবে বলে। এখন বলা হচ্ছে বায়োমেট্রিক-এর সঙ্গে গ্যাসের কানেকশন যোগ না করলে ভর্তুকি-মূল্য না-ও মিলতে পারে। যদিও সে অর্থমূল্য যৎসামান্য। এই টাকা পেতে কেন আধার সংযোগ করতে হবে? তা ছাড়া বায়োমেট্রিক নিয়ে অনেক সময়েই কারচুপি হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য জেনে ফেলে টাকাপয়সা লোপাট করে দিচ্ছে। তা ছাড়া, অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট-সহ নানা সমস্যা থাকে। আরও সমস্যায় পড়েন প্রবীণেরা, যাঁদের বায়োমেট্রিক নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। সেগুলির সমাধান হবে কী ভাবে? এক-একটি পাড়া বা অঞ্চল ধরে এই সমস্ত সংযুক্তিকরণের কাজ চালু করা হলে, অনেকেরই সুবিধা হয়। তবে সংযুক্তিকরণের অন্য সমস্যাগুলি নিয়েও ভাবনাচিন্তা প্রয়োজন।
সুদীপ্ত দে, কলকাতা-১০২
ট্রেনে হল দেরি
ভারতীয় রেল অনেক উন্নতি করেছে। ‘বন্দে ভারত’ চলছে অতি দ্রুত গতিতে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব বিভাগে হাওড়া-আমতা শাখার পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। শাখাটি একে সিঙ্গল লাইন, তার উপর আমতার পর রয়েছে বড়গাছিয়া ক্রসিং। ট্রেন আমতা ছাড়ার পরে অন্তত আধ ঘণ্টার আগে বড়গাছিয়া আসতে পারে না, আপ ও ডাউন উভয়কেই বড়গাছিয়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রোজ সকালে ট্রেনগুলি হাওড়ায় আধ ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিট দেরি করে ঢোকে। আর সন্ধ্যাবেলায় মাঝে মাঝে প্রায় সব গাড়িই এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে আমতা পৌঁছয়। এর ফলে অনেকেরই অফিসে বা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছতে বেশ দেরি হয়ে যায়।ফেরার সময়েও একই পরিস্থিতি। রেল মন্ত্রককে বার বার অনুরোধ করেও কোনও সুরাহা হয়নি। খড়্গপুর থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও কোনও ফল মেলেনি। এ দিকে পরিষেবা দিনে দিনেখারাপ হচ্ছে। জানি না এর থেকে কবে মুক্তি পাব।
স্বপন চক্রবর্তী, জগৎবল্লভপুর, হাওড়া
যাত্রী প্রতীক্ষালয়
বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে এয়ারপোর্টের দিকে আসার পথে ডানলপ (ব্রিজের উপর) একটি অন্যতম ব্যস্ত বাসস্টপ। সারা দিন এখানে এসে কোনও না কোনও দূরপাল্লার ও স্থানীয় বাস যাত্রীদের নামায় বা যাত্রীদের নিয়ে রওনা দেয় কলকাতার দিকে বা উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এই স্টপে কোনও যাত্রী প্রতীক্ষালয় না থাকার কারণে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ বহু যাত্রীর খুবই অসুবিধা হয়। ব্রিজের উপরে রাস্তা তেমন প্রশস্ত না হওয়ায় বাস বা অন্য গাড়িগুলি যাত্রীদের একদম গা-ঘেঁষে যাতায়াত করে। কোনও শেড না থাকায় যাত্রীরাও প্রাণ হাতে নিয়ে ঝড়, বাজ, বৃষ্টি বা প্রখর রোদে ওই অপ্রশস্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন, ওই স্টপে একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় নির্মাণ করা হলে অনেকেই উপকৃত হবেন।
রতিকান্ত ঘোষ, কলকাতা-১২৪
মলিন নোট
বেশ কিছু দিন ধরে বাজারচলতি দশ ও কুড়ি টাকার পুরনো নোটগুলি ব্যবহারের পক্ষে নিতান্তই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বেশির ভাগ নোট ছেঁড়া ও ময়লা। দোকান-বাজার ও গণপরিবহণে এই ধরনের নোট নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা বা যাত্রীরা উভয়ই সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এবং ভারত সরকারের কাছে একান্ত অনুরোধ, এই ধরনের পুরনো নোটগুলির বদলে দশ ও কুড়ি টাকার কয়েন পূর্ণ মাত্রায় প্রচলন করা হোক।
সুমিতা হালদার, কলকাতা-৩৪