জর্জ ফ্লয়েড (৪৬), মিনিয়াপোলিস, মে ২০২০। মইদুল ইসলাম মিদ্যা (৩২), কলকাতা, ফেব্রুয়ারি ২০২১। আনন্দ বর্মন (১৮), শীতলখুচি, এপ্রিল ২০২১। এই মানুষগুলির অকালমৃত্যুর স্থান এবং কাল আলাদা হলেও, একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাঁরা কেউ নিশ্বাস নিতে চেয়েছিলেন, কেউ বা বেঁচে থাকার জন্যে কাজ চেয়েছিলেন, আর কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চেয়েছিলেন। এই সব চাওয়া কি একটি গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এক জন নাগরিকের ন্যূনতম অধিকার নয়? গণতন্ত্রের বয়স যেমনই হোক না কেন, প্রান্তিক মানুষদের অধিকারের দাবির প্রতি রাষ্ট্রের অবস্থান একই রকম। বাজার আজ ক্রমশই কল্যাণমুখী রাষ্ট্রকেও কুক্ষিগত করছে। বাজারের মতো রাষ্ট্রও আজ নাগরিককে ক্রয়ক্ষমতা দিয়ে বিচার করে। আর্থিক বা সামাজিক প্রতিপত্তি নাগরিকের অধিকারের মানদণ্ড হয়ে উঠছে। কিন্তু এই প্রতিপত্তির বৃত্তের বাইরে যে নাগরিকরা আছেন, তাঁদের খাদ্য, শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের অধিকার কি রাষ্ট্র সুরক্ষিত করতে পেরেছে? মেনে নেওয়া এবং মানিয়ে চলাতেই সেই সব নাগরিকের হয়তো প্রাণটুকু সুরক্ষিত হয়। কিন্তু বাঁচার মতো জীবন কি মেলে?
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় এক জন নাগরিককে যতটা সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল হতে হয় সহনাগরিক এবং রাষ্ট্রের প্রতি, ততোধিক সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল হতে হয় রাষ্ট্রকে তার নাগরিকদের প্রতি। তাই রাষ্ট্রের ক্ষমতার প্রয়োগে ঘটে-যাওয়া এই অকালমৃত্যুগুলি নাগরিককে সন্দিহান করে তোলে রাষ্ট্রের প্রতি।
কেন রাষ্ট্র এই সব অকালমৃত্যু এখনও এড়াতে পারে না? তা কি কিছু মানুষকে ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে পৌঁছনোর তাগিদে?
প্রসেনজিৎ সরকার
পেনসিলভ্যানিয়া, আমেরিকা
আশাকর্মীরা?
বর্তমানে শুরু হয়েছে কোভিড-১৯’এর দ্বিতীয় দফার আক্রমণ, যা প্রথম দফার চেয়ে আরও ভয়ঙ্কর। চিকিৎসা পরিষেবার ‘ফ্রন্টলাইনার’ হিসেবে আশাকর্মীরা আবারও আতঙ্কের প্রহর গুনছেন। গত বছরের মতো এ বারেও সুরক্ষা, নিরাপত্তা ছাড়াই তাঁদের পরিষেবা দিতে হচ্ছে। সমস্যার কথা সরকারকে জানিয়েও লাভ হয়নি। বহু ক্ষেত্রে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। এ ভাবে কাজ করতে গিয়ে আশাকর্মীরা দলে দলে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।
যে কর্মীরা ১২-১৪ ঘণ্টা শ্রম দিচ্ছেন, তাঁদের নিজের জীবনরক্ষার বা আর্থিক সুরক্ষার দায়িত্ব কি কোনও সরকারের নেই? গত বার রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল, স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হলে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। বছর ঘুরে গেল, আশারা এখনও প্রায় কেউই এ টাকা পেলেন না। এই না-পাওয়ার তালিকা তাঁদের অনেক লম্বা। প্রতিটি বাড়তি কাজের জন্য টাকা পাওয়ার অর্ডার থাকলেও, তাঁদের অনুদান না দেওয়াই সরকারি অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এঁরা স্বাস্থ্যকর্মী হলেও, এ বার ভোটে কোথাও কোথাও দু’টি কেন্দ্রেও তাঁদের ডিউটি করতে হয়েছে। সব ভোটকর্মী টাকা সঙ্গে সঙ্গেই পেয়ে গেলেন, কিন্তু বহু আশাকর্মী এখনও বঞ্চিত। ন্যায্য পাওনা দাবি করলেও তা সহজে উপেক্ষিত হচ্ছে। তাই মনে প্রশ্ন জাগে, অভাবটা কি শুধু টাকার? সাধারণ মানুষের শ্রমের মূল্য তো বটেই, জীবনের মূল্যও সরকারের কাছে আছে কি?
ইসমত আরা খাতুন
পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়ন
সুরক্ষা
ডাক্তার-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী, যাঁরা এই করোনা অতিমারির কালে একেবারে প্রথম সারিতে থেকে দিনরাত আর্ত মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন এবং কাজের শেষে ক্লান্ত দেহে নিজের পরিবার পরিজনের কাছে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরকেও জরুরি ভিত্তিতে টিকা প্রদান করা হোক। এক জন চিকিৎসক হিসেবে বুঝি, আমাদের পরিজনরাও সমান ভাবে সংক্রমণের আশঙ্কার শিকার।
বিকাশ বিশ্বাস
রহড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
হোম সেন্টার
‘নিজ স্কুলে ১৫ জুনই শুরু উচ্চ মাধ্যমিক’ (১-৫) করোনাকালে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিধাগ্রস্ত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একটি নির্দিষ্ট নিয়মে পড়াশোনা করতে উৎসাহিত করবে। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ে সরকার কী ভাবছে, সেটিও দ্রুত পরিষ্কার হওয়া দরকার। অন্যথায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত বোধ করবে। হোম সেন্টার হলেও পরীক্ষা পরিচালনা ও নজরদারির জন্য অন্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা বা কর্মীদের নিযুক্ত করা উচিত। তা না হলে করোনার হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য এক ধরনের শত্রুতার পরিবেশ তৈরি হয়ে যাবে। পেশাগত জীবনের ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার। এ ক্ষেত্রে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে নম্বর তোলার হিড়িকে অবৈধ উপায় অবলম্বন ও তার প্রতিরোধ— এই দুইয়ের মাঝখানে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। পরীক্ষা পরিচালনা ও নজরদারির দায়িত্ব পালনের সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের নিজের বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যুক্ত থাকলে তাঁরা পড়বেন উভয় সঙ্কটে। এ ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল ভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরিচালনার জন্য হোম সেন্টারের নিয়মাবলি তাড়াতাড়ি জানানো হোক।
তন্ময় মণ্ডল
গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা
দায়ী
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এই মর্মান্তিক রূপ নেওয়ার জন্য দায়ী কে? দায়ী প্রত্যেক রাজনীতিবিদ, যাঁরা সক্রিয় ভাবে রাজনৈতিক প্রচারের মাধ্যমে করোনা ছড়াতে সাহায্য করেছেন। দায়ী প্রতিটি টিভি চ্যানেল, যারা অতিমারিকে নিয়ন্ত্রণের প্রচারের চেয়ে রাজনৈতিক দলের প্রচারকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। দায়ী এ দেশের ধর্মীয় সংস্থাগুলো, যারা অতিমারিতে ধর্মীয় সমাবেশ করেছে। কৃষক সংস্থাগুলো লাগাতার সভা-সমাবেশ, ধর্না চালিয়ে গিয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন মাস্ক পরতে বলা, দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের বিচারব্যবস্থা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জনগণের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করা ও সভা-সমিতি স্থগিত রাখার জন্য প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সর্বোপরি আমি দেশের প্রতিটি নাগরিককেও দায়ী করছি, যাঁরা নাগরিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।
অসীম চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৬৪
লুপ্তপ্রায়
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৫০তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে জানাই, বসিরহাট থানার দক্ষিণ বাগুন্ডি গ্রামে, ইছামতীর ধারে (খুলনা জেলার উল্টো দিকে) ছিল মুক্তিসেনাদের সদর দফতর। এখানে বহু বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের স্মৃতি বিজড়িত একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভারতের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসেও এই দক্ষিণ বাগুন্ডি গ্রামের অবদান রয়েছে। এই গ্রামে ছিল নীলকরদের কুঠি। সাহেবরা জলপথে মাইল দুই দক্ষিণে টাকির জমিদার বাড়ির আসরে যেত। নীলকরদের কুঠি ইটভাটার তলায় চাপা পড়েছে।
খগেন্দ্রনাথ অধিকারী
টাকি, উত্তর ২৪ পরগনা
আগুন দাম
রমজান মাস এলেই আনাজপাতি এবং ফলের দাম দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ৩৫ টাকা কিলোগ্রামের শসা ৮০ টাকা, ৩০ টাকার লঙ্কা ৭০ টাকা, ১৫ টাকার তরমুজ ৩৫ টাকা। প্রতিটি জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। দ্রুত ইফতার সামগ্রীর দাম স্বাভাবিক করা হোক।
রহমতুল্লাহ
সাগরদিঘি, মুর্শিদাবাদ