ছোটবেলা থেকেই পড়ে এসেছি, জলের আর এক নাম জীবন। কিন্তু কখনও নিজের অজানতে, কখনও আবার গুরুত্বহীন কারণে আমরা জলাশয়ের উপর অবিচার-অনাচার করে চলেছি। জলাশয় সংরক্ষণ না করলে জল সংরক্ষণ অসম্ভব। এখনও শহর থেকে শহরতলিতে এক বা একাধিক আধমরা পুকুর দেখা যায়। ওই সব জলাশয়ের মালিক কায়দা করে, সকলের ব্যবহৃত পুকুরে নিজেই যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা ফেলতে থাকেন। তাঁর দেখাদেখি তখন প্রতিবেশীরাও ময়লা ফেলতে শুরু করেন সেখানে। মালিক দেখেও দেখেন না। আসলে তিনিও চান, আবর্জনাময় পচা পুকুর মানুষের ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠুক। তা হলে, বোজানোর কাজটা সহজ হবে। এক দিকে পুকুর বুজতে থাকে, অন্য দিকে এলাকার কেষ্টবিষ্টুদের বাগে আনা থেকে শুরু করে জমির চরিত্রবদল— সবই পয়সার জোরে হয়ে যায়। পুকুর বোজানো থেকে নদী দখল— কী না হয় এ দেশে। আশার কথা, বেশ কিছু মানুষ, সংগঠন এর বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। আমাদের নিজেদের যেমন সজাগ হতে হবে, অন্যদেরও সতর্ক করতে হবে— নদী-জলাশয়ে আবর্জনা নিক্ষেপ নয়। রাস্তাঘাটে জল অপচয় হতে দেখলেই করতে হবে প্রতিবাদ। সাধারণ মানুষ ও সরকারকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এ কাজে ব্রতী হতে হবে। আসন্ন উৎসবের দিনগুলিতে, পূজামণ্ডপ ও জনবহুল স্থানে জলাশয় ও জল সংরক্ষণের ফেস্টুনও লাগানো দরকার।
স্বপন কুমার ঘোষ
মধ্য ঝোড়হাট, হাওড়া
উৎসবে সাবধান
‘কোভিড আশঙ্কা শহরে’ (২৪-৯) সংবাদের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। দেশের এবং রাজ্যের করোনা সংক্রমণের রেখচিত্র কিছুটা নিম্নমুখী থাকায় কোভিড বিধি শিথিল হয়েছে। কিন্তু আশঙ্কা যায়নি।
‘মা’ এসেছেন। কিন্তু শিউলির গন্ধে এখনও মিশে রয়েছে স্যানিটাইজ়ারের বাষ্প। উৎসবে কোভিড বিধির সামান্যতম শৈথিল্য দেখা দিলে পরিস্থিতির অবনতি যে ঘটবে না, কে বলতে পারে? কেরলের ‘ওনাম’ উৎসব থেকে যেন ঠেকে শিক্ষা লাভ করি। গত বছর কেরল কোভিড লড়াইয়ে সাফল্যের নজির গড়লেও কিছু দিন আগে তাদের উৎসবের পর এক ধাক্কায় ঊর্ধমুখী হয় করোনা গ্রাফ। বাধ্যতামূলক কিছু নিয়ম মান্য করলে পুজোতে যে সংক্রমণ এড়ানো যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছে মহারাষ্ট্রের গণেশ চতুর্থী। জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে রেখে করোনা কালের তৃতীয় ঢেউকে আরব সাগরের তীরে আছড়ে পড়তে দেননি সিদ্ধিদাতা।
ভ্যাকসিন পেয়ে যাওয়ার অতি উৎসাহে আমরা পুজোতে আড়ম্বর এবং উত্তেজনা বাড়ানোর জন্ম যেন না দিই। ভিড় এড়ানো একান্ত বাঞ্ছনীয়। মাস্ক পরতেই হবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত মাস্ক পকেটে থাক। সচেষ্ট হতে হবে পরিবারের ছোট সদস্যদের মণ্ডপ-বিমুখ করতে। সকাল সকাল দর্শন করতে পারলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্নান করা যায়। সাবধানতা একমাত্র সম্বল। উৎসব যেন করোনাকে অতি উৎসাহিত না করে।
সুব্রত পাল
শালবনি, বাঁকুড়া
কম সুদে
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর আর গাঁধী-র মতে, কম সুদে মানিয়ে নিতে হবে প্রবীণদের। আর, ঝুঁকিপূর্ণ লগ্নির দিকে এগোতে হবে। ইঙ্গিত দিচ্ছেন, আয় বাড়াতে মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডের রাস্তা ধরার জন্য প্রস্তুত হতে হবে প্রবীণ নাগরিকদের। যাঁরা সারা জীবন দেশ গড়ার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে শেষ জীবনের পুঁজি ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসে রেখে তার সুদে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের অনাহারে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়ার রাস্তা বাতলে দিচ্ছেন গাঁধীমশাই! সাধু সাবধান।
প্রবীরেন্দু মণ্ডল
দাঁইহাট, পূর্ব বর্ধমান
প্ল্যাটফর্মে বগি
হাওড়া থেকে ধানবাদ যাওয়ার ট্রেন সাবেক ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস’ বর্তমানে স্পেশাল ট্রেন হিসাবে চালানো হচ্ছে। সংরক্ষিত আসন ছাড়া যাত্রা নিষিদ্ধ। ট্রেনটি হাওড়ার পরেই শেওড়াফুলি জংশনে দাঁড়ায়। কিন্তু এখানে যে বগিতে সংরক্ষিত
আসনের টিকিট দেওয়া হয়, সেই বগিটি থাকে প্ল্যাটফর্ম শেষ হওয়ার অনেক পরে। এতে মহিলা, বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষদের গাড়িতে উঠতে খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় রেল আধিকারিককে অবগত করাও হয়েছে। কিন্তু তার পরেও এই সমস্যা রয়েছে। প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়ানো সম্ভব না হলে সংরক্ষিত আসনের বগিটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে রাখার ব্যবস্থা করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সোমেশ সরকার
শেওড়াফুলি, হুগলি
খারাপ রাস্তা
কোভিড বিধির জেরে এখনও এ রাজ্যে লোকাল ট্রেন চলাচলে অনুমতি দেওয়া হয়নি। কাজকর্মের তাগিদে বাসের উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে। মহেশতলা পুরসভার অন্তর্গত বাটা মোড় থেকে জিঞ্জিরা বাজার এবং হাইড রোডের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, বলার নয়। এই সব রাস্তায় রয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত, যা গাড়ি চলাচলের জন্য উপযুক্ত নয়। এক বার কলকাতা যাওয়ার সময় ডাকঘরের কাছে একটি বড় গর্তে আমাদের মিনিবাস এমন ভাবে পড়ল যে, আর একটু হলেই উল্টে যেত। যাত্রীরা বাস থেকে নেমে টানাহেঁচড়া করে বাসটিকে গর্ত থেকে তোলেন। এই ভাবে বাসগুলিও তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ, এই রুট এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। অবিলম্বে এই রাস্তা না সারাই হলে ভবিষ্যতে অনেক বড় বিপদ ঘটতে পারে।
স্নেহাশীষ পাল
সারেঙ্গা, বাঁকুড়া
মদ্যপান জরুরি?
‘চোলাই রুখতে মহুয়া-গন্ধের নয়া মদ রাজ্যে’ (২০-৯) শীর্ষক সংবাদে জানা গেল, বাজারে মহুয়া গন্ধযুক্ত চোলাইয়ের রমরমায় এক দিকে যেমন জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে, সেই সঙ্গে সরকারের প্রাপ্য রাজস্বেরও ক্ষতি করছে চোলাই মদ। এই দ্বিমুখী ক্ষতির মোকাবিলায় তাই রাজ্যের আবগারি দফতর সস্তায় মহুয়ার গন্ধযুক্ত নতুন দেশি মদ বাজারে আনার ব্যবস্থা করছে। দেরিতে হলেও উদ্যোগটি ভাল!
কিন্তু, “...শিক্ষিত-দলের মধ্যে সুরাপান নিবারণের জন্য ফার্স্ট বুক প্রণেতা প্যারিচরণ সরকার যে চেষ্টা করিয়াছিলেন, সেই জন্য তিনি অমর কীর্তি লাভ করিয়াছিলেন। এতদর্থে ১৮৬৩ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি একটি সুরাপান-নিবারণী সভা স্থাপন করেন। এই সভা হইতে ইংরাজিতে ‘ওয়েল উইসার’ ও বাংলাতে ‘হিত-সাধক’ নামে মাসিক পত্রিকা বাহির হইত; তাহাতে সুরাপানের অনিষ্টকারিতা বিশেষরূপে প্রতিবাদিত হইত। তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশবচন্দ্র সেন প্রভৃতি বিশিষ্ট ব্যক্তিদিগকে এই কার্য্যের সহায় করিয়া লইয়াছিলেন। বলিতে কি তিনিই আমাদিগকে সুরাপানের বিরোধী করিয়া রাখিয়া গিয়াছেন”—জানতে ইচ্ছা করে, প্যারিচরণ সরকার সম্পর্কে শিবনাথ শাস্ত্রীর এই প্রশস্তির বর্তমান প্রজন্মের কাছে কি কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই?
প্রসন্নকুমার কোলে
শ্রীরামপুর, হুগলি