— ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ কলকাতার গড়চা রোডের বাসিন্দা। গত চার-পাঁচ বছর ধরে এলাকায় অবস্থিত একটি শতাব্দীপ্রাচীন পুকুর-সমেত বাগানে একাধিক অবাঙালি প্রোমোটার মিলে ওই পুকুর বুজিয়ে এবং প্রায় ৩০টি বড় গাছ কেটে একাধিক নির্মাণ করছে। এর ফলে আমাদের বাড়ির সামনের ছোট রাস্তা দিয়ে বড় বড় লরি, কংক্রিট মিক্সারের গাড়ি আর মাটি কাটার গাড়ি অনবরত যাতায়াত করছে, বিশেষত রাতের বেলায়। এই সব গাড়ি থেকে অত্যধিক পরিমাণে ডিজ়েলের ধোঁয়া আর রাস্তার ধুলো ওড়ার ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অঞ্চলের পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে মারাত্মক। রাত-দিন বিকট আওয়াজে আশপাশের লোকেদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। সপ্তাহের বাকি দিন তো বটেই, রবিবারও এদের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই নেই।
এই সমস্যা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলা হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও চুপ করে আছে। এই প্রোমোটাররা স্থানীয় বাসিন্দাদের ধর্তব্যের মধ্যে আনে না। স্থানীয় বাসিন্দারাও এদের টাকা আর পেশিশক্তির কাছে অসহায়। এর কি কোনও সুরাহা নেই?
অমিতেন্দ্র গুহ, কলকাতা-১৯
বিলুপ্তির পথে
‘অনাদরে বিপন্ন এশিয়াটিক সোসাইটির লাখো প্রাচীন বই’ (১৮-২) পড়ে জানতে পারলাম, অনিয়মিত পর্যালোচনা ও দেখভালের অভাবে পঞ্চত্বপ্রাপ্তি হওয়ার পথে কারেন্সি বিল্ডিংয়ে এশিয়াটিক সোসাইটি-র সংগ্রহের লক্ষাধিক গ্রন্থ। এ পোড়া দেশে এটি কোনও নতুন বিষয় নয়। বইয়ের রক্ষণাবেক্ষণ ও স্বাস্থ্যরক্ষা তো এশিয়াটিক সোসাইটি ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রাথমিক কাজের মধ্যে পড়ে। এই অবস্থার জন্য ‘দায়ী’ কে, সেই অনুসন্ধান করে হয়তো লাভ নেই। রোগটি মানসিকতার। তথ্য ও জ্ঞান মৌখিক মাধ্যমে পরম্পরাগত ভাবে সঞ্চারিত হয় এ কথা যেমন সত্য, তেমনই তাদের সংহত রূপ যে গ্রন্থিত হয় দু’মলাটে— এও এক সত্য। তাই একটি গ্রন্থ কেবল গ্রন্থ নয়, তাতে বিধৃত থাকে একটি সময়, সভ্যতা, অতীতও। আর, অতীত যে এক পরম ঐশ্বর্য এবং তার প্রকৃত সংরক্ষণ যে বর্তমানের সম্পদে সতত নতুন মণি-মাণিক্য যুক্ত করতেই থাকে— এই চেতন, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এ দেশে আজও প্রোথিত হয়নি।
কারেন্সি বিল্ডিংয়ে বইগুলির পুনরুজ্জীবনের জন্য সর্বস্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশু প্রয়োজন। কিন্তু একই সঙ্গে জরুরি অতীত ঐতিহ্য সম্পর্কে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি। অতীতের সংরক্ষণে অবহেলা থাকলে এক দিন বর্তমানও যে অতীতের গর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়ে সেই অবহেলার শিকার হবে— তা বিস্মৃত হওয়া আত্মঘাতের সমতুল।
নন্দগোপাল পাত্র, সটিলাপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
এত্তা জঞ্জাল
কিছু দিন আগে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের অপরিচ্ছন্নতা বিষয়ে ‘মেডিক্যালে নজর কর্তাদের, অপরিচ্ছন্নতার পুরনো ছবিই বাকি হাসপাতালে’ (৭-২) শীর্ষক সংবাদ ও ছবি প্রকাশিত হয়েছে এই সংবাদপত্রে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জানাই, নীলরতন সরকার হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ওয়র্ডের শৌচালয়গুলোর অবস্থা ব্যবহারের অযোগ্য। অথচ ঐতিহ্যশালী এই হাসপাতালে প্রতি দিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগী আসেন। পরিষেবা ভাল হলে বহু মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে ছুটবেন না।
উৎপল দত্ত, কলকাতা-১৩৬
বদলির নির্দেশ
২০২১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট জেলায় যথেষ্ট সংখ্যক শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে রাজ্য স্তরের কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বহু দূরবর্তী জেলায় নিযুক্ত করা হয়। বর্তমানে ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকা বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তানকে ছেড়ে দূরবর্তী স্থানে থাকার কারণে নানাবিধ সামাজিক ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার। এমতাবস্থায় সম্প্রতি তাঁরা দূরবর্তী প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষা দফতরের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি-র নিকট শ্বেতপত্র প্রদান করেন।
স্কুল শিক্ষা দফতরের বদলি সংক্রান্ত পোর্টাল ‘উৎসশ্রী’ বন্ধ থাকার কারণে এই শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁদের কর্মজীবনের তিন বৎসর অতিক্রান্ত করেও এত দিন পর্যন্ত বদলির আবেদন করার সুযোগ পর্যন্ত পাননি। মুখ্যমন্ত্রী ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি সরস্বতী পুজোর প্রাক্কালে টুইট করে ঘোষণা করেন যে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিজ জেলায় বদলির সুযোগ দেওয়া হবে। পরবর্তী কালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের মাধ্যমে বদলির আদেশ নতুন নিয়োগের পূর্বে দেওয়া হবে, যাতে বিদ্যালয়ে শূন্যপদ সৃষ্টি না হয়। অথচ, পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও বদলির কোনও আবেদন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক (এনসিএফ) ২০০৫-এর সুপারিশ অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় নিয়োগ শিশু-শিক্ষার ক্ষেত্রে অনুকূল। বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে পুনরায় বদলি সংক্রান্ত কোনও নির্দেশনামা জারি করলে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁদের দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আলাপন মহাকুল, জলপাইগুড়ি
নিয়োগ বন্ধ
নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ স্তরে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল ২০১৮ সালে, যার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। কিন্তু দীর্ঘ সাত বছর কোনও শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হওয়ায় বি এড (ব্যাচেলর অব এডুকেশন) ডিগ্রি ধারণকারী চাকরিপ্রার্থীরা আজ হতাশাগ্রস্ত। বাবা সাহেব আম্বেডকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটি-র অন্তর্ভুক্ত ৬২২টি বি এড কলেজ থেকে বছরে প্রায় ৫০,০০০ ছাত্রছাত্রী পাশ করছে। সাম্প্রতিক কালে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হলেও বি এড কলেজগুলিতে মোটা টাকায় ভর্তি প্রক্রিয়া চালু আছে। এর ফলে লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী ডিগ্রি অর্জন করেও বেকারত্বের আগুনে জ্বলছে। সরকারের কাছে তাই বিনীত আবেদন, এই সব বি এড কলেজ অবিলম্বে বন্ধ করা হোক, নয়তো স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট (এসএলএসটি)-র মাধ্যমে প্রতি বছর শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বি এড প্রার্থীদের নিয়োগ করা হোক।
শাহেনুল আবেদিন, এলাহিগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ
আবর্জনাময়
বেশ কয়েক বছর ধরে দমদম মেট্রো স্টেশন থেকে ১নং লাইনের ধার ধরে ৩০এ বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত যে রাস্তাটি প্রসারিত হয়েছে, তার দু’ধারে আশপাশের অঞ্চলের যাবতীয় নোংরা-আবর্জনা নিত্যদিন প্রচুর পরিমাণে জড়ো করা হচ্ছে। বহু মানুষ আবার সাইকেল, মোটর সাইকেল বা গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগও করেন। সব মিলিয়ে জায়গাটি অসম্ভব দুর্গন্ধময়। এতে কলকাতা পুরসভার দু’নম্বর ওয়র্ডের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের যে প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে, তা বলা বাহুল্য। তা ছাড়া, এই রাস্তা দিয়ে প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত, বিশেষ করে দমদম রেল স্টেশন এবং মেট্রো স্টেশন ব্যবহার করার জন্য। পুরসভা মাঝেমাঝে নোংরা আবর্জনা গাড়ি করে তুলে নিয়ে যায় বটে, কিন্তু তা খুবই অনিয়মিত। এলাকার বাসিন্দা ও পথচারীদের স্বার্থে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তাটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখার বিশেষ অনুরোধ করছি।
শ্যামল দাস, কলকাতা-৫০