‘বাজল সানাই’ (আনন্দ প্লাস, ১৪-১২) শীর্ষক সংবাদে পড়লাম সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায় সাত পাকে বাঁধা পড়তে চলেছেন। সেখানে “ত্বরিতার কথায়, বাঙালি মতে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে”— কথাটা পড়ে ধন্দে পড়ে গিয়েছি। নামের পদবি তো চট্টোপাধ্যায়! যাঁকে বিয়ে করছেন, তিনিও স্বনামধন্য অভিনেতা তরুণ কুমারের নাতি! তরুণ কুমার তো খাঁটি বাঙালি ছিলেন বলেই জানি। আরও জানা গেল, তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানে সঙ্গীত, মেহেন্দি ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হবে। এই আচারগুলি কবে থেকে বাঙালিদের হল? আমাদের বাঙালিদের আচার-অনুষ্ঠানে অবাঙালি সংস্কৃতির শিকড় আস্তে আস্তে গভীরে প্রবেশ করছে। প্রশ্ন জাগে, বাঙালিদের উৎসব অনুষ্ঠানের রীতিনীতির সংখ্যা কি খুব কম?
আরও অসহ্য লাগে, আজকাল দূরদর্শনে বাংলা ধারাবাহিকে হিন্দি গান ও বিয়ের অনুষ্ঠানে মেহেন্দি আর সঙ্গীত দেখে। বাংলা সংস্কৃতির আজ জগাখিচুড়ি অবস্থা। বাংলা সংস্কৃতিকে ধরে রাখার দায় আমাদের, অর্থাৎ বাঙালিদেরই। এ ক্ষেত্রে, প্রতিবেশী দেশ, বাংলাদেশকে দেখে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
পদ্মা দে, মিঠাপুকুর, বর্ধমান
সোনার মূল্য
বর্তমানে সোনার আকাশছোঁয়া দামের খবর ক্রেতামাত্রেই জানেন। সরকারি নির্দেশে সোনার গুণমান নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের জন্য কিছু আবশ্যিক শর্তাবলির খবর টিভিতে শোনানো হয়েছিল। যেমন— গয়নার উপর বিআইএস লোগো, ফাইননেস সিম্বল বা ক্যারাট, হলমার্ক সেন্টার-এর লোগো এবং শপ সেন্টার-এর লোগো। এই চারটি চিহ্ন দিয়েই গোল্ড লাইসেন্স হোল্ডারদের গয়না বিক্রি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
তা সত্ত্বেও, উপভোক্তা বা ক্রেতা এই আইনে অনেকটাই উপেক্ষিত। কারণ, হলমার্ক চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও দেখা গিয়েছে, দোকান মালিক সব সময়ই কিছুটা ওজন বাদ দিয়ে থাকেন গয়নাটি তাঁর দোকানের নয় বলে। এবং কখনও অর্থের প্রয়োজনে কাস্টমার তাঁর স্বর্ণ সম্পদটুকু বিক্রি করার সময় সোনার ন্যায্য প্রাপ্য মূল্য থেকে কিছুটা বঞ্চিত হন বা কম মূল্য পেয়ে থাকেন একাধিক অজুহাতে।
তাই সোনার গয়না অ্যাসেট হিসেবে কিনতে যে মূল্য দিতে হয়, বিক্রির ক্ষেত্রেও মজুরি এবং ট্যাক্স বাদ দিয়ে সোনার সঠিক মূল্য ফেরত পেতে সরকারি আইনের প্রয়োগ দরকার উপভোক্তা বা সাধারণ মানুষের স্বার্থে।
রীনা আইচ পণ্ডিত, বেলগাছিয়া, কলকাতা
গ্যাসের দাম
গ্যাসের দাম ৫০ টাকা বৃদ্ধির খবর (‘এক লাফে ৫০ টাকা বাড়ল রান্নার গ্যাসের দাম’, ৩-১২) সংবাদপত্রের পাতায় পড়ে কিছুটা আঁচ পেয়েছিলাম। উত্তাপ অনুভব করলাম গ্যাস বুকিংয়ের পর বর্ধিত টাকা গুনতে গিয়ে। ভেবেছিলাম, বর্ধিত টাকা ভর্তুকি হিসেবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেরত পাওয়া যাবে। কিন্তু তা হয়নি। এখন শুনছি, আবারও পঞ্চাশ টাকা বেশি গুনতে হবে (‘গ্যাসের দাম চড়ল আরও ৫০ টাকা’, ১৫-১২)। এ ক্ষেত্রেও বর্ধিত ৫০ টাকা ভর্তুকি হিসেবে ফেরত পাব কি না, সংশয় থেকে যাচ্ছে। করোনা কালে আমজনতা যখন কাজ হারিয়ে তাঁদের সংসার চালাতেই হাঁপিয়ে যাচ্ছেন, তখন এই ভাবে একই মাসে দু’বার ৫০ টাকা করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
পরেশনাথ মণ্ডল, বাতাসপুর, বীরভূম
জেলায় বইমেলা
‘সব জেলাতেই বইমেলা করে প্রচারে নবান্ন’ (১৫-১২) সংবাদ প্রসঙ্গে কিছু কথা। জেলায় জেলায় বইমেলা করতে সরকারের কোষাগার থেকে ব্যয় হবে ১৩ কোটি টাকা। জেলা বইমেলা করার মূল উদ্দেশ্য ছিল, মানুষকে বেশি করে বইমুখী করা। আগে এই মেলার জন্য ব্যয় হত ৭০-৭৫ লক্ষ টাকা। এ বার এক লাফে সেই বরাদ্দ অনেক গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাতে মানুষ কতটা বইমুখী হবেন, সেটাই দেখার।
এ দিকে গ্রন্থাগারগুলোতে ৭৫ শতাংশ কর্মীর অভাবে সেগুলি বন্ধ হওয়ার উপক্রম। পাঠকের গ্রন্থাগারে গিয়ে পাঠ ও বই লেনদেন বন্ধ হয়ে আছে কর্মীর অভাবে। তা হলে পাঠক কী করে বইমুখী হবেন? ১৩ কোটি টাকা দিয়ে বরং গ্রন্থাগারের উন্নয়ন, বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি ও অস্থায়ী কর্মী দিয়ে গ্রন্থাগার খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে পারত সরকার।
আবার করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি উদ্যোগে বইমেলা, বিভিন্ন উৎসব করা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা আলোচনা সাপেক্ষ। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পুরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে বইমেলা শুরু হয়েছে। সেখানে দেখছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনও বালাই নেই। মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন একে অপরের ঘাড়ে। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হচ্ছে। ফলে মানুষের সমাগম আরও বাড়ছে। মফস্সলের বইমেলাতে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শক টানার অন্যতম হাতিয়ার। সুতরাং, জেলা বইমেলাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাদ দেওয়ার যে ফরমান সরকার জারি করেছে, তাতে বইমেলাতে লোক টানা একটা সমস্যা হবে।
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল, কোন্নগর, হুগলি
রাস্তায় গরু
হুগলি জেলার সিঙ্গুর এলাকায় জনবহুল বাজারের মধ্যে অবস্থিত স্বর্ণপ্রভা মল্লিক রোডের উপর প্রায়ই দড়ি না-থাকা অবস্থায় গরু ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে, তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, এমনকি ছোট ছোট দুর্ঘটনাও ঘটছে। শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় ছোট-বড় গাড়ির ধাক্কায় অবলা প্রাণীগুলির দেহে অল্প-বিস্তর আঘাতও লাগছে। যাঁদের গরু, তাঁদের এই বিষয়ে দায়িত্বশীল হতে অনুরোধ জানাই। এ ছাড়াও যানজট এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য আবেদন জানাই।
তাপস দাস, সিঙ্গুর, হুগলি
এটিএম চাই
হাওড়া জেলার ডোমজুড় ব্লকের অধীন বিপ্রন্নপাড়া বেগড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। বর্তমানে এটি গ্রামীণ বাজার এলাকায় পরিণত হয়েছে। প্রত্যহ সকালে সব্জি ও মাছের বাজার বসায় গ্রামের মানুষদের খুবই সুবিধা হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য ছোট-বড় দোকান ও দু’টি অনুষ্ঠান হলও রয়েছে। জনবসতি বেশি হওয়ায় সকাল-সন্ধ্যায় বহু মানুষের সমাগম হয়। স্থানীয় মানুষদের দাবি, এই জায়গায় একটি এটিএম থাকলে তাঁদের খুব সুবিধা হত। এখন এটিএম ব্যবহার করতে হলে এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। তাই প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, বিপ্রন্নপাড়ায় একটি এটিএম চালু করা হোক।
অপূর্বলাল নস্কর, ভান্ডারদহ, হাওড়া
স্বাস্থ্যবিধি
গত ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা, পুরসভা এবং িমউনিসিপ্যালিটি এলাকায় সরকারি বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান শিবির ‘দুয়ারে সরকার’-এর ক্যাম্প হচ্ছে। সমস্ত এলাকাতেই মোট চার দফায় চারটি ক্যাম্প হওয়ার কথা। প্রথম দিন থেকেই প্রতিটা শিবিরে জনতার ঢল নেমেছে। অথচ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ অতিমারি সম্পর্কিত সুরক্ষাবিধি মানছেন না। মুখে মাস্ক, হাতে স্যানিটাইজ়ার বা ঘন ঘন হাত ধোয়া তো দূর, মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ববিধিও।
তাই সমগ্র পঞ্চায়েত বা পুর এলাকার জন্য একসঙ্গে শিবির না করে পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে গ্রামসভা ভিত্তিক এবং পুরসভা ও মিউনিসিপ্যালিটির ক্ষেত্রে ওয়ার্ড বা বরো ভিত্তিক শিবির করা হোক।
দীপ্তরাজ সরকার, রানাঘাট, নদিয়া
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।