‘স্টোয়নিস-ঝড়...’ শিরোনামের প্রতিবেদনে ( খেলা, ৬-১০) লেখা হয়েছে ‘মাঁকড়ীয় আউট’ করলেন না অশ্বিন। এই প্রেক্ষিতে বলতে চাই, ‘মাঁকড়ীয় আউট’ কথাটি বললে বিশ্ববরেণ্য অল রাউন্ডার বিনু মাঁকড়কে অপমান করা হয়। এ ব্যাপারে মুখ খুলেছিলেন বিনুর ছেলে রাহুল, যিনি এক সময় রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বইয়ের হয়ে খেলতেন।
১৯৪৭ সালে কুইন্সল্যান্ডের বিরুদ্ধে বল করছিলেন মাঁকড়, ব্যাট করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিল ব্রাউন। ব্রাউন বার বার ক্রিজ় ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, মাঁকড় সতর্ক করছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি কথা না শোনায় মাঁকড় তাঁকে আউট করেন। রাহুলের বক্তব্য, এ ধরনের আউটকে ‘মাঁকড়ীয়’ বা ‘মাঁকড়িং’ বললে বিনু মাঁকড়কে অবমাননা করা হয়। তিনি অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বিল ব্রাউনের সঙ্গে দেখা করে সে দিনের আউট প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে, ব্রাউন তাঁকে বলেন যে, বিনু কোনও অন্যায় করেননি, ওটা আউটই ছিল। যিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অল রাউন্ডার, লর্ডসে একই টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন ও পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন, পঙ্কজ রায়ের সঙ্গে ওপেনিং জুটি বেঁধে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন, তাঁর নামে এই আউট অপমানজনক। বিসিসিআই-এর উচিত, এই আউটকে অন্য কোনও নামকরণ করা। বিনু মাঁকড়ের জন্য আমরা গর্বিত। একটা আউট নিয়ে তাঁর অসম্মান হওয়া উচিত নয়।
অখিল বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা-৮৯
আগুনের নিশ্বাস
‘‘নাম দিয়েছিলেন ‘শিখাময়ী’’ (২৮-১০) নিবন্ধটি পড়ে দু’টি সংযোজন করতে চাই। আচার্য শঙ্করীপ্রসাদ বসু লিখছেন, ‘‘কলকাতার ক্লাসিক থিয়েটারে বক্তৃতার আয়োজন হয়েছে। সভাপতি স্বামী বিবেকানন্দ। বক্তৃতা দেবেন ভগিনী নিবেদিতা। বিষয়: প্লেগ ও কলকাতার ছাত্রসমাজ। ...নিবেদিতা বললেন, ‘প্লেগ নিবারণের ব্যাপারে সাহায্য করবার জন্য, মানুষ বলে নিজেকে মনে করে এমন প্রতিটি মানুষকে আমি ডাক দিচ্ছি। আজ ধর্মের আহ্বান বেজেছে, এসেছে কর্মের আহ্বান। শ্রেষ্ঠ পূজার অর্ঘ্য হল নিজেকে বলি দেওয়া। কলকাতার ছেলেরা! কতজন তোমরা পারো নিজেকে বলি দিতে? কতজন পারো তোমাদের বিশ্বাসকে আগুনের বিশ্বাসে, আগুনের নিঃশ্বাসে পরিণত করতে? এই শহরের এক প্রান্তে ধর্মের শ্রেষ্ঠ আচার্য শ্রীরামকৃষ্ণ থাকতেন। তিনি ব্রাহ্মণ-সন্তান। পাছে কেউ বাধা দেয়, রাত্রে গোপনে চলে যেতেন মেথরদের ঘরে, তাদের নর্দমা-পায়খানা পরিষ্কার করতেন নিজের মাথার চুলে...।’ পরদিন কলকাতা শহর দেখল এক অপূর্ব দৃশ্য। ঝাড়ু-বালতি হাতে এক বিচিত্র ঝাড়ুদার দল। সবাই ভদ্রসন্তান। সম্মুখে রয়েছেন এক শ্বেতাঙ্গিনী।’’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘ভগিনী নিবেদিতা’ প্রবন্ধে নিবেদিতা সম্পর্কে লিখেছিলেন, ‘‘নিজেকে এমন করিয়া সম্পূর্ণ নিবেদন করিয়া দিবার আশ্চর্য শক্তি আর কোনো মানুষে প্রত্যক্ষ করি নাই। সে সম্বন্ধে তাঁহার নিজের মধ্যে যেন কোনো প্রকার বাধাই ছিল না। তাঁহার শরীর, তাঁহার আশৈশব য়ুরোপীয় অভ্যাস, তাঁহার আত্মীয় স্বজনের স্নেহমমতা, তাঁহার স্বদেশীয় সমাজের উপেক্ষা এবং যাহাদের জন্য তিনি প্রাণ সমর্পণ করিয়াছেন তাহাদের ঔদাসীন্য, দুর্বলতা ও ত্যাগস্বীকারের অভাব কিছুতেই তাঁহাকে ফিরাইয়া দিতে পারে নাই।’’
সায়ন তালুকদার
কলকাতা-৯০
তিনি আড়ালে
অধ্যাপক অমলকুমার রায়চৌধুরীর উপর লেখা রাহুল দাশগুপ্তের চমৎকার প্রবন্ধটি পড়লাম (‘কম্পিউটার ব্যবহার করতেন না ছোটোদাদু’, ১১-১০)। ব্ল্যাক হোল নিয়ে গবেষণায় আরও দুই বৈজ্ঞানিকের সঙ্গে রজার পেনরোজ়-এর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তিতে এই বিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিকের নাম আবার শিরোনামে উঠে এল। বিজ্ঞানে তাঁর কত বড় অবদান তা আর এক বার প্রমাণিত হল, যদিও তিনি বরাবরই প্রচারের আলো থেকে দূরে থেকেছেন। যে ‘রিলেটিভিস্টিক কসমোলজি’ গবেষণাপত্রের জন্য তাঁর নাম বিজ্ঞানের জগতে অমর হয়ে আছে, যেটি বিজ্ঞানমহলে ‘রায়চৌধুরী ইকুয়েশন’ নামেই অধিক পরিচিত, সেটি ১৯৫৫ সালের মে মাসে বিজ্ঞানের বিখ্যাত পত্রিকা ফিজ়িক্যাল রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়। অনেক পরে সেই পেপারটি ‘রিলেটিভিস্টিক কসমোলজি ওয়ান’ (২০০৬) নামে বৃহত্তর সঙ্কলনে সম্ভবত পুনঃপ্রকাশিত হয়।
তপন কুমার মুখোপাধ্যায়
সুভাষপল্লি, বর্ধমান
হয়রানি
শেষমেশ নেট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আর মাত্র কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি। এমন অবস্থায় প্রবল হয়রানির মুখে বহু নেট পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা হবে কি না, এই নিয়ে অনেক জটিলতার পরে অবশেষে পরীক্ষা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য নেটের আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-র কাছে আমরা, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা, পরীক্ষার কেন্দ্র বদলের আবেদন করেছিলাম। তার ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীরা যাতে বাড়ির কাছাকাছি নিজের পছন্দমতো সেন্টার নিতে পারে, তার জন্য এনটিএ সেন্টার বদলানোর ব্যবস্থা রেখেছিল।
কিন্তু পরীক্ষার মাত্র কয়েক দিন আগে অ্যাডমিট কার্ড দেখে সবাই অবাক! পছন্দের তালিকায় কোনও পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েনি। উত্তরবঙ্গের অনেক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে দুর্গাপুর, হুগলি, কলকাতা ও হাওড়াতে। বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান জেলার পরীক্ষার্থীদের ঝাড়খণ্ডে। যেখানে এখনও ট্রেন বন্ধ, সেখানে কী ভাবে পৌঁছবে পরীক্ষার্থীরা?
সুকমল দালাল
খণ্ডঘোষ, পূর্ব বর্ধমান
আর এক সাধক
সনাতন পালের লেখা ‘মানবজমিন’ শিরোনামে চিঠির (সম্পাদক সমীপেষু, ১-১১) প্রসঙ্গে বলতে চাই, রামপ্রসাদ সেনের সঙ্গে আর এক জন কালীসাধকের কথা না বললে আলোচনাটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তিনি সাধক কমলাকান্ত ভট্টচার্য। কমলাকান্তের পৈতৃক নিবাস বর্ধমান জেলার কালনা গ্রামে। বাল্য বয়সে তিনি সংস্কৃত টোলে পাঠ নেন। বাল্যকালে পিতৃবিয়োগ হলে তিনি বর্ধমানের খানা জংশনের কাছে চান্না গ্রামে মামাবাড়িতে প্রতিপালিত হন। এখানে বিশালাক্ষী বা বাসুলির মন্দিরে তিনি সিদ্ধিলাভ করেন বলে কথিত আছে।
বর্ধমান মহারাজাধিরাজ তেজচন্দ্র তাঁকে সভাপণ্ডিত করেন ও বর্ধমানের নিকটবর্তী কোটালহাটে একটি বাড়ি তৈরি করে দেন, যেখানে তিনি কালীসাধনা করেন। এই বাড়ি ‘কমলাকান্তের কালীবাড়ি’ বলে বিখ্যাত ও বর্ধমানের এক দর্শনীয় তীর্থস্থান। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বর্ধমানের মহারাজ মাহাতাবচাঁদ বাহাদুর ‘শ্যামাসঙ্গীত’ সঙ্কলন প্রকাশ করেন, যেখানে সাধক কমলাকান্তের সব পদ প্রকাশিত হয়। ‘‘আদর করে হৃদে রাখ আদরিণী শ্যামা মাকে’’— তাঁর বিখ্যাত গানগুলির অন্যতম।
কাঞ্চন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজবাটি, পূর্ব বর্ধমান
মদের পাউচ
‘বিশ টাকার পাউচ প্যাকে দিশি মদ আনছে সরকার’ সংবাদ (১-১১) উদ্বেগের। অতিমারির জেরে চরম আর্থিক সঙ্কটে নুন আনতে পান্তা ফুরোচ্ছে গরিবের, মেয়েরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মদ মানুষের বিবেক, বিবেচনাকে মেরে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ক্ষমতা রাখে সংসার, সমাজকে তছনছ করে দেওয়ার। এমন একটা পরিস্থিতিতে মদ নিষিদ্ধ করা যখন জরুরি ছিল, তখন একে উৎসাহিত করার অর্থ কী? ইদানীং অল্পবয়সি, ছাত্র-ছাত্রীদেরও মদের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। সরকারি বদান্যতায় এ আসক্তি কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, ভাবলে আতঙ্কিত হতে হয়।
জয়শ্রী চক্রবর্তী
সম্পাদিকা, সারা বাংলা পরিচারিকা সমিতি, পশ্চিম মেদিনীপুর
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।