কে যাবে? বিজেপি-র কাছে এখন এটি লাখ টাকার প্রশ্ন
গত ২৯ নভেম্বর আমার পিতার প্রয়াণ ঘটে টালিগঞ্জের বাঙুর হাসপাতালে। সেখানে মৃত্যুর শংসাপত্র আনতে গিয়ে স্তব্ধ হয়ে যাই। ধর্মের জায়গায় লেখা ‘হিন্দু’। আমি জন্মসূত্রে বৌদ্ধ, আমার সংস্কার ও সংস্কৃতি বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত। শংসাপত্রে স্বাক্ষরকারী ডাক্তারবাবু তা মানতে চাননি। এমনটা কি অন্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? শোকের আবহে ধর্ম সম্বন্ধে অবমাননা বেদনা বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়।
অতঃপর চিকিৎসক কার্যত আমার ধর্মের প্রমাণপত্র দাবি করলেন। অকূল পাথারে পড়ে যাই। কখনও শুনিনি কোনও সম্প্রদায়ের নিজস্ব প্রমাণপত্র থাকে, বা তা সঙ্গে নিয়ে কেউ ঘোরাঘুরি করেন। আমার সঙ্গেও তেমন কোনও প্রমাণপত্র ছিল না। সৌভাগ্যক্রমে সঙ্গে সে দিন গেরুয়া বসনধারী আমার সমাজের এক বরেণ্য বৌদ্ধ ভিক্ষু উপস্থিত ছিলেন। তাঁর পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে আপাত নিশ্চিন্ত হয়ে ধর্মস্থানে ‘হিন্দু’ কেটে দিয়ে ডাক্তারবাবু ‘বুদ্ধিস্ট’ কথাটি লিখে দেন। আমি তা গ্ৰহণ করি। বিচিত্র এই দেশে একমাত্র বৌদ্ধদের নিয়েই এই ছেলেখেলা চলে আসছে আবহমানকাল ধরে। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ দেশেএমন ঘটনা সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের
কাছে অত্যন্ত পীড়াদায়ক। নিজস্ব ঘোষণাই আমার ধর্মের প্রমাণ, এই আমার অভিমত। সরকারি হাসপাতালে যে ভাবে ধর্মের প্রমাণ দাবি করা হল, তা নিন্দনীয়।
ইন্দ্রনীল বড়ুয়া, কলকাতা-১৫
বিভ্রান্তি
আমার প্রবীণ নাগরিক মা তাঁর সারা জীবনের সঞ্চয় রেখেছিলেন ইউনাইটেড ব্যাঙ্কে, যা অধুনা পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। সম্প্রতি তাঁর ফিক্সড ডিপোজ়িটটি নতুন ভাবে জমা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে তাঁকে জানানো হয় যে, সংযুক্তিকরণের জন্য আগামী দু’সপ্তাহ টাকা জমা-তোলা ছাড়া কিছুই করা যাবে না। চিকিৎসা বা অন্য জরুরি দরকারে কি গ্রাহক নিজের টাকা তুলতে পারবেন না?
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, সংযুক্তিকরণের ফলে গ্রাহকদের অসুবিধা হবে না। অথচ আচমকা ন্যূনতম ব্যালান্স বেড়ে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। এত বড় মাপের দুটো, তিনটে ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের আগে কি ন্যূনতম প্রস্তুতি দরকার ছিল না?
বনশ্রী দেব, কলকাতা-৫৫
গ্রাহক-বিরোধী
প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরীর প্রতিবেদন ‘বেড়েছে ন্যূনতম জমা, জানেনই না গ্রাহকেরা’ (২০-১২) প্রসঙ্গে দু’-একটি কথা। সংস্কারের নামে গৃহীত প্রতিটি কর্মসূচি গ্রাহকসেবার পরিপন্থী। যেমন সংযুক্তিকরণ, বেসরকারিকরণ, শাখা বন্ধ, লক্ষ লক্ষ শূন্যপদে কর্মচারী নিয়োগ না করা, পরিষেবা ‘আউটসোর্সিং’ করে ব্যাঙ্ক মিত্রদের শোষণ করা, এটিএম গার্ড ছাঁটাই করা ইত্যাদি। বিভিন্ন সময়ে ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি দাবি করেছিল, গ্রাহকের কাছ থেকে পরিষেবা কর নেওয়া যাবে না, ন্যূনতম জমার অঙ্ক বাড়ানো যাবে না, সঞ্চয়ের উপর সুদের হার বাড়াতে হবে। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ করে কী লাভ হল? না অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে, না গ্রাহক পরিষেবার উন্নতি হচ্ছে! প্রায় সব সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের উপর পরিষেবা কর চাপিয়ে দিয়েছে। ফলে নিম্নবিত্ত, পেনশনভোগী মানুষেরা আর ব্যাঙ্কের দরজায় পৌঁছতে পারবেন না। ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের আসল উদ্দেশ্য মার খাচ্ছে। এক দিকে শূন্য ব্যালান্সের প্রচার, অন্য দিকে ন্যূনতম জমা না রাখার জন্য কোনও ব্যাঙ্ক ১৫০ টাকা, কোনও ব্যাঙ্ক ২০০ টাকা প্রতি মাসে কেটে নিচ্ছে। গ্রাহকেরা ঠিক মতো এসএমএস বার্তাও পাচ্ছেন না, অথচ এসএমএস-এর জন্য প্রতি বছর টাকা কাটছে ব্যাঙ্ক। প্রায় প্রতিটি ব্যাঙ্কের শাখায় বোর্ড ঝোলানো ‘প্রিন্টার খারাপ’ বা ‘পাসবই প্রিন্ট হচ্ছে না’। গ্রাহক পরিষেবার এই রকম বেহাল অবস্থা আগে কেউ দেখেছেন, মনে হয় না। এই ভাবে গ্রাহক স্বার্থ ব্যাহত করে ব্যবসা করা অন্যায়, অমানবিক।
দুর্গাশ্রী বসু রায়, হাওড়া
দখলদারি
উচ্চপদস্থ অফিসারদের জন্য রাজ্য সরকারের চাকরির সূত্রে পাওয়া আবাসনগুলির কিছু সমস্যার প্রতি সরকারের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই। চাকরি থেকে অবসরের পর আবাসনের ফ্ল্যাট শর্ত অনুযায়ী খালি করে দেওয়ার কথা। পূর্ববর্তী সরকার খালি করতে বাধ্য করত। কিন্তু বর্তমান সরকার তা না করার ফলে মৃত বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর সন্তানেরা সেখানে বসবাস করছেন। তাঁরা নানা ধরনের ব্যবসায়ে যুক্ত। ফলে মাল পরিবহণের জন্য আবাসনে বাইরের গাড়ির যাতায়াত বাড়তে থাকে। যাঁরা চাকরিসূত্রে বৈধ ভাবে বসবাস করেন, অসুবিধায় পড়েন। অবৈধ বাসিন্দারা আবাসনের সামনের চলাচলের রাস্তার অংশও ‘নিজস্ব’ বলে দাবি করতে শুরু করেন নানা অজুহাতে। গাছ লাগিয়ে বা গাড়ি রেখে। বৈধ এবং অবৈধ, চাকরিরত এবং অবসরপ্রাপ্তের যেন কোনও তফাতই নেই! সরকারি আবাসনে বসবাস করার জন্য বেশ কিছু প্রশাসনিক শর্ত পালন করার কথা। নিয়ম অনুযায়ী অবসরের পর আবাসন থেকে চলে যাওয়ার কথা। অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তির পেনশন-সহ সমস্ত প্রাপ্তি অনুমোদন হয়ে যায় সরকারি ফ্ল্যাট খালি করার প্রমাণপত্র ছাড়াই। এ কেমন প্রশাসন?
রীনা আইচ পণ্ডিত, কলকাতা-৩৭
ভোরের ট্রেন
হুগলি জেলার গুরুত্বপূর্ণ মহকুমা শহর আরামবাগ। অথচ, লকডাউনের পরে লোকাল ট্রেন চালু হলেও এখান থেকে হাওড়া যাওয়ার প্রথম ট্রেন সকাল পৌনে আটটায়। আগে দু’টি ট্রেন আরামবাগ থেকে যথাক্রমে ভোর ৪টা ৫০ মিনিট এবং ৬টা ১৮ মিনিটে ছাড়ত। কিন্তু এখনও ওগুলি চালানো হচ্ছে না, যদিও হাওড়ার দূরত্ব মাত্র ৮২ কিলোমিটার। ফলে কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী এবং সাধারণ মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। গাড়িগুলি দ্রুত চালু হোক।
অরিন্দম ঘোষাল, আরামবাগ, হুগলি
বকেয়া
গত মার্চ থেকে আজ অবধি নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল মেটানো সত্ত্বেও দু’দিন আগে সিইএসই থেকে বার্তা পেলাম, করোনা-কালের বকেয়া টাকা আগামী মাস থেকে বিলের সঙ্গে যোগ করা হবে এবং আগামী ১০ মাসে সমান কিস্তিতে কেটে নেওয়া হবে। অবাক হয়ে গেলাম। এত দিন জানতাম ওই টাকা তাঁদেরই কাটা হবে, যাঁরা সেই সময়ে বিল মেটাননি। আমি তো বিল বাবদ বকেয়া টাকা নির্ধারিত সময়েই অনলাইন জমা করেছিলাম। তা সত্ত্বেও কেন বকেয়া টাকা জমা দিতে হবে?
বিশ্বদীপ কর রায়,কলকাতা-৫৪
শুভেচ্ছার বার্তা
রঙিন খামের মধ্যে গ্রিটিংস কার্ডে ইংরেজি হরফে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ লেখা দেখলেই মন ভরে উঠত। রাত জেগে বন্ধুদের জন্য গ্রিটিংস কার্ড তৈরি করার একটা আলাদা মজা ছিল। নিজের তৈরি করা কার্ড যেন সেরা হয়, চলত এমন এক প্রতিযোগিতা। ডিসেম্বর মাসে গ্রিটিংস কার্ডের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যেত।
আজ ইমেল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ-এর যুগে বদলেছে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর রীতি। নানা অ্যাপের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনও জায়গায় খুব কম সময়ে, কম খরচে, নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। হারিয়ে যেতে বসেছে সেই গ্রিটিংস কার্ড পাঠানোর সংস্কৃতি। আজও মনটা ভরে যায়, যদি খামে ভরা একটা গ্রিটিংস কার্ড পাওয়া যায়, যা খুললেই দু’চোখ মেলে দেখা যাবে প্রিয়জনের লেখা: ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’।