সম্পাদক সমীপেষু: ঝড়ের ঝাপ্টা

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্থ ঘোষের সাক্ষাৎকার (‘উপেক্ষিত জিনিয়াস, এষণা, ১৮-১২) পড়লাম। সত্যেন্দ্রনাথ উপেক্ষিত, কী কারণে যেন খোলাখুলি উদার মানুষটি আমাদের কাছে যথাযথ সম্ভ্রম আদায় করতে পারলেন না।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ০০:১৮
Share:

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্থ ঘোষের সাক্ষাৎকার (‘উপেক্ষিত জিনিয়াস, এষণা, ১৮-১২) পড়লাম। সত্যেন্দ্রনাথ উপেক্ষিত, কী কারণে যেন খোলাখুলি উদার মানুষটি আমাদের কাছে যথাযথ সম্ভ্রম আদায় করতে পারলেন না। সম্ভ্রম পেতে গেলে সামাজিক বিধিনিষেধের পরাকাষ্ঠা মেনে চলতে হয়, অধ্যাপক বসুর জীবন সে পথে কোনও দিনই যায়নি। এটা তাঁর চারিত্রিক সীমাবদ্ধতা নয়, বরং প্রসারের পরিচয়। অবধারিত ভাবে পথচলতি সমাজের কাছে তিনি কিছুটা বেমানান।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে কয়েকটি ঘটনার কথা বলতে ইচ্ছে করছে। আমার বন্ধু অমিত মিত্র তাঁর বাড়িতে প্রায়ই যেত। সত্যেনবাবু তার মাথার চুল মুঠোয় ধরে ঝাঁকিয়ে বলতেন, ভেতরে যা ভেতরে যা, জেঠাইমার কাছে সন্দেশ আছে।

এই ক্লাসের কয়েক জন জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি পিএইচ ডি করলেন না কেন? অধ্যাপক বসু এক বার বলেছিলেন, ওই ওয়েস্টপেপার বক্সে অনেক কাগজ পড়ে আছে, নিয়ে যা, পিএইচ ডি হয়ে যাবে। আর এক দিন বলেছিলেন, আমি পিএইচ ডি করলে খাতা দেখবে কে! শেষের বাক্যটিতে আত্মশ্লাঘা ঝরে পড়ে।

Advertisement

‘দেশ’ পত্রিকায় আইসিএস অশোক মিত্রের একটি প্রবন্ধ বেরিয়েছিল, ‘যামিনী রায় ও সত্যেন বসু’। কোলাঘাট স্টেশনে শ্রীমিত্র উঠে দেখেন, কামরায় অধ্যাপক বসু। আইআইটি খড়্গপুরের সমাবর্তন সেরে ফিরছেন। শিশুর উচ্ছ্বাস নিয়ে শ্রীমিত্রকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত ক্যালকুলাস বোঝালেন। বিলেতের আধুনিক ক্যালকুলাসে তিনি বিভোর।

অশোকবাবু এও লিখেছেন, যামিনী রায়ের বাড়ি সুচারু ভাবে সজ্জিত কিন্তু সত্যেন বসুর বাড়ি আদ্যোপান্ত মধ্যবিত্ত।

পছন্দ করতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ ক্লাসটি নিতে। ঘন ঘন সিগারেটে টান দিয়ে ক্লাসে ঢুকতেন। অধ্যাপকের ঘোর ভাঙাতেন ভাইস চ্যান্সেলর— স্যর, অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। এর পরেও থেকে যেত ছাত্রদের সঙ্গে আড্ডা, মিষ্টি খাওয়ানো।

বাড়িতে অসুস্থ স্ত্রী। মেয়েদের বিয়ের টাকা জোগাড় করতে পারেননি। সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন তাঁরই প্রথিতযশা ছাত্রেরা। এমনই ভাবে, আলিপুরের বাড়িতে পড়ে থাকে ট্রামের টিকিট। পিছনে লেখা ফর্মুলা। একাকী বিজ্ঞানী বসে থাকেন বাড়ির চিলেকোঠায়। পাঁচিলে সার সার ঘুঁটে।

প্রতিভা চিরকালই বেহিসেবি, বিরল, কালবোশেখির মত্ত ঝাপ্টা।

সুব্রত চট্টরাজ

সোনারপুর

পার্কিং জুলুম

সম্প্রতি শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলাম। বোলপুর স্টেট ব্যাঙ্কের পাশের রাস্তায় পুরসভার অনুমতি ব্যতিরেকে চার-চাকা গাড়ির স্ট্যান্ড বানিয়ে ১৫০ টাকা প্রতি গাড়ি আদায় করা হচ্ছে। এতে পুরসভার আয় নেই। প্রশাসন ও রাজনৈতিক মদতে এক শ্রেণির মানুষ রাজ্য জুড়ে এই লুটতরাজ চালাচ্ছে। মন্দারমণি, দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, বিষ্ণুপুর, বক্রেশ্বর, সর্বত্রই এক চিত্র। অন্য জেলায় তবু ২০-৩০ টাকায় সীমাবদ্ধ। কিন্তু বীরভূমে একেবারে বে-লাগাম। পৌষমেলায় কোথাও ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। টাকা যদি দিতেই হয়, সরকারি কোষাগারেই দেব। শুধু শুধু ব্যক্তির পকেট ভরাব কেন?

সব্যসাচী বাগ

মিরছোবা দক্ষিণ, পূর্ব বর্ধমান

বাড়ি অব্যবহৃত

শ্যামলাল কলোনির চার মাথার মোড়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় একটি আটতলা বিল্ডিং করেছে। বছর চারেক আগে তৎকালীন উপাচার্য মহাশয় মাননীয় স্মৃতিকুমার সরকার ‘সুবর্ণ’জয়ন্তী ভবন নামে উদ্বোধনও করেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই বিল্ডিংটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। সুবর্ণজয়ন্তী ভবন ফলকটিও নেই। বিল্ডিংটির ভিতরের চারিদিকে জলাজায়গা, গাছপালা ও বিষাক্ত আগাছায় ভর্তি হয়ে আছে। মশা, বিষাক্ত কীটপতঙ্গ ও বিষধর সাপের বাসস্থান হয়ে আছে।

রীতা মিত্র

শ্যামলাল কলোনি, বর্ধমান

পিপিএফ

ডাকঘরে আমার এবং আমার পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অনেক সাধ্যসাধনা করে আমাদের একাধিক পিপিএফ পাসবই হাতে পেলাম, কিন্তু অবাক হয়ে লক্ষ করলাম যে, পাসবইয়ের ছাপানো সংখ্যাগুলি একেবারেই পড়া যাচ্ছে না। কত টাকা জমা, কত ব্যালান্স বোঝা প্রায় অসম্ভব। প্রতিটি সংখ্যা অর্ধেক ছাপা এবং অর্ধেক অদৃশ্য। অভিযোগ জানানোর পরে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর নেই।

নন্দগোপাল ধর

চুঁচুড়া, হুগলি

কিছু অসুবিধা

পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রসূতিকালীন (গরিব মেয়েদের) সুবিধা প্রদানে পরিকল্পনা করেছে। বাস্তবে কয়েকটি অসুবিধা থাকায় আমাদের রাজ্যে গরিব মেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিয়ের আগে আধার কার্ডের পদবি এবং বিয়ের পর পদবি ভিন্ন থাকায়, ব্যাঙ্কে খাতা খোলা যায় না। প্রশাসনের নির্দেশে যদি আশাকর্মীরা প্রসূতি কার্ডটি আধার কার্ডটি দেখে লেখেন, ভাল হয়।

আর, আধার কার্ড ভুল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত বা বরো অফিসে ব্যবস্থা করলে উপকার হয়।

সুকুমার মণ্ডল

গড়বালিয়া, হাওড়া

নো এন্ট্রি

আমাকে প্রতি দিন সকালে কলকাতার নিউ আলিপুর দিয়ে অফিস যেতে হয়। কিন্তু আলিপুর ও আলিপুরের মেন রোডের পাশে সমস্ত রাস্তা আর গলিগুলো ‘নো এন্ট্রি’ করে দেওয়া হয়, বোর্ড লাগানো থাকে। ফলে গাড়ি সেখান দিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। এ দিকে মেন রোড পুরো জ্যাম। তারাতলা থেকে নিউ আলিপুরের পেট্রল পাম্প পর্যন্ত গোটা রাস্তা একই অবস্থা। বেলি ব্রিজেরও একই অবস্থা। এই রাস্তা দিয়ে যাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়েছে, অনেক দিন হয়ে গেল। ভিতরের রাস্তা দিয়ে যদি যাওয়া যায়, তা হলে একটু উপকার হয়। ধনী আর প্রভাবশালী মানুষেরা এখানে থাকেন বলে যদি সব রাস্তা ‘নো এন্ট্রি’ করে দেওয়া হয়, তবে তো মুশকিল।

অরবিন্দ শীল

কলকাতা-৬১

দশ গুণ

পোস্ট অফিস সেভিংস অ্যাকাউন্টে এত দিন ন্যূনতম ব্যালান্স রাখতে হত ৫০ টাকা, সেটা দশগুণ বাড়িয়ে করা হল ৫০০ টাকা। এটা আমজনতার কাছে বিরাট ধাক্কা। মিনিমাম ব্যালান্স না থাকলেই নিশ্চয় কিছু টাকা কেটে নেওয়া হবে। মধ্যবিত্ত ও গরিবদের সুস্থ হয়ে বাঁচার দরজাগুলো বোধ হয় আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে আসছে।

রণজিৎ মুখোপাধ্যায়

মুড়াগাছা, নদিয়া

ভোটারের দুর্ভোগ

সারা দেশ জুড়ে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ভোটারদের সংযুক্তির কাজও চলছে। কিন্তু বুথকেন্দ্রে গিয়ে ফর্ম পাওয়া যাচ্ছে না। চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএলও তাঁর অসহায়তার কথা জানান। বলেন, সরবরাহ নেই। পয়সা খরচ করে ফটোকপি করিয়ে নিতে হবে। অগত্যা তা-ই করতে হচ্ছে। অনেকে কম্পিউটার সেন্টার থেকে মোটা অর্থের বিনিময়ে অনলাইনে সংশোধন করছেন। সংশ্লিষ্ট অ্যাপ-টি বিএলও-দের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দিলে, আম আদমির অনেক সুবিধা হবে।

শান্তনু সিংহ রায়

জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement