‘তাঁর গানের তালিকা’ (৩-১১) চিঠির সঙ্গে একটু সংযোজন করতে চাই। দেবব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা ছিল খুব কাছের। ট্র্যাঙ্গুলার পার্কে জর্জদার বাড়িতে, আমার স্বামী সুরকার ও গায়ক অনাথবন্ধু দাসের সঙ্গে মাঝে মাঝে যেতাম। জর্জদা ওঁকে ছোট ভাইয়ের মতো ভালবাসতেন। গানের আসর বসে যেত। অবশ্যই রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে শুরু হত। এক দিন অনাথবন্ধু নিজের সুরে কয়েকটি আধুনিক গান শোনালেন জর্জদাকে। জর্জদা হঠাৎ বললেন, ‘‘আমি তোমার সুরে গান গাইব।’’ তৈরি হল দেবব্রত বিশ্বাসের আধুনিক গানের ক্যাসেট: ‘এ প্রজন্ম ও প্রজন্ম’। এক দিকে থাকল জর্জদার গাওয়া অনাথবন্ধুর সুরে চারটি গান, অন্য দিকে গাইলেন ইন্দ্রাণী সেন ও সৈকত মিত্র।
সীমা দাস
কলকাতা-৩২
জীবনপ্রমাণ
‘ভিডিয়ো সমাধান’ (২৩-১১) চিঠির উত্তরে কয়েকটি কথা। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক-এর নির্ধারিত নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই এই ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট বা ‘জীবনপ্রমাণ’ পেনশনারদের জন্য বাধ্যতামূলক হয়েছে ২০১৪-র নভেম্বর থেকে। প্রতি বছর এটি বিনামূল্যে বা নামমাত্র খরচে বিভিন্ন নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় সরকার, সমস্ত রাজ্য সরকারের অধীনে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী, ইপি.এস-৯৫’এর অধীনে সকল নাগরিক এই ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেটের ‘ডেটাবেস’-এ অন্তর্ভুক্ত। লাইফ সার্টিফিকেট হয়ে যাওয়ার পর, ব্যাঙ্ক বা বণ্টনকারী অফিসে পেনশনারকে স্বশরীরে কোথাও যেতে হয় না। ইমেল বা এসএমএস-এর মাধ্যমে জীবনপ্রমাণ সার্টিফিকেটটি নির্ধারিত ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটির পর এটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে ব্যাঙ্ক এবং পেনশন বণ্টনকারী অফিসের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যায়। ভিডিয়ো কনফারেন্সিং বা হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিয়ো-কলিং’এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট পেনশন প্রাপককে চিহ্নিত করার কাজটি বেশ জটিল। এ ছাড়া, ব্যাঙ্ক বা বণ্টনকারী অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঠিক লোককে সব সময় চিহ্নিত না-ও করতে পারেন।
পিনাকী রুদ্র
অধিকর্তা, অনুমোদিত কেন্দ্র, এনআইইআইটি, তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রক, ভারত সরকার
আলিপুর জেল
‘‘অালিপুর জেলের জমিতে হবে দু’টি সংগ্রহশালা’’ (২৭-১১) প্রসঙ্গে এই চিঠি। অালিপুর জেলে মোট ছ’জন স্বাধীনতা সংগ্রামীর ফাঁসি হয়েছিল। প্রকাশিত খবরে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু অালিপুর জেলে প্রথম যে স্বাধীনতা সংগ্রামীর ফাঁসি হয়েছিল তাঁর নাম চারুচন্দ্র বসু। ফাঁসি হয়েছিল ১৯ মার্চ, ১৯০৯ সালে। অালিপুর বোমার মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর অাশুতোষ বিশ্বাসকে ১৯ বছরের চারু অালিপুর অাদালতে গুলি করে মারেন। প্রতিবেদনে অারও জানতে পারলাম, দেশবন্ধু, নেতাজি, নেহরু ও বিধান রায়কে বন্দিদশায় যে কুঠুরিগুলিতে রাখা হয়েছিল, কারা কর্তৃপক্ষ সেগুলি যথাযথ মর্যাদা দিয়ে সংরক্ষণ করবে। খুবই ভাল। কিন্তু অারও বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী ও জননেতা এই জেলে ছিলেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম, প্রতুলচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়, বিপিনবিহারী গঙ্গোপাধ্যায়, বীরেন্দ্রনাথ শাসমল, ভূপেন্দ্রকুমার দত্ত, যতীন দাস, যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এঁদের স্মৃতি সংরক্ষণে কারা কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা করবেন? কারা কর্তৃপক্ষের তরফে সেলুলার জেল কর্তৃপক্ষের মতো একটা পূর্ণাঙ্গ নথি প্রকাশ করা হোক, যাতে লেখা থাকবে, এই জেলে বন্দি বিপ্লবীদের নাম ও জেলে থাকার সময়সীমা (সাল তারিখ সমেত)।
শুভেন্দু মজুমদার
চুঁচুড়া, হুগলি
আদিবাসী ছাত্র
বড় বাস্কের ‘আদিবাসী পড়ুয়ার পাশ-ফেল’ (২৫-১১) লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। অস্বীকার করার উপায় নেই, এখনও পর্যন্ত ৭০-৮০% আদিবাসী ছাত্রছাত্রীই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। তাঁদের অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বিষয়ে তেমন সচেতন নন। সবটাই নির্ভর করে স্কুলের উপর। অন্য দিকে মুষ্টিমেয় প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের মাতৃভাষায় পড়াশোনার সুযোগ নেই। তা ছাড়া, ভাষা ও সাহিত্যের পাঠ্যক্রম সম্পূর্ণ মূল ধারার সংস্কৃতির (মূলত হিন্দু সংস্কৃতি) উপর নির্মিত, যা আদিবাসী সংস্কৃতির থেকে ভিন্ন। অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের কাছে ‘দিকুমাস্টার’ (দিকু মানে ‘বহিরাগত’), ফলে তাঁরা পড়ায় আগ্রহ তৈরি করতে ব্যর্থ হন। সমস্যা নিরসনে কয়েকটি পরামর্শ:
১) আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে মাতৃভাষার মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা, যেখানে বাংলা ও ইংরেজি ভাষাও সমান গুরুত্ব পাবে।
২) ওই সমস্ত এলাকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক আদিবাসী ভাষা বা স্থানীয় ভাষা জানা শিক্ষক নিয়োগ করা।
৩) প্রাথমিকের পাঠ্যক্রমে যথাসম্ভব আদিবাসী সমাজ-সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত করা।
৪) অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দু’মাস অন্তর বৈঠকের ব্যবস্থা করা।
৫) বিদ্যালয়ের সময়সীমার বাইরে সপ্তাহে দু’দিন ছাত্রদের জন্য ‘বিশেষ’ পাঠদানের ব্যবস্থা।
শিবু সরেন
পারুলডাঙা, বীরভূম
নির্দেশিকা
দীর্ঘ দিন যাবৎ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সাম্মানিক ও প্রয়োজনীয় প্রদেয় অর্থ নিয়ে বঞ্চনার শিকার। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকারি নির্দেশিকার খামখেয়ালিপনা। গত ৯-১১ তারিখে, বুলবুল ঝড়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবিত জেলার স্কুল, কলেজ প্রভৃতি বন্ধের সরকারি নির্দেশ আসে। কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি নিয়ে কোনও নির্দেশ ছিল না, আংশিক ভাবে কিছু CDPO তাঁদের অধীনস্থ কেন্দ্র বন্ধের নির্দেশ দেন। ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা নিজের কেন্দ্রে হাজির হন।
আবার গত ১৪-১১ হাওড়া জেলার জেলাশাসকের নির্দেশ আসে, বিভিন্ন ব্লক-ভিত্তিক ভাবে সমবেত হয়ে শিশুদিবস পালন করতে হবে। এ দিকে, বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়, শিশুদিবস নিজের কেন্দ্রে পালন করতে হবে।
কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকার কপালে জোটে স্থানীয় মাতব্বরদের হেনস্থা, সেই ব্যক্তিদেরও দাবি ন্যায্য: যে কেন্দ্রগুলি বেলা ৯টায় খোলা সম্ভব, সেগুলি কেন শীতের সকালে শুরু হবে? শীত বা বর্ষার সকালে তিন থেকে ছ’বছরের বাচ্চাকে অঙ্গনওয়াড়িতে রাখার পরিকাঠামো কি আছে?
দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর পরেও অঙ্গনওয়াড়ির একটি সুস্থ, সুনির্দিষ্ট পরিকাঠামো তৈরি হল না কেন? এ দায় কার?
পিয়ালী ঘোষ
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, ডোমজুড়, হাওড়া
মশা না হাঁপানি
নিউ গড়িয়া এলাকায় ফ্ল্যাটের সিকিয়োরিটি গার্ড এবং হকারেরা সন্ধ্যা হলেই মশার কামড়ের হাত থেকে বাঁচতে ডিমের ক্রেট জ্বালাতে থাকেন। তার কারণ এগুলি সহজলভ্য। এর থেকে বিষাক্ত ধোঁয়া বেরোয়। এতটাই তীব্র ও কটু তার গন্ধ, তিন তলাতেও আমাদের জানালা-দরজা বন্ধ করে রাখতে হয়। তা সত্ত্বেও মাথা ধরে যায়। ওঁদের অনেক অনুরোধ করেছি, ক্রেট না জ্বালাতে, কিন্তু তাঁদের যুক্তিও অকাট্য, এগুলি জ্বালিয়ে বরং হাঁপানি নিয়ে বেঁচে থাকবেন, কিন্তু যদি মশার কামড়ে ডেঙ্গি হয় তা হলে তো মরেই যাবেন। বিকল্প ব্যবস্থার আর্থিক সঙ্গতি এঁদের নেই।
দেবাঞ্জনা কর্মকার
ইমেল মারফত