—ফাইল চিত্র।
‘যো হো গয়া সো হো গয়া’— এক গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বাক্য। বাংলায় এক বিখ্যাত গানের সুরে বলা যায় ‘যাক, যা গেছে তা যাক’। হিন্দির এই চালু বাক্যটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের (ছবিতে) উপদেশ হিসেবে ঝরে পড়তেই, দিল্লির দাঙ্গাদীর্ণ মানুষ বড়ই প্রশান্তি লাভ করলেন।
তা, কোন কোন যন্ত্রণা এখন তাঁদের ভুলতে হবে ‘যো হো গয়া সো হো গয়া’ মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে? স্বজন হারানো, প্রচুর টাকার ব্যবসা ধ্বংস হয়ে রাতারাতি কপর্দকশূন্য হয়ে যাওয়া, মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকু হারিয়ে যাওয়া, স্কুল পুড়ে যাওয়ার ফলে পঠনপাঠন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। যে গভীর দার্শনিক বোধ,
যে ললিত শান্তির বাণী এই বাক্যবন্ধটিতে সম্পৃক্ত আছে, তার দ্বিতীয় তুলনা কোথায়!
এ রকম করে ভাবতে পারলে যে ঘটনাগুলো আর আমাদের মানসিক অস্থিরতার কারণ হবে না, সেগুলো হল: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বর্বরোচিত ইহুদি নিধন, হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমায় লক্ষ লোকের মৃত্যু, গাঁধী হত্যা, ১৯৮৪-র শিখ নিধন বা গুজরাতের গণহত্যা, পুলওয়ামা হত্যাকাণ্ড, নীরব মোদী-বিজয় মাল্যদের লক্ষ কোটি টাকা আত্মসাৎ, সারদায় গরিব মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ গায়েব ইত্যাদি।
ভবিষ্যতেও এই অসামান্য বাণী একই রকম ভাবে জনগণকে সমৃদ্ধ করবে। ব্যাঙ্ক লাটে উঠে সঞ্চিত সব অর্থ গায়েব হলে, স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার তলানিতে ঠেকলে, জীবনদায়ী ওষুধ ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে যদি ভাবা যায় ‘যো হো গয়া...’, তবে পৃথিবীতে অনাবিল শান্তি বিরাজ করবে। এর জন্যে অজিত ডোভাল মহাশয়কে কৃতিত্ব দিতেই হবে।
শুভেন্দু দত্ত
কেষ্টপুর
শ্রীমতী কৃষ্ণা বসু
সদ্যপ্রয়াতা শ্রীমতী কৃষ্ণা বসুর বহুমুখী কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ওঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক অনুল্লিখিত। তা হল, ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ’-এর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। পূর্ব ভারতের প্রথম শিশু চিকিৎসার এই কেন্দ্রটিকে একক ভাবে গড়ে তোলার কৃতিত্ব যাঁর, সেই ডা. ক্ষীরোদ চৌধুরী ছিলেন সম্পর্কে কৃষ্ণা বসুর নিজের কাকা। এই হাসপাতালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তাই কৃষ্ণা ছিলেন পরিচালন সমিতির সদস্যা হিসেবে।
ডা. শিশির বসু বস্টনে উচ্চশিক্ষার পর কলকাতায় ফিরে যখন এই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন, তখন থেকেই শ্রীমতী বসুও এই হাসপাতালের সঙ্গে একনিষ্ঠ ভাবে জড়িয়ে পড়েন।
ডা. বসুর প্রয়াণের পর শ্রীমতী বসু এগিয়ে আসেন হাসপাতালের হাল ধরতে। প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে উনি ছিলেন এই হাসপাতালের পরিচালন সমিতির সভাপতি। এর উন্নয়নে তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং সদুপদেশ সব সময়ই ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্ব কালে, কৃষ্ণা ছিলেন হাসপাতাল ও সরকারের মধ্যে সব চেয়ে বড় সেতুবন্ধন। হাসপাতালের চিকিৎসক ও সাধারণ কর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন মাতৃসমা। তাঁর অভাব অপূরণীয়, কিন্তু তাঁর প্রেরণাকেই পাথেয় করে কাজ করে যেতে হবে। অপূর্ব ঘোষ
অধিকর্তা, পরিচালন সমিতি,
ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ
বিরাম নেই
একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠরত, নব্বই শতাংশ প্রতিবন্ধী আমার একমাত্র পুত্র এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ পরীক্ষার যে নির্ঘণ্ট স্থির করেছে, তাতে স্পষ্ট, কোনও পরীক্ষার্থী দু’টি পরীক্ষার মধ্যে যেন অন্তত একটি দিনের বিরাম পায়, সে চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে যারা গণিতের সঙ্গে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়েছে, কিংবা প্যারাসায়েন্স বিভাগে যারা কম্বিনেশন হিসেবে গণিতের সঙ্গে মডার্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন নিয়েছে, তাদের এই বিরাম নেই। কারণ, কম্পিউটার সায়েন্স/ মডার্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন পরীক্ষার দিন ১৯ মার্চ, অর্থাৎ গণিত পরীক্ষার (১৮ মার্চ) ঠিক পরের দিন।
আমার পুত্রের সাবজেক্ট কম্বিনেশনে গণিত এবং মডার্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, ফলে তাকেও ১৮ এবং ১৯ মার্চ পর পর দু’দিন পরীক্ষায় বসতে হবে। যা তার পক্ষে অত্যন্ত কষ্টের এবং কার্যত প্রায় অসম্ভব।
আমার আবেদন, গণিত এবং কম্পিউটার সায়েন্স/ মডার্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন— পরীক্ষা দু’টির মধ্যে অন্তত একটি দিনের ব্যবধান রাখার ব্যবস্থা করা হোক।
মধুসূদন সরকার
কলকাতা-১০১
যান্ত্রিক ধারাপাত
‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’ (২০-২) শীর্ষক চিঠিতে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের প্রতি পত্রলেখক কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন। আসলে, আমরা সব কিছু যান্ত্রিক ধারাপাতের নিয়মে দেখতে অভ্যস্ত। এই নিয়ম বলে: আপনি সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম বা নির্ভয়া কাণ্ডে প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন, তাই ভাঙড়, ইসলামপুর, হায়দরাবাদ, পুলওয়ামা বা কামদুনির ঘটনায় আপনার চুপ থাকা চলে না। এ রকম হলে আপনি একদেশদর্শী বলে চিহ্নিত হবেন।
দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাম আমলে সব কিছু পার্টির অঙ্গুলিহেলনে চালিত হত। তখন যে চারটি জায়গায় বাম সরকারকে বেগ পেতে হয়েছে তা হল: পাহাড়ে ঘিসিং (পরে গুরুং), মুর্শিদাবাদে অধীর, কুলতলিতে এসইউসি, আর মহানগর ও হাওড়ায় সুভাষ দত্ত। কলকাতার ফুসফুস ময়দানের ঐতিহ্যবাহী বইমেলা স্থানান্তরিত হয়েছে তাঁর করা মামলার জেরে। ভিক্টোরিয়ার চার পাশ দূষণমুক্ত রাখা, সল্টলেকের জলাভূমি বেহাত হওয়া রোধ, ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল, বিসর্জনের জেরে গঙ্গাদূষণ রোখা বা পুরীর সমুদ্রতট দূষণমুক্ত রাখার জন্য প্রশাসনকে বাধ্য করেছেন তিনি। সুভাষবাবু নিঃসন্দেহে এক জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ কর্মী। তিনি বইমেলা বা শান্তিনিকেতনের মেলার জন্য বিচলিত হন অথচ কোলে মার্কেট বা সিঁথি চত্বরের গয়না কারখানার দূষণ নিয়ে কেন সরব হন না, এই প্রশ্ন উপরোক্ত যান্ত্রিক ধারাপাতের নিয়মে চালিত। ময়দান থেকে মিলনমেলা ঘুরে অধুনা করুণাময়ীতে স্থিত বইমেলায় স্থানান্তর-জনিত কারণে কি ব্যবসা কমেছে ?
‘পরিবেশ নষ্ট করার অপরাধে ময়দানে মেলা নিষিদ্ধ হলেও, সামগ্রিক ভাবে পরিবেশ বাঁচানোর আন্দোলন বিশেষ এগোয়নি’—পত্রলেখকের এই মন্তব্যের সঙ্গে পূর্ণ সহমত হয়ে বলি, না এগোনোর কারণ শ্রীদত্ত নয়, আমরা। যারা এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাওয়ার শপথকে শুধু কাব্যগ্রন্থে আবদ্ধ রেখে, অন্যের অপেক্ষায় বসে থাকি। ষোলো বছরের সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গকে পড়াশোনা ফেলে রাষ্ট্রনায়কদের সম্মেলন-স্থলের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে বিপন্ন পরিবেশ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয়!
সরিৎশেখর দাস
চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর
অপ্রতর্ক্য
‘বজ্র আঁটুনি...’ (২০-২) পত্রটি পরিবেশ নিয়ে আমাদের চিন্তাকে উস্কে দেয়। চিঠির এক জায়গায় লেখক ‘অপ্রত্যর্ক’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং বলেছেন এটি শিবনারায়ণ সৃষ্ট শব্দ। ওটি হবে ‘অপ্রতর্ক্য’, যার অর্থ তর্কের অতীত। এটি তৎসম শব্দ, কাজেই শিবনারায়ণ রায় কৃত বলাটাও বিভ্রান্তিকর।
প্রশান্ত সমাজদার
কলকাতা-৩
কী মারবেন
‘গোলি মারো’ খুবই বাজে কথা। গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত ঠিক। ‘বোম মারো’ কথাটা বোধ হয় অমৃতবাণী!
জয়ন্ত রায় কর্মকার
ইমেল মারফত