Coronavirus

ইটালিফেরত এক জনের থেকে এখন ১৬ হাজার আক্রান্ত এ দেশে

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা মনোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে মাসের শেষ পর্যন্ত এ দেশে স্কুল ছুটি থাকে। সেই সময়ে অধিকাংশ ডাচ পরিবারই বেড়াতে যায়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৩৩
Share:

ডেলফট-এর রাস্তা ফাঁকা। —নিজস্ব চিত্র।

করোনা আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। কিছু দিন আগে যখন সুদূর চিন থেকে করোনার খবর প্রথম আসে, তখনও আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিইনি।

Advertisement

আমরা ভেবেছিলাম, ওটা ও দেশের জাতীয় সমস্যা হয়েই সীমাবদ্ধ থাকবে। এর প্রভাব যে সারা বিশ্বে এ ভাবে পড়তে পারে, তা তখনও মনে হয়নি। ইউরোপ তথা নেদারল্যান্ডসের জীবনযাত্রাও চলছিল স্বাভাবিক ছন্দেই।

ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে যখন এ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গেল, তখন থেকেই ছবিটা বদলাতে শুরু করে দিল। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে মাসের শেষ পর্যন্ত এ দেশে স্কুল ছুটি থাকে। সেই সময়ে অধিকাংশ ডাচ পরিবারই বেড়াতে যায়। এই সময়ের আকর্ষণ শীতকালীন খেলাধুলো। বিশেষ করে স্কি করতে যাওয়া।

Advertisement

আরও পড়ুন: ১২ লক্ষ ছাড়াল বিশ্বে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত ৬৪ হাজারেরও বেশি​

আরও পড়ুন: রাত ৯টায় প্রদীপ জ্বালুন, প্রমাণ হবে আমরা এক: ভিডিয়ো বার্তা ঋতুপর্ণার​

স্কি করতে অনেকেই এ বার ইটালিতে গিয়েছিলেন। তত দিনে ও দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক হারে। ইটালিফেরত এক জনের থেকেই সংক্রমণ শুরু হয় এ দেশে। প্রথম দিকে ধীরে। পরে দ্রুত হারে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজারের কাছাকাছি। মৃতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। এ দেশে সবাই মোটামুটি বাড়ি থেকেই কাজ করছে। তিন সপ্তাহ হল স্কুলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সরকারি নির্দেশে এই পরিস্থিতি চলবে আপাতত ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। তাই প্রয়োজনে কেউ কেউ বাইরে বেরোচ্ছেন। তবে সে ক্ষেত্রেও দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম মেনে চলতে হবে। অন্যথায় ৪০০ ইউরো জরিমানা।

প্রথম দিকে সুপার মার্কেটে জিনিসপত্রের হাহাকার হয়েছিল খুব। এখন আবার সব স্বাভাবিক। রাস্তায় লোকজন প্রায় দেখাই যাচ্ছে না। হাইওয়েতে গাড়ির সংখ্যা কম, ট্রামে বাসেও যাত্রীর সংখ্যা তথৈবচ। ইউরোপের অন্য দেশের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইটালি, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি— সব প্রতিবেশী দেশই সঙ্কটে। এ দেশের বিখ্যাত কেউকেনহফ-এর টিউলিপ গার্ডেন এ বছরের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এর ফলে দেশের পর্যটন শিল্প ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা বলাই বাহুল্য। আগামী দিনে কী হতে চলেছে, তা এখনও আমাদের অজানা। আমরা এরই মধ্যে ভাল থাকার চেষ্টা করছি। সোশ্যাল মিডিয়া বা ফোন মারফত এখানকার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি, যাতে আমরা একা বোধ না করি। কলকাতায় আপনজনদের জন্য দুশ্চিন্তাও পিছু ছাড়ছে না। তবে আতঙ্ক নয়, সঠিক সচেতনতার মাধ্যমেই আমরা এ যুদ্ধে জয়ী হব, সে বিশ্বাস রাখি।

তনিমা চট্টোপাধ্যায়, ডেলফ্‌ট, দ্য নেদারল্যান্ডস

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement