Coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: বাঙালির বই কেনা

দীর্ঘ লকডাউনে, কবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় আবার অবগাহন করতে পারব, কবে ব্যবসা-বাণিজ্য-অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াবে, আমরা এই সব নিয়ে চরম ভাবিত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০০:৫৮
Share:

ফাইল চিত্র।

এই করোনা কালে, অতিমারির ভয়ানক আবহেও কেরল সরকার নাগরিকের মানসিক স্বাস্থ্যরক্ষার কারণে, বইকে অত্যাবশ্যক পণ্যতালিকার অন্তর্ভুক্তির নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সপ্তাহে দু’দিন পুর অঞ্চলের সর্বত্র বইয়ের দোকান খোলা থাকছে। কিন্তু, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ পারিল না, তাহার কারণ শুধু সরকার নহে, বই লইয়া বঙ্গবাসীরও ঔদাসীন্য।’’ (‘বই-বিমুখ’, সম্পাদকীয়, ১০-৫)।

Advertisement

দীর্ঘ লকডাউনে, কবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় আবার অবগাহন করতে পারব, কবে ব্যবসা-বাণিজ্য-অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াবে, আমরা এই সব নিয়ে চরম ভাবিত। কিন্তু, ক’জন বইপাড়া নিয়ে চিন্তিত? বরং অন্যান্য রাজ্যবাসীর মতো আমরাও সুরা-বিপণি খুলে যেতে পরম আহ্লাদিত। এর সঙ্গে চা এবং পান-বিড়ি-সিগারেটের দোকান খুলে গেলেই কেল্লা ফতে!

প্রসঙ্গক্রমে সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘বই কেনা’ রম্যরচনা থেকে উদ্ধৃতি দেওয়ার লোভ সংবরণ করা গেল না। ওমর খৈয়ামের একটি যথার্থ উক্তি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত-যৌবনা, যদি তেমন বই হয়।’’ তাঁর মতে, ‘‘ভেবে-চিন্তে, অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করে, বই কেনে সংসারী লোক। পাঁড় পাঠক বই কেনে প্রথমটায় দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে, তারপর চেখে চেখে সুখ করে, এবং সর্বশেষে সে কেনে ক্ষ্যাপার মত, এবং চুর হয়ে থাকে তার মধ্যিখানে। এই একমাত্র ব্যসন, একমাত্র নেশা, যার দরুণ সকালবেলা চোখের সামনে সারে সারে গোলাপী হাতি দেখতে হয় না, লিভার পচে পটল তুলতে হয় না।’’ তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রকৃত মানুষ জ্ঞানের বাহন যোগাড় করার জন্য অকাতরে অর্থ ব্যয় করে। একমাত্র বাংলা দেশ ছাড়া।’’

Advertisement

বাঙালিদের বই কেনা সম্পর্কে তাঁর উক্তি, ‘‘জ্ঞানতৃষ্ণা তার প্রবল, কিন্তু বই কেনার বেলায় সে অবলা। আবার কোনও কোনও বেশরম বলে, বাঙালির পয়সার অভাব। বটে? কোথায় দাঁড়িয়ে বলছে লোকটা এ-কথা? ফুটবল মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে, না সিনেমার টিকিটের কিউ থেকে?’’

তাই, বই-বিমুখতা বাঙালির চেনা ব্যাধি। বইমেলা যাওয়াটা তার ফ্যাশন। রবীন্দ্র রচনাবলি ড্রইংরুমের শো-কেসে সাজিয়ে রেখে বই-বৈভব প্রকাশ একটা প্যাশন।

ধ্রুবজ্যোতি বাগচি

কলকাতা-১২৫

লাভ হত না

‘বই-বিমুখ’ সম্পাদকীয়র প্রেক্ষিতে বলি, এ রাজ্যে কেরলের মতো, প্রতিটি পুর এলাকায় দু’দিন করে বইয়ের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হলেও, মূল সমস্যার সমাধান হত না।

প্রথমত, কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া খোলা থাকলেও, গণপরিবহণ বন্ধ থাকায়, রাজ্যের অন্যত্র পাড়ায় পাড়ায় বই পৌঁছে যাওয়ার উপায় ছিল না। তা ছাড়া, কলেজ স্ট্রিটে অবস্থিত দোকানের যে কর্মীরা কলকাতার বাইরে শহরতলি থেকে আসেন, তাঁরা আসতে পারতেন কি না, সেটাও প্রশ্ন।

সবচেয়ে বড় যে সঙ্কট, এই রাজ্যের পাড়ায় পাড়ায়, টেক্সটবই ছাড়া, সাহিত্য শিল্প অর্থনীতি ইতিহাস সমাজনীতির নন-টেক্সট বইয়ের দোকান প্রায় হাতে-গোনা, বস্তুত নেই। ফলে সত্যি যারা বইয়ের খোঁজ করেন, তাঁদের খুব একটা আশা মিটত না।

প্রবুদ্ধ বাগচি

কলকাতা-৮৩

কয়েক জন

ভারতীয় ক্রীড়া-জগতের অসামান্য ‘অলরাউন্ডার’, ক্রিকেটে ফুটবলে টেনিসে নিজের দক্ষতার পরিচয় দেওয়া খেলোয়াড় চুনী গোস্বামী সদ্য প্রয়াত। আরও কয়েক জন বাঙালি খেলোয়াড়ের কথা মনে আসছে, যাঁরা একাধিক খেলায় দক্ষতা দেখিয়েছেন।

চুনী গোস্বামীর সমসাময়িক ও সহ-খেলোয়াড় বিনু চট্টোপাধ্যায় মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, বাংলা তথা ভারতের হয়ে দাপিয়ে ফুটবল খেলেছেন। বাস্কেটবল খেলায় তিনি বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অবসর গ্রহণের পর বিনুবাবু দর্শক এবং মিডিয়ার আনুকূল্য-বঞ্চিত বাস্কেটবল খেলাটির অন্যতম প্রশাসক হিসেবে খেলাটিকে কলকাতার বাইরেও ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। হিন্দমোটর, শেওড়াফুলি, দুর্গাপুরের টিমগুলোও তখন রীতিমতো টেক্কা দিত কলকাতার প্রসিদ্ধ ক্লাব এবং অফিস দলগুলোকে। বিনুবাবুর সময়েই, গত শতকের আশির দশকের মাঝামাঝি, নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে বাস্কেটবলের জাতীয় প্রতিযোগিতা অত্যন্ত সফল ভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনালে স্টেডিয়াম ভরা ছিল।

কিংবদন্তি মহিলা ফুটবলার, বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া কুন্তলা ঘোষ দস্তিদার, বহু খেলায় দক্ষ ছিলেন। বাস্কেটবলেও তিনি জাতীয় স্তরে খেলেছেন।

চুনী গোস্বামীর পূর্বসূরি ছোনে মজুমদার ফুটবল, ক্রিকেট ও হকির দিকপাল খেলোয়াড় ছিলেন।

এ রকম হয়তো আরও অনেক খেলোয়াড়ই ছিলেন, এখন বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছেন।

পার্থ নন্দী

শেওড়াফুলি, হুগলি

আগে জীবন

সংবাদমাধ্যমে জেনেছি, বিভিন্ন বর্ষের যে সব পরীক্ষা করোনার কারণে নেওয়া/ শেষ করা সম্ভব হয়নি, সেগুলো জুলাই বা অগস্ট মাসের মধ্যে নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। আবার খবরে এও জানছি, আগামী কয়েক মাস করোনার সংক্রমণ মারাত্মক বৃদ্ধি পাবে। দূর-দূরান্তে গিয়ে বহু ছাত্রছাত্রীকে পরীক্ষা দিতে হয়, সেখানে ট্রেন বা বাস ছাড়া উপায় নেই। সেই পরিস্থিতিতে সুরক্ষা বিধি মেনে চলা কি সম্ভব? সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়বে না তো? তার চেয়ে পরীক্ষা যদি ছ’মাস পিছিয়ে দেওয়া যায়, ক্ষতি কী? আগে তো জীবন।

বিমল কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়

খামারচণ্ডী, হুগলি

আর্থিক পরামর্শ

কোভিড-১৯’এর দৌলতে আমাদের দেশও তীব্র আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন। কয়েকটি পরামর্শ: (১) আগামী তিন বছরের জন্য (২০২৩ পর্যন্ত) দেশের সমস্ত প্রকার নির্বাচন স্থগিত রাখতে হবে। (২) সমস্ত রাজ্যের রাজ্যপাল ও রাজভবন জনিত ব্যয় স্থগিত রাখতে হবে। প্রতি রাজ্যে এক জন লিয়াজ়ঁ অফিসারের অধীনে চার-পাঁচ জনের একটি অফিস কেন্দ্র-রাজ্য সংযোগ রক্ষাকারী হিসাবে কাজ করবে। (৩) সমস্ত মন্ত্রী আমলার বিদেশভ্রমণ এই তিন বছর বন্ধ থাকবে। (৪) সরকারি, বেসরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, অধ্যাপক, ডাক্তার, শিক্ষাকর্মী, পেনশনভোগীদের এই তিন বছর প্রতি মাসে বেসিক মাইনের এক দিনের অর্থ কাটা হবে এবং তা কোভিড-সাহায্য হিসাবে গণ্য হবে। (৫) দেশের সমস্ত বিক্রীত দ্রব্যে ১% বিশেষ সারচার্জ ধার্য করা হবে।

শুভেন্দুকুমার সিদ্ধান্ত

নবদ্বীপ, নদিয়া

ব্যাঙ্ক থেকে

অনেক ব্যাঙ্ক থেকে দশ, পঞ্চাশ বা একশো টাকার নোট দেওয়া হচ্ছে না। শুধু দু’শো, পাঁচশো, দু’হাজারের নোট দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাজারে কম অঙ্কের নোটের অভাব দেখা দিচ্ছে। দোকানে পাঁচশো টাকা দিলে, দোকানদার অনেক সময় ভাঙিয়ে দিতে চাইছেন না, এমনকি কিছু দোকানে প্রতি পাঁচশো টাকার জন্য দশ টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে!

জগবন্ধু আড্ডি

ভাণ্ডারহাটি, হুগলি

ওদের অসুবিধে

লকডাউন শেষ হলে কুকুর-বেড়ালদের খুব অসুবিধে হবে। এখন তো গাড়ি হর্ন দিলেও ওদের উঠে পড়ার অভ্যাস চলে গেছে।

রথীন্দ্র দাস

কলকাতা-২৯

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,

কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement