Medical Expenses

সম্পাদক সমীপেষু: বেলাগাম খরচ

শহরতলিতেও ডাক্তাররা নিয়ম করে ভিজ়িটিং চার্জ বাড়ান। এমনিতেই এখন বেশির ভাগ ডাক্তার বাড়িতে ডাকলে আসেন না। যাঁরা আসেন, তাঁরা কমপক্ষে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা নেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪ ০৫:৪৯
Share:

বাজারে ক্রমাগত বেড়ে চলা ওষুধের দাম নিয়ে বর্তমানে প্রথিতযশা চিকিৎসকেরাও সরব। কিন্তু এই চিকিৎসকদের দক্ষিণা তথা ভিজ়িটিং চার্জ যে বাজারমূল্যের সঙ্গে সাযুজ্যের তাগিদে ক্রমবর্ধমান, সেই বিষয়টি নিয়ে কি তাঁরা ভাবেন? ভাল চিকিৎসক অর্থে কলকাতায় নামী চিকিৎসকদের দক্ষিণা প্রায় আকাশছোঁয়া। ১০০০ টাকা তাঁদের ন্যূনতম ফি যে হবেই, এমনটা ধরেই আমরা সাধারণ মানুষ চলি। বেসরকারি নার্সিংহোমে বসা ডাক্তারবাবুদের এর সঙ্গে যোগ হয় রেজিস্ট্রেশন মূল্য। এ ছাড়া মাল্টিস্পেশালিটি বা বড় নার্সিংহোমগুলোতে অপারেশন হলে, যে ডাক্তার অস্ত্রোপচার করলেন, রোগী ভর্তি থাকাকালীন তিনি রোগীদের যত বার দেখবেন, তত বারই তাঁর ভিজ়িটিং চার্জ (অপারেশন খরচ বাদে) বিলে ধরা হয়।

Advertisement

শহরতলিতেও ডাক্তাররা নিয়ম করে ভিজ়িটিং চার্জ বাড়ান। এমনিতেই এখন বেশির ভাগ ডাক্তার বাড়িতে ডাকলে আসেন না। যাঁরা আসেন, তাঁরা কমপক্ষে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা নেন। এমনকি অনেক দিনের পরিচিত রোগীর মৃত্যুর শংসাপত্র লিখে সেখানেও মোটা ভিজ়িট চেয়ে নেন। অনেক সময় রোগী বা রোগীর বাড়ির লোক ডাক্তার কেমন না জেনে বা বাধ্য হয়ে প্রাথমিক ভাবে নার্সিংহোমে মোটা ভিজ়িটের বিনিময়ে যে কোনও চিকিৎসককে দেখান। পরে চিকিৎসক পরিবর্তন হলে বা নানা কারণে তিনিই কাউকে রেফার করলে, সে ক্ষেত্রেও সেই জায়গায় মোটা টাকা ভিজ়িট হিসাবে গুনতে হয়। এই পরিমাণ অর্থ সাধারণ রোগীদের পক্ষে ব্যয় করা অত্যন্ত কষ্টকর। শুধুমাত্র তা-ই নয়, অনেক ক্ষেত্রে সামান্য রিপোর্ট দেখাতে গেলেও চিকিৎসকের কাছে নাম লিখিয়ে পুরো টাকা দিয়ে দেখাতে হয়। দরিদ্র মানুষ তাই রোগের গুরুত্বের কথা জেনেও স্রেফ ভিজ়িটিং চার্জের জন্য অনেক সময় ডাক্তার দেখান না। রোগের কারণে যাঁদের অনেক বার ডাক্তার দেখাতে আসতে হয়, তাঁদের সমস্যার কথা কি আদৌ কেউ ভাবেন?

অরিত্র মুখোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি

Advertisement

মেট্রোয় পরিবর্তন

মার্চ থেকে চালু হওয়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গ্রিন লাইনের হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড রুটের জনপ্রিয়তা ও যাত্রী-সংখ্যা ইতিমধ্যেই লক্ষণীয়। ভারতে সর্বপ্রথম নদীর নীচ দিয়ে নির্মিত এই রুটে ২৪ লক্ষেরও বেশি যাত্রী চলাচল করেছেন। যে রুটে বাসে ভ্রমণে সময় লাগে কমপক্ষে এক ঘণ্টার কাছাকাছি, মেট্রো পরিষেবা তা মাত্র ন’মিনিটে নামিয়েছে। নিঃসন্দেহে, এটা হাওড়া ও কলকাতাবাসীর এক গর্বের বিষয়।

তাই এই নতুন রুটের জনপ্রিয়তা, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও উন্নততর পরিষেবার আশা নিয়ে কয়েকটি সুচিন্তিত প্রস্তাব রইল, যা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখতে পারেন— এক, অত্যধিক ভিড় সামলাতে বর্তমানের ১২-১৫ মিনিট অন্তর ট্রেনের উপস্থিতি কমিয়ে ৭-১০ মিনিট করা প্রয়োজন। শেষ ট্রেন রাত ৯টা ৪৫-এর পরিবর্তে, কমপক্ষে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত চালাতে পারলে বহু নিত্যযাত্রী উপকৃত হবেন। এ ছাড়াও, রবিবার পরিষেবা চালু রাখা অত্যন্ত জরুরি। দুই, অন্যান্য রাজ্যের মেট্রোতে সর্বাধিক ২৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মালপত্র অনুমোদিত হলেও, কলকাতা মেট্রোর পোর্টালে দেখা যাচ্ছে তা মাত্র ১০ কেজি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। যে-হেতু, হাওড়া মেট্রো ও হাওড়া রেল স্টেশন পাশাপাশি অবস্থিত, এটা খুবই স্বাভাবিক যে, দূরপাল্লার ট্রেন ধরতে বড় ব্যাগ নিয়ে বাস রাস্তার যানজট এড়িয়ে, স্বল্প খরচ ও সময়ের মধ্যে পৌঁছতে যাত্রীরা মেট্রোরই দ্বারস্থ হবেন। কাজেই, ২৫ কেজি পর্যন্ত অনুমোদন অবিলম্বে প্রয়োজন। অদূর ভবিষ্যতে গ্রিন লাইন শিয়ালদহের সঙ্গে যুক্ত হলে এর প্রয়োজন আরও বাড়বে। কিন্তু সমস্যা হল, অফিস টাইমের অত্যধিক ভিড়ে বড় ট্রলি ব্যাগ নিয়ে মেট্রোয় ওঠা যাত্রীরা নিত্যযাত্রীদের অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। তাই রেল কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত দু’-তিনটে বগিকে লাগেজ বগি হিসেবে চিহ্নিত করা যায় কি না, যাতে কেবলমাত্র মালপত্র বহনকারীদেরই উঠতে অনুমতি দেওয়া হবে। স্টেশনে দরজার গায়েও সেইমতো চিহ্নিত করা থাকলে, কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তিন, প্রায়শই দেখা যাচ্ছে, অত্যাধুনিক কামরার মধ্যে ডিসপ্লে স্ক্রিন সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় রয়েছে অথবা ত্রুটিপূর্ণ নির্দেশ করছে। কখনও বাম দিক ঘোষণা করে ডান দিকের দরজা খোলায় ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি হচ্ছে। কখনও আবার স্টেশনের চলমান সিঁড়ি নিশ্চল থাকছে।

এই সব ছোটখাটো ত্রুটি-বিচ্যুতি দূরীকরণে কর্তৃপক্ষের মনোযোগী হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রস্তাবগুলো কার্যকর হলে নবনির্মিত মেট্রো পরিষেবার জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।

শান্তনু ঘোষ, শিবপুর, হাওড়া

ট্রেনের অনিয়ম

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার নিত্যযাত্রীদের কাছে লোকাল ট্রেনে সফর বর্তমানে নরকযন্ত্রণার সমতুল্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ এই মেনলাইনে প্রতি দিন মেদিনীপুর, পাঁশকুড়া, মেচেদা, উলুবেড়িয়া, সাঁতরাগাছি, আমতা-সহ একাধিক রুটের লোকাল ও গ্যালপিংয়ের পাশাপাশি চলে বন্দে ভারতের মতো আধুনিক প্রযুক্তির দ্রুতগতির এক্সপ্রেস‌ও। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে মূলত মালগাড়ি এবং দূরপাল্লার নানা ট্রেনের যাতায়াত সুগম ও বাধাহীন করতে গিয়ে ব্যাঘাত ঘটছে স্বাভাবিক লোকাল ট্রেন পরিষেবায়। মাসকয়েক আগেও যেখানে নির্দিষ্ট সূচি মেনে ট্রেন চলত নিয়মিত, সেখানে এই মুহূর্তে সাধারণ প্যাসেঞ্জার গাড়ি মিলছে ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে। শুধু তা-ই নয়, রেলপথ অথবা বৈদ্যুতিক পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের দোহাই দিয়ে হামেশাই বাতিল করা হচ্ছে দিনের ব্যস্ত সময়ের বহু ট্রেন। হাওড়াগামী ডাউন লোকালগুলির অধিকাংশ‌ই আবার সবুজ সঙ্কেত না পেয়ে মাঝপথে থমকে যাচ্ছে একটানা ৪০-৪৫ মিনিটের জন্য। এতে আমজনতা যথাসময়ে নিজেদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারছেন তো না-ই, উপরন্তু দীর্ঘ ক্ষণের বিলম্বের কারণে চরমে উঠছে যাত্রীদের ভোগান্তি।

দক্ষিণ-পূর্ব শাখার বেশ কতকগুলি স্টেশনকে সম্প্রতি ‘অমৃত স্টেশন’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করে সেগুলির পরিকাঠামোগত মানোন্নয়নের উদ্যোগ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পরিকল্পনাটি রূপায়ণে প্রাথমিক ভাবে বরাদ্দ ধার্য হয়েছে অন্তত দু’শো কোটি টাকা। অথচ, ওই বিপুল অর্থের কিয়দংশ যদি সংশ্লিষ্ট ডিভিশনে লোকাল ট্রেনের সংখ্যাবৃদ্ধি এবং অন্যান্য যান্ত্রিক সমস্যা নিরসনের ক্ষেত্রে ব্যয় করত রেল মন্ত্রক, তবে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যটি আক্ষরিক ভাবেই সাধিত হত।

তন্ময় মান্না, বৃন্দাবনপুর, হাওড়া

বসার জায়গা

কিছু দিন আগে দক্ষিণ বারাসত থেকে রুবি হাসপাতালের পিছনে পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছিলাম মেয়ের পাসপোর্ট করাতে। এই নিয়ে তিন বার ওই অফিসে আসতে হয়, যে-হেতু অফিস থেকে এক বারেই সব কিছু বলে দেওয়া হয়নি। এমনিতেই এত দূর থেকে যাতায়াত খুবই কষ্টসাধ্য। এর থেকেও আরও কষ্টকর হল যার পাসপোর্ট হবে, তাকে ওই অফিসের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও, বাড়ির লোকেদের বাইরে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রোদ বা বৃষ্টি থেকে বাঁচতে কোনও দোকানের ছাউনির আশ্রয় নিতে গেলে, দোকানিরা দাঁড়িয়ে থাকতে দেন না। পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষ হয়তো সঙ্গত কারণেই এই নিয়ম বলবৎ করেছেন। কিন্তু যাঁদের বাড়ির লোক প্রবীণ, তাঁদের কথা বোধ করি বিবেচনা করা হয়নি। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই, এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করলে আমাদের মতো অনেকেই উপকৃত হবেন।

প্রভাকর মজুমদার, দক্ষিণ বারাসত, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement