Jpe Biden

প্রথম বার

মার্চেই দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়াছিলেন, প্রশাসনে দ্বিতীয় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদটির প্রার্থী হইবেন এক নারী।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২০ ০০:৫৯
Share:

কমলা হ্যারিস। ছবি: রয়টার্স।

আমেরিকায় ডেমোক্র্যাটিক দল ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হিসাবে কমলা হ্যারিসের নাম ঘোষণা করিল। মার্চেই দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়াছিলেন, প্রশাসনে দ্বিতীয় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদটির প্রার্থী হইবেন এক নারী। সেই দিক হইতে কমলা হ্যারিসের মনোনয়ন অপ্রত্যাশিত নহে। তাঁহার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা দীর্ঘ, প্রশাসনিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত। তিনি সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, পরে আমেরিকার সর্বাপেক্ষা জনবহুল রাজ্য ক্যালিফর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন, এখন সেখানকারই সেনেটর। তথাপি আমেরিকা এই মনোনয়নকে ‘ঐতিহাসিক’ বলিতেছে, কারণ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে কমলাই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয়-আমেরিকান নারী। আমেরিকায় ইহার পূর্বে মাত্র দুই জন নারী এই পদে প্রার্থী হইয়াছিলেন, কাহারও ভাগ্যে শিকা ছিঁড়ে নাই। কমলাকে লইয়া তাই শুধু তাঁহার দলেরই নহে, অগণিত আমেরিকাবাসীর বিপুল প্রত্যাশা।

Advertisement

গণতন্ত্রের সুদীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী আমেরিকার এক নির্বাচনপ্রার্থীর ক্ষেত্রেও এই যে ‘নারী’, ‘কৃষ্ণাঙ্গ’, ‘এশীয়-আমেরিকান’ ইত্যাদি অভিধা লইয়া চর্চা হইতেছে, তাহার কারণ সমসময়। ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের অভিঘাত মার্কিন সমাজে এখনও যারপরনাই অনুভূত। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যতই আগাইয়া আসিতেছে, আফ্রিকান-আমেরিকান ও এশীয়-আমেরিকান নাগরিকরা ততই পুলিশি হেনস্থা নির্যাতন ও অবিচারের শেষের শুরু দেখিতেছেন, অন্তত আশা করিতেছেন। ডেমোক্র্যাট দলের ঘোষিত নীতি উদারপন্থী, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটরা বরাবরই সরব, দলের ভোট ব্যাঙ্কেও তাহার প্রতিফলন দেখা যায়। কমলা হ্যারিসকে লইয়া তাই কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয়-আমেরিকানদের স্বপ্ন দেখা সঙ্গত। তাঁহারা জানেন, কমলার মা ভারতীয় তথা এশীয় বংশোদ্ভূত, বাবা জামাইকান, জন্মসূত্রেই তিনি মার্কিন বহুত্ববাদ ও জাতিবৈচিত্রের উত্তরাধিকার ও মূল্যবোধের বাহক। উপরন্তু তাঁহার পড়াশোনা হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটিতে, আমেরিকার বিশিষ্টতম কৃষ্ণাঙ্গ-অধ্যুষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন স্বয়ং অ্যাটর্নি জেনারেল থাকাকালীন শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুদের আইনি অধিকার রক্ষায় কমলার কাজের দৃষ্টান্ত তুলিয়া ধরিয়াছেন। কমলাও বলিয়াছেন, নির্বাচিত হইলে তিনি আমেরিকার উদার গণতান্ত্রিক আদর্শের আবহকে উন্নততর করিবেন। সাম্প্রতিক গণ-আন্দোলনের প্রসঙ্গে বলিয়াছেন, মার্কিন পুলিশ-প্রশাসনের সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।

ইহাও মনে রাখিবার, গত বৎসরের গোড়ায় কমলা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে নিজেকে পেশ করিয়াছিলেন। প্রাথমিক বিতর্কগুলিতেও যোগ দিয়াছিলেন, ক্ষেত্রবিশেষে জো বাইডেনের সমালোচনা করিতেও কুণ্ঠিত হন নাই। কমলার সেই যাত্রা অবশ্য বেশি দূর অগ্রসর হয় নাই, মানুষ তাঁহাকে সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখিতে প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। সাম্প্রতিক কালের বর্ণবাদবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের আবহে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান দলের প্রতি নাগরিক সমাজ বীতশ্রদ্ধ, ডেমোক্র্যাটদের পায়ের তলার মাটি ক্রমশ যেন পোক্ত হইতেছে। কমলা হ্যারিস কি পারিবেন, দেশের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হইতে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement