সম্পাদক সমীপেষু: কোন কীটনাশক

পতঙ্গবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, জনস্বাস্থ্যের জন্য অনুমোদিত কীটনাশকই ব্যবহার করতে হবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৮ ০৯:৫০
Share:

ডেঙ্গি প্রতিরোধের বিষয়ে প্রতিবেদনটিতে (‘মুখ নয়, প্রাণ বাঁচানো চাই’, ২১-৪) পশ্চিমবঙ্গে মশা নিয়ন্ত্রণের সমস্যাগুলি উঠে এসেছে। এ বিষয়ে সুফল পেতে হলে পঞ্চায়েত স্তর থেকে রাজ্য স্তর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের মশা নিয়ন্ত্রণের রূপরেখা সমান ভাবে অনুসরণ করা উচিত। এই রূপরেখা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা স্বীকৃত। সেই সঙ্গে, অভিজ্ঞ পতঙ্গবিদদের তত্ত্বাবধানে নবনিযুক্ত পতঙ্গবিদদের অন্তত তিন মাসের ফিল্ড ও ল্যাবরেটরি প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে পতঙ্গবিদদের অধীনে পতঙ্গ সংগ্রহকারী থাকেন, যাঁরা দল গঠন করে কাজ করেন। তাতে পরিসংখ্যান সংগ্রহ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এবং নিয়মিত ভাবে হয়।

Advertisement

বলা দরকার, যে মশা বা তার লার্ভার জন্য যে কীটনাশক প্রযোজ্য, শুধুমাত্র সেগুলিই ব্যবহার করা উচিত। পতঙ্গবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, জনস্বাস্থ্যের জন্য অনুমোদিত কীটনাশকই ব্যবহার করতে হবে। কারণ, পারিপার্শ্বিক জৈব জীবনের উপর কীটনাশকের প্রভাবের কথাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

শেষে বলতে চাই, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তার জন্য চাই জনচেতনা।

Advertisement

পেনশন মলম

‘ক্ষত সারাতে খোঁজ পেনশন মলমের’ (১৮-৩) শীর্ষক খবরে পড়লাম, দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভার ভোট, সেই কারণে ইপিএফ পেনশনের অঙ্ক বাড়ানোর কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার। যাঁরা ন্যূনতম পেনশন ১০০০ টাকা পান, তার নিয়ম বদল করে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা করা হবে, যাতে ১৪ লক্ষ ইপিএফ পেনশনভোগী উপকৃত হবেন। আর এই বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রীর প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বিবেচনাধীন। তাই পিএফের ৫ কোটি সদস্যের ভোট পেতে এই প্রস্তাব কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই টাকায় কী ভাবে পেনশনভোগীদের জীবন যাপন হবে? অনেক পেনশনভোগীর শেষ ক’টা দিন জীবন অতি কষ্টে অতিবাহিত হয় এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যায় প্রয়োজনীয় ব্যবহৃত ওষুধের দাম অতিরিক্ত বাড়ায় কী যে কষ্ট, একমাত্র ভুক্তভোগীরাই বুঝছেন।

২০১২-১৩ সালের পিএফের মোট উদ্বৃত্তের একটি খতিয়ান উল্লেখ করছি, প্রায় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার দাবিহীন সদস্যের আড়াই লক্ষ কোটি টাকা এবং দাবিহীন পেনশনের ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়া ইডিএলআই (বিমা)-এর প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা সুদ-সহ বিশাল পরিমাণে কেন্দ্রীয় কোষাগারে জমা আছে। সমস্ত টাকা শ্রমিকদের বেতন থেকে নেওয়া। সুতরাং এই টাকার কিছু অংশ কি পেনশনভোগীদের স্বার্থে ব্যয় করা যায় না? ১৯৯৫ সালের নভেম্বরে চালু হওয়া ইপিএফ পেনশন প্রকল্পের রূপকার তথা সোশ্যাল সিকিয়োরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (এসএসএআই)-র সেক্রেটারি বি এস সোম বলেছিলেন, বিশ্বের সব পেনশন প্রকল্পে, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে প্রাপ্য বাড়ে। কিন্তু ইপিএফের পেনশনের ক্ষেত্রে তা বাড়ে না।

আলেফ রহমান কলকাতা-৬৩

ভবিষ্যৎ কী?

বর্তমানে পেনশন নির্ধারিত হয় ১৫০০০ টাকা সর্বাধিক বেতন ও চাকরির মেয়াদ ধরে (নভেম্বর ১৯৯৫ থেকে অবসর পর্যন্ত)। (১৯৯৫ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত ৫০০০ টাকা এবং ২০০৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ৬৫০০ টাকা সর্বাধিক বেতন ধরা হত)। এই পেনশন নির্ধারিত হয় একটি জটিল সূত্র মারফত। সূত্রটি হল, ১৫০০০ টাকা গুণিতক চাকরির মেয়াদ (নভেম্বর ১৯৯৫ থেকে অবসর পর্যন্ত), যা হবে তাকে ৭০ দিয়ে ভাগ করলে এই পেনশন নির্ধারিত হবে। উল্লেখ্য, এই প্রকল্প অবসরের বয়স ৫৮ বৎসর ধরা হয়। আমি ২০০৫ সাল (অবসর কাল) থেকে আজ অবধি প্রতি মাসে ১৫২১ টাকা করে একই হারে পেনশন পেয়ে আসছি।

২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে সুপ্রিম কোর্ট ৪/১০/২০১৬ তারিখের এক আদেশে এই পেনশন নির্ধারণ করার জন্য ১৫০০০ টাকার পরিবর্তে পেনশন প্রাপকের সর্বোচ্চ বেতন (অবসরের সময়) ধরে হিসাব করতে বলেছে। তাতে সবারই পেনশন কিছু কিছু বাড়বে। অল্প সংখ্যক পেনশনপ্রাপক সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর নতুন হারে পেনশন পেতে শুরু করেছেন।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড পর্ষদ (সেন্ট্রাল ট্রাস্টি বোর্ড) বা কেন্দ্রীয় সরকার সেটা সকল পেনশনভোগীর ক্ষেত্রে মানতে চাইছে না। এই ব্যাপার নিয়ে বিভিন্ন হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে এবং চলছে। তা হলে আমাদের মতো পেনশনভোগী ও তাঁদের পরিবারের ভবিষ্যৎ কী?

তাপস ভট্টাচার্য ব্যান্ডেল, হুগলি

পক্ষপাত কেন

রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে ঘোর অ-গণতন্ত্রের পরিবেশের জন্য দেবাশিস ভট্টাচার্য বর্তমান শাসকদের সঙ্গে বিরোধীদেরও দায়ী করেছেন (‘বিরোধীরাও কলঙ্কমুক্ত নয়’, ২০-৪)। বাম রাজত্বের অ-গণতন্ত্রের ইতিহাস, এবং বিজেপি দলের চেহারায় হিংস্র বর্তমানকেও তিনি সন্ত্রাসের কারণ হিসেবে দেখেছেন। এতে ভুল নেই। সমস্যাটা হচ্ছে তাঁর খণ্ডিত দৃষ্টি নিয়ে। বাম রাজত্বে সন্ত্রাস হয়েছিল বলে বর্তমান শাসনেও সেটা চলবে কেন, কেন ‘সন্ত্রাসের চেহারা আরও বেপরোয়া’ হয়ে উঠবে— এ প্রশ্নটা তিনি শাসকের চোখে চোখ রেখে করছেন না। উল্টে তাঁর বিচারে— “যেখানে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ন্যূনতম পরিস্থিতি তৈরি হবে, সেখানেই প্রতিরোধের চেষ্টা আগ্রাসী ভূমিকা নেবে।’’ বাংলা ভাষার সামান্য জ্ঞানে জানি, ‘প্রতিরোধ’ শব্দটা ইতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়— আক্রমণের মতো নেতিবাচক অর্থে নয়।

এর পরে লেখকের অমোঘ হতাশ্বাস, “এটাই চিরকালের অলিখিত নিয়ম। আর কে না জানে— জোর যার, মুলুক তার।’’ এই ‘অলিখিত’ নিয়ম মেনে নিলে তো আর কিছু করার থাকে না— সংবাদপত্রে প্রবন্ধ লেখারও কোনও যুক্তি থাকে না।

বিজেপি কেমন দল, তা সামান্য ওয়াকিবহাল লোকই জানেন। কিন্তু সে দলের উত্থানের পিছনে তৃণমূল দলের দুর্নীতি-একাধিপত্য-সন্ত্রাস চক্রের ভূমিকাটা নিয়ে প্রশ্ন না তুলে, সন্ত্রাস-মিথ্যাচার-বিদ্বেষী রাজনীতি যার সহজাত সেই বিজেপিকে দুষে কী লাভ? সবাই জানে, কী ভাবে
এক দিকে শাসক দলের সম্প্রদায়ভিত্তিক উন্নয়নের বিষাক্ত নীতি, এবং অন্য দিকে বিরোধীশূন্য রাজনীতির ফোকর গলে, এবং ‘মারের বদলে মার’-এর মতো জনমোহিনী স্লোগান দিয়ে বিজেপি নিজের প্রভাব বাড়াচ্ছে।

শ্রীভট্টাচার্য লিখেছেন, “ক্ষমতাসীনরা সর্ব কালেই বেপরোয়া হতে অভ্যস্ত। এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। তৃণমূল এখন সেই দায় বইছে।’’ ব্যস, এইখানেই শেষ? আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামো, আমাদের বহু কষ্টার্জিত বহুদলীয় নির্বাচনী ব্যবস্থা, সব কিছুর বিসর্জনকে ভবিতব্য বলে মেনে নেব? অতীত টেনে এনে বর্তমান শাসনের অন্যায়কে বৈধতা দেব? শাসককে উত্তর দিতে হবে না, কেন এখনও রাস্তায় দাঁড়িয়ে লাঠিভাঁজা বিজেপি নেতা বা বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া তৃণমূল নেতা জেলের বাইরে?

বুদ্ধিচর্চায় হতাশ প্রশ্নহীনতার অনুমোদন নেই। মস্তিষ্ক এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন তুলতে বলে— মেনে নেওয়া নয়, বিদ্রোহ করা, চলতে থাকা দুঃশাসনকে সয়ে যাওয়া নয়, তার বিরুদ্ধে কথা বলতে বলে। শাসকের আক্রমণের বিরুদ্ধে এটা শাসিতের প্রতিরোধের অংশ।

লিয়াকত আলি উদয়নারায়ণপুর, হাওড়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement