দিল্লির রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে তিতিবিরক্ত ব্যক্তির নাম কী? ঠিক উত্তর দিতে পারার জন্য কোনও পুরস্কার নেই। হরিশ রাওয়ত। কংগ্রেসে পঞ্জাবের ভারপ্রাপ্ত নেতা। আগামী বছরের গোড়ায় তাঁর নিজের রাজ্য উত্তরাখণ্ডেও বিধানসভা নির্বাচন। মনমোহন জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ছেড়ে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন হরিশ। কিন্তু ২০১৭-য় ভোটে কংগ্রেস হেরে গিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসে। ৭৩ বছরের রাওয়তের বাসনা, তিনি ফের কংগ্রেসকে উত্তরাখণ্ডে ক্ষমতায় ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। কিন্তু পঞ্জাবে অমরেন্দ্র সিংহ-নভজ্যোত সিংহ সিধুর বিবাদ সামলে নিজের রাজ্যে সময়ই দিতে পারছেন না। একটি খবরে প্রকাশ, তিনি না কি সনিয়া গাঁধীর কাছে পঞ্জাবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। কিন্তু সনিয়াই তাঁকে ছাড়তে নারাজ। কারণ, অন্য কেউ পঞ্জাবের এই ঝঞ্ঝাটে ঢুকতেই রাজি নন। কংগ্রেসের নেতারা জনান্তিকে বলছেন, পঞ্জাবের গোলযোগ থেকে মুক্তি পেলে হরিশ নিশ্চিত ভাবে হরিদ্বারের গঙ্গায় গিয়ে ডুব দেবেন!
কর্মক্লান্ত: সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণ সামলাচ্ছেন হরিশ রাওয়ত, পাশে নভজ্যোত সিংহ।
কানহাইয়ার সতর্কতা
কোভিড সতর্কতায় কোনও ঢিলে নেই কানহাইয়া কুমারের। সম্প্রতি, কংগ্রেসে যোগদানের দিন আলোকচিত্রীদের শত অনুরোধেও তিনি মাস্ক নামালেন না মুখ থেকে। বরং, সাফ জানিয়ে দিলেন, কোভিড প্রোটোকলের অন্যথা করবেন না। পরে বলতে উঠে, উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করলেন, মাইক যেন ভাল করে স্যানিটাইজ় করে দেওয়া হয়। কারণ, অনেকেই তো তাঁর আগে ওই মাইকের কাছে মুখ নিয়ে বক্তৃতা করেছেন। কথা বলার সময়টুকু কেবল মাস্ক খুলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তার পরই আবার যথাস্থানে। তবে মুখ না দেখা গেলেও, তাঁর এবং কংগ্রেসকে সমর্থন জানাতে আসা গুজরাতের নির্দল বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণীর সাজপোশাক অবশ্য খুশি করেছে চিত্রগ্রাহকদের। বামমনস্ক কানহাইয়া পরেছিলেন লাল, এবং দলিত নেতা জিগ্নেশের পরনে ছিল দলিত রাজনীতির প্রতীক নীল রঙের কুর্তা।
তৃতীয় ডোজ়ের পরে
দেশের সবচেয়ে নামজাদা, ধনী ও বাঘা আইনজীবীরা কি কোভিডকে ভয় পান? তাঁরা কি কোভিডের টিকা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেন? তাঁরা কি দু’ডোজ় টিকা নিয়ে ফেলেছেন? কেমন হয় তাঁদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা? সুপ্রিম কোর্টে ভার্চুয়াল শুনানির ফাঁকে হরিশ সালভে ও মুকুল রোহতগির মধ্যে এই নিয়ে আলোচনায় কান পাতার সুযোগ হল। লন্ডন থেকে সালভে বললেন, “আমি নাতি-নাতনিকে দেখতে ভারতে যাব ভাবছি। তাই সবেমাত্র তৃতীয় বুস্টার ডোজ় নিয়েছি।” রোহতগি বললেন, “আমিও ভারতে দু’ডোজ় টিকা নেওয়ার পরে দুবাইতে তৃতীয় ডোজ় নিয়ে ফেলেছি। এখন শুনছি চতুর্থ ডোজ় নেওয়া উচিত।”
গুণমুগ্ধ মাণ্ডবিয়া
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি একশো শতাংশ আনুগত্য রয়েছে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের। সেটাই বর্তমান সময়ে স্বাভাবিক। তবুও কখনও কখনও মৃদু গুঞ্জনের মতো দিল্লির বাতাসে শোনা যায় অটলবিহারী বাজপেয়ীর নাম। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারত আমেরিকা স্বাস্থ্য সংলাপের প্রথম অধিবেশনটি যেমন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া অনুষ্ঠানের অন্তিম বক্তৃতায় স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সদ্যসমাপ্ত আমেরিকা সফরের কথা। সেখানে মোদী যে ভাবে প্রতিষেধকের দুনিয়াজোড়া বণ্টনব্যবস্থার দিকে জোর দিয়েছেন, সে বিষয়টির সশ্রদ্ধ উল্লেখ করতেও দেখা গেল মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মাণ্ডবিয়াকে। তবে সেই সঙ্গে তাঁর বক্তৃতায় উঠল বাজপেয়ীর নামও। বললেন, “২০০০ সালের কথা আজ মনে পড়ছে। সেই সময় আমেরিকা সফরে গিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীজি ভারত-আমেরিকার বন্ধুতার ছবিটি এঁকেছিলেন।”
ভক্ত: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া।
আলোয় ফেরা
দিল্লি, ইনদওর আর মান্ডি আইআইটি-র নতুন ডিরেক্টর বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। শাস্ত্রী ভবনে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অফিসে ফাইল নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন কর্তারা। শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ, নিজ নিজ পছন্দের তালিকা নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা। এমন সময় ওই দফতর তথা গোটা শাস্ত্রীভবন ডুবে গেল গভীর অন্ধকারে! করিডরগুলিও ঘুটঘুট করছে। অফিসাররা মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে বসে রয়েছেন! দিল্লির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় শাস্ত্রীভবনে লোডশেডিং! বেশ কিছু ক্ষণ পর অবশ্য ফিরে এল আলো। প্রাণ ফিরে পেল ভবনটি। শুরু হল বৈঠক।