দিল্লি ডায়েরি। —ফাইল চিত্র।
জি২০ সম্মেলন উপলক্ষে নয়াদিল্লিকে সাজাতে দু’ডজন জলের ফোয়ারা বসানো হয়েছিল। সম্মেলন মিটে গিয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আলোর ঝর্নাধারায় ফোয়ারায় জলের খেলা চলবে। তবে কোনও ফোয়ারার সঙ্গেই জলের সংযোগ নেই। তাই নয়াদিল্লি পুরসভা ও দিল্লি জল বোর্ড মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ট্যাঙ্কারে করে পরিশোধিত জল জোগানো হবে ফোয়ারায়। জি২০ সম্মেলনের সময় রোজ ৩৫টি ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহ করা হচ্ছিল। এক-একটি ফোয়ারায় ১২ হাজার লিটার জল দরকার। প্রতি দিন ১ হাজার লিটার করে জল সরবরাহ করতে হবে। দিল্লির রাস্তায় দু’পাশে যে সব ফুলের টব বসানো হয়েছে, তাতেও জল ঢালা হবে। আপাতত আগামী আট মাস ফোয়ারায় জলের খেলা চলবে। তার জন্য আপাতত ২ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
সমারোহ: দিল্লিতে আলোর ফোয়ারায় সাজ। —ফাইল চিত্র।
মোহনবীণায় বাঙালি
প্রায় ৫০ বছর পরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বেজে উঠল মোহনবীণা। জি২০ সম্মেলন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আয়োজিত নৈশভোজে মোহনবীণা ও সুরশৃঙ্গারের মূর্ছনায় বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান, রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মুগ্ধ করলেন বঙ্গসন্তান জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। হাওড়ার বালির বাসিন্দা জয়দীপ সঙ্গীত নাটক অকাদেমির বিসমিল্লা খাঁ পুরস্কারজয়ী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সরোদ, সুরশৃঙ্গার ও মোহনবীণা শিল্পী। ফেব্রুয়ারির ‘মন কি বাত’-এ সুরশৃঙ্গার নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই কার্যত বিস্মৃত সুরশৃঙ্গার ও মোহনবীণা বাজাতে জয়দীপকে বিশেষ অনুরোধ করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক।
সুরশৃঙ্গার বাজাচ্ছেন জয়দীপ। —ফাইল চিত্র।
আলাদা হাসপাতাল চাই
অনুব্রত ও সুকন্যা মণ্ডলের মতো ইডি-র অধিকাংশ মামলারই শুনানি হয় বিচারপতি দীনেশ কুমার শর্মার এজলাসে। ইডি-র হাতে গ্রেফতারির পর অনেক ‘ভিআইপি’ অভিযুক্ত শারীরিক অসুস্থতার যুক্তি দিয়ে হাসপাতালে ভর্তির আর্জি জানান। বিচারপতি শর্মা তাই ঠাট্টা করে, ইডি-র সরকারি আইনজীবীকে বলেছেন, অভিযুক্তদের জন্য আলাদা হাসপাতাল তৈরি করতে হবে। ইডি এত ‘হাই প্রোফাইল’ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে যে, তাঁদের পুলিশি হেফাজতে বা জেলে থাকার অভ্যাসই নেই। তাঁরা সাধারণ হাসপাতালে থাকতেও পছন্দ করেন না। কারণ তাঁরা আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসার সঙ্গে অভ্যস্ত।
‘বড় মাছ’
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত নাগপুরে ছাত্রছাত্রীদের অনুষ্ঠানে গল্পচ্ছলে জানালেন, জ়েড প্লাস নিরাপত্তা পেয়ে গোড়াতে খুবই খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু এক দিন তাঁর চোখ খুলল। পুণে রেলস্টেশনে নেমেছেন, সঙ্গে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকলস্কর পুলিশবাহিনী। সে দিনই বুঝেছিলেন সাধারণ মানুষ পুরো ব্যাপারটিকে কী ভাবে দেখেন! ভোরবেলা পুলিশের দৌড়ঝাঁপে স্টেশনে ঘুমিয়ে থাকা সাধারণ মানুষ ধড়ফড় করে উঠে বসেছেন। এমনই এক দিশেহারা দম্পতির পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে আরএসএস প্রধানের কানে এল, স্বামীটি বলছেন— “মনে হচ্ছে কোনও বড় মাছ জালে ধরা পড়েছে!” ভাগবত বলেন, “সে দিনই বুঝলাম সারসত্যটা।”
গডকড়ীর আফসোস
সাধ ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময়ই দেশে জরুরি অবস্থা জারি হল। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী জড়িয়ে পড়লেন সঙ্ঘ পরিবারের কাজে। রাতে প্যামফ্লেট বিলি করতেন। তাই বোর্ড পরীক্ষার ফল আশানুরূপ হল না। পেলেন ৪৯.২৫%। এঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির বিষয়টি কান ঘেঁষে বেরিয়ে গেল, কারণ তার জন্য চাই অন্তত ৫০%। এই ক্ষোভে পরে সাতটি ডি লিট উপাধি পেলেও নামের আগে কখনও ডক্টর লেখেননি। এক অনুষ্ঠানে এই ঘটনা জানিয়ে গডকড়ী বললেন, “যে ইঞ্জিনিয়ারই হতে পারেনি, সে কী করে নামের আগে ডক্টর বসায়!”
খেদ: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকরী। —ফাইল চিত্র।
পাতে আমিষ কই?
জি২০-র সব কিছুই প্রশংসনীয় হলেও, মেনু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিন দিনের অনুষ্ঠানে আমিষ তো ছিলই না, উল্টে ভারতীয় ও কন্টিনেন্টালের জগাখিচুড়িতে ভারতীয় ও বিদেশি উভয় পক্ষেরই খাওয়া মুশকিল হয়েছে। অনেকেই পেট ভরিয়েছেন স্যুপ ও মিষ্টিতে। স্পেনের সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি দিয়েগো প্রথম দিনের পরে আর খাওয়ার জায়গার দিকে যাননি। বললেন, “রাতে হোটেলে গিয়েই খাচ্ছি। সবচেয়ে পছন্দ তন্দুরি রুটি ও মুর্গ মালাই টিক্কা।” বাকি ভারতীয় আমিষ খাবারও তাঁর প্রিয়। সময় পেলেই ঢুঁ মারছেন চাঁদনি চকের পরান্ঠে ওয়ালি গলিতে।