সাঁওতালিতে বক্তৃতা দিলেন সরোজিনী
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু কবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সংবিধানের তফসিল-ভুক্ত ২২টি ভাষাতেই সাংসদরা বক্তৃতা করতে পারবেন। কিন্তু মুশকিল হল, দিল্লিতে সব ভাষার অনুবাদের লোক কই? ভাষা জানলেই তো হবে না। সাংসদের বক্তৃতার সঙ্গে সঙ্গেই অনুবাদ করে যেতে হবে। যাতে অন্য সাংসদ, মন্ত্রীরা কানে হেডফোন পরে বুঝতে পারেন। কঠিন কাজ। তাই এত দিন সাঁওতালি ভাষার অনুবাদক মিলছিল না। শেষে জেএনইউ-তে পিএইচ ডি গবেষণারত প্রীতিপ্রিয়া মারান্ডির খোঁজ মেলে। লিখিত পরীক্ষা, ভাষার দক্ষতায় উতরে যান তিনি। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে চলতি অধিবেশনে সাঁওতালি ভাষায় বক্তৃতা দিয়েছেন ওড়িশার সরোজিনী হেমব্রম। দাবি তুলেছেন, অলচিকি লিপির জনক রঘুনাথ মুর্মুকে ভারতরত্ন দেওয়া হোক।
মাতৃভাষা: শীতকালীন অধিবেশনে বিজেডি সাংসদ সরোজিনী হেমব্রমn মাতৃভাষা: শীতকালীন অধিবেশনে বিজেডি সাংসদ সরোজিনী হেমব্রম
সংসদে নবদম্পতি
লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার, প্রয়াত পূর্ণ সাংমার কন্যা আগাথা মধুচন্দ্রিমা কাটছাঁট করে সংসদের অধিবেশনে যোগ দিলেন। উপায় কী! তাঁর দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মেঘালয়ে বিজেপির জোট শরিক। আগাথার দাদা কনরাড সাংমা মুখ্যমন্ত্রী। আর এক দাদা জেমস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর দল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধী। তাই সংসদে হাজির থেকে বিল বিরোধিতা ও ভোটদানে বিরত থেকে রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করা জরুরি ছিল। সদ্য বিবাহিতা আগাথার সঙ্গে দিল্লি এসেছিলেন ডাক্তার-স্বামী প্যাট্রিক রংমা মারাকও। প্রধানমন্ত্রী থেকে বিরোধী, সকলের উষ্ণ অভিনন্দন কুড়োলেন নবদম্পতি।
ছাত্রসংখ্যা এক
সাংসদদের ক্লাস। কিন্তু ছাত্র মাত্র এক জন। উত্তরপ্রদেশের এক দিনের মুখ্যমন্ত্রী জগদম্বিকা পাল। সংসদের অধিবেশনের সময় সাংসদদের জন্য ক্লাস বসে। নতুন বিলের খুঁটিনাটি বুঝিয়ে বলেন অফিসাররা। ক্লাসে জনা পঞ্চাশ সাংসদের ভিড় হয়ই। লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশের ঠিক পর দিনই ‘অ্যান্টি-মেরিটাইম পাইরেসি’ বিল নিয়ে ক্লাস হচ্ছিল। মধ্যরাত পর্যন্ত লোকসভায় ছিলেন বলে অনেকেই বুঝি পর দিন দুপুরে আলসেমি করছিলেন। তাই নতুন বিল নিয়ে পড়াতে এসে অফিসাররা অবাক। জগদম্বিকা ছাড়া আর কেউ নেই। ক্লাস শেষে জগদম্বিকাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলেন বিদেশ মন্ত্রকের কূটনীতিকরা।
শুধু নেই রক্তচাপ
কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। মিঠেকড়া মেজাজের জন্য খ্যাত আইনজীবী রাজীব ধবন দাবি তুললেন, মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো হোক। বিচারপতি এন ভি রামানা বললেন, ‘সকলের কথা শুনব। তার পরে সিদ্ধান্ত নেব। আপনি খুশি?’ ধবনের জবাব, ‘ডাক্তাররা বলেন, আমার সব রোগ রয়েছে। শুধু রক্তচাপ নেই। কারণ আমি কখনও অখুশি হই না।’ বিচারপতি রামানা মুচকি হাসলেন, ‘সেটা কারণ নয়। আসল কারণ, আপনি রক্তচাপটা আমাদের পাঠিয়ে দেন!’
ভয়ঙ্কর আসন
রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন দুঁদে আমলা মণীশ গুপ্ত নাজেহাল! এ বার ঠিক তাঁর পাশে ও বেঞ্চের একদম ধারে বসছেন এআইএডিএমকে-র বালাসুব্রহ্মণ্যম। যিনি অশীতিপরই শুধু নন, প্রস্তরবৎ-ও! মণীশবাবু আসন থেকে যত বার বাইরে বেরোতে চান, টলাতে পারেন না বালাসুব্রহ্মণ্যমকে! জবাব আসে, ‘অন্য দিক দিয়ে যান।’ ফলে পাঁচ মহিলা সাংসদকে টপকে, আলোচনা চলাকালীন সবার দৃষ্টি কেড়ে রীতিমতো যুদ্ধ করে মণীশবাবুর নিষ্ক্রমণ। আবার, এক হ্যান্ডআউট পার্শ্ববর্তীর কাছে চেয়ে ধমকও খেয়েছেন: ‘নিজে উঠে নিয়ে নিন।’ খবর, তৃণমূল সাংসদ বেঞ্চ-বদলের তদ্বির করছেন!
পশ্চিমবঙ্গের থেকে গুজরাতে ঢের বেশি শীত পড়ে। তাই দিল্লির ডিসেম্বরে গুজরাতিরা কাবু হন না! দু’দলের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ যখন তুঙ্গে, তখনই ঠান্ডা নিয়ে আলোচনায় মগ্ন অমিত শাহ এবং সুখেন্দুশেখর রায়। তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা মাফলার, শীতবস্ত্র চাপিয়ে সংসদে আসছেন। অমিত শাহ যথারীতি জওহর কোটে। সুখেন্দুকে ঈষৎ হালকা চালে শাহি প্রশ্ন, ‘কেমন ঠান্ডা এ বার বাংলায়?’ সঙ্গে টিপ্পনী, ‘গুজরাতে অনেক বেশি ঠান্ডা বাংলার চেয়ে!’ বিজেপির সভাপতিকে তৃণমূলের রাজ্যসভা নেতার পাল্টা, ‘আমার বয়স আপনার থেকে অনেক বেশি। সেটাও মাথায় রাখতে হবে!’