হিন্দি ‘দিল্লি’ বনাম ইংরেজি ‘ডেলহি’
প্রথমে কিলা রাই পিথোরা। তার পর সিরি, তুঘলকাবাদ, ফিরোজাবাদ, দীনপনাহ, শাহজানাহবাদ। সব শেষে দিল্লি। শাসক বদলেছে, নতুন শহর হয়েছে দিল্লির বুকে। এখন দেশের রাজধানীর নাম ইংরেজি বানানে ‘ডেলহি’, হিন্দি বা উর্দুতে ‘দিল্লি’। বিজেপি জমানায় আগেই দাবি উঠেছিল, দিল্লির নাম বদলে হস্তিনাপুর বা ইন্দ্রপ্রস্থ হোক। অনেকের বিশ্বাস, দিল্লিতেই ছিল পাণ্ডবদের রাজধানী। ইতিহাস ও মহাকাব্যের লড়াইয়ের মধ্যেই বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ বিজয় গোয়েল দাবি তুলেছেন, ‘দিল্লি’র ইংরেজি বানানও ‘দিল্লি’ই হোক, ‘ডেলহি’ নয়। ওতে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, বিশেষত বিদেশিদের মধ্যে। জোর বিতর্ক। ইরফান হাবিবের মতো ইতিহাসবিদ অবশ্য দাবি নাকচ করে বলেছেন, এতে অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু হবে না।
নাম-মাহাত্ম্য: রেল স্টেশনের সাইনবোর্ড। এই দুই বানান নিয়েই বিতর্ক।
‘মিষ্টি’ কথা
রাজনীতির ময়দানে প্রবল বৈরিতা। তাতে সৌজন্যের আলাপ আটকাচ্ছে না। তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সেখানে লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোদী একে অন্যের দাড়ি নিয়ে কথা বলেছেন! কে কত দিন দাড়ি রাখছেন, কারটা কত ভাল, তা নিয়ে রসিকতা হয়েছে দু’পক্ষের। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরের বার তিনি তাঁর এলাকা থেকে মিষ্টি নিয়ে আসবেন। বাংলার মিষ্টান্নে তৃপ্ত মোদী তৃণমূল সাংসদদের জানিয়েছেন ‘দিদি’র মিঠাই পাঠানোর কথা।
হাওয়া যেমন
পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা মানুষদের জন্য দিল্লিতে তৈরি হয়েছিল ইপিডিপি কলোনি। সেটাই এখন চিত্তরঞ্জন পার্ক, দিল্লির বাঙালি পাড়া। বাংলার মাটিতে বিজেপির দাপট বেড়েছে। চিত্তরঞ্জন পার্কেও কি সেই হাওয়া? বাংলার জয়ী বিজেপি সাংসদদের সংবর্ধনা দিল চিত্তরঞ্জন পার্কের ‘ভয়েস অ্যান্ড ইকো অব বেঙ্গল’। সভাপতি প্রবীণ বিজেপি নেতা আনন্দ মুখোপাধ্যায়। দিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, কলকাতাকে লন্ডন বা দিঘাকে গোয়া নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাকে আফগানিস্তান বানাচ্ছেন!
বাঙালিবাবু
হলেনই বা গুজরাত ক্যাডারের অফিসার। তাঁর রসগোল্লা-প্রেম উবে যায়নি তা বলে। সুনীল মিত্র, সুমিত বসুর পরে ফের অর্থ মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ পদে আর এক বাঙালি অফিসার, অতনু চক্রবর্তী। এত দিন অর্থ মন্ত্রকেই বিলগ্নিকরণ দফতরের সচিব ছিলেন। শান্ত স্বভাবের মানুষটি সবাইকে নিয়ে চলতে পারেন, গলা না তুলেই স্পষ্ট নির্দেশ দিতে পারেন। গুজরাত থেকেই নরেন্দ্র মোদীর পছন্দের পাত্র বলে পরিচিত তিনি। সপ্তাহান্তে গল্ফ খেলেন, পোষা কুকুর থাকে সঙ্গে। অবসরে বই পড়তেও ভালবাসেন অতনু।
দায়ভার
সাদা জামা, কালো বা ছাইরঙা প্যান্ট। টানটান লম্বা চেহারা। দিল্লিতে এই পোশাকেই পরিচিত ডি রাজা। তামিলনাড়ুর তিরুভান্নামালাই জেলার দলিত অধ্যুষিত গ্রাম চিথাথুরের প্রথম স্নাতক। ছাত্র থাকাকালীনই কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ। যুব সংগঠনের নেতা ছিলেন। প্রেমে পড়েন কেরলের খ্রিস্টান পরিবারের মেয়ে অ্যানি-র। অ্যানিও তখন থেকেই মহিলাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনে নেমে পড়েছেন। গত সপ্তাহে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটল ডি রাজার জীবনে। সিপিআই-এর নতুন সাধারণ সম্পাদক হলেন। রাজ্যসভা থেকে অবসর নিলেন। বাম নেতারা
এ বার তাকিয়ে রাজা-অ্যানির কন্যা অপরাজিতার দিকে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়ে গিয়েছে অপরাজিতার।
নবদায়িত্বে: ডি রাজা
দু’জনে
রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য আহ্বায়ক সুখেন্দুশেখর রায় রাজ্যসভা পরিচালনা করছিলেন চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে। ও দিকে তথ্য অধিকার সংশোধনী বিল নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। মূল বক্তব্যে আসার আগে বিশদে পটভূমি রচনা করছিলেন ডেরেক। অথচ সময় বরাদ্দ মোটে ১১ মিনিট! পাছে সময় নষ্ট হয়, তাই সুখেন্দুশেখর বারবার বলছিলেন, ‘‘আপনি বিলের উপর নজর দিন। বিলের কথা বলুন।’’ জবাবে ডেরেককে বলতে শোনা যায়, ‘‘স্যর আমি বিলের উপরেই বলছি। বলার সুযোগ দিন!’’ কাণ্ড দেখে হাসি চাপতে পারেননি বিজেপি সাংসদরাও।