গুজরাতের পাঞ্চকুনি সমুদ্র উপকূলে স্কুবা ডাইভিং করে সমুদ্রে নিমজ্জিত দ্বারকা নগরীর দর্শন করে এলেন নরেন্দ্র মোদী। একে সামনে ভোট, তায় আধ্যাত্মিক স্থল, তাই প্রধানমন্ত্রীর বসনের রং ছিল গেরুয়া। কিন্তু গোল বেধেছে মাথার ‘হেলমেট’ নিয়ে। জলের তলায় যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ছিলেন, সকলের হেলমেটে কেবল চোখের স্থানটি খোলা হলেও, প্রধানমন্ত্রীর হেলমেটটি এমন ভাবে বানানো যে তাঁর মুখটি অনেকটাই দেখা যাচ্ছিল। বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকে যাওয়া নয়, মুখ দেখানো নিয়েই দুর্ভাবনা! এত দিনে অবশ্য দেশবাসীর অভ্যাস হয়ে গিয়েছে এমন অন্তহীন বিজ্ঞাপন-স্পৃহায়। স্বভাবতই কংগ্রেস টিপ্পনী কেটেছে। সেই টিপ্পনীর ভাষা এবং ভাব নিয়েও অবশ্য প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আপাতত একটিই প্রশ্ন: স্থলে এবং জলে তো মন্দির দর্শন ও পুজো হল, অন্তরিক্ষ কি বাদ পড়বে?
মগ্ন: গেরুয়া রঙের স্কুবা ডাইভারের পোশাকে সমুদ্রতলে পূজারত প্রধানমন্ত্রী। পিটিআই।
নিজমুখে
লোকসভা ভোট কড়া নাড়ছে। মন্ত্রী, সাংসদেরা ফের পরীক্ষায় বসার মুখে। অনেকের চিন্তা, প্রিয় আসনটি পাবেন কি না। আদৌ টিকিট পাবেন কি না, এই চিন্তাও অনেকের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কর্নাটকের ধারওয়াড় নির্বাচনী ক্ষেত্র থেকে বার বার জিতে আসা প্রহ্লাদ জোশী অভিনব কাণ্ড করেছেন। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের মুখে, অন্যের ভরসায় না থেকে নিজেই নিজের রিপোর্ট কার্ড বানিয়ে ফেলেছেন! গত দশ বছরে তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রের উন্নয়নমূলক কাজের পুস্তিকা তৈরি করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে ধারওয়াড়ের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে যেখানে যা সাধুবাদ দিয়েছেন সেগুলি একত্র করা হয়েছে। পুস্তিকার প্রতি পাতায় বড় করে নরেন্দ্র মোদীর এবং তাঁর নিজের ছবি।
গন্ধ বিচার
নতুন সংসদ ভবনের এত অলিগলি যে, সাংসদরাই বাজেট অধিবেশনেও সবটা আবিষ্কার করে উঠতে পারেননি। আগের ভবনটি ছিল বৃত্তাকার। ফলে যেখান থেকে শুরু সেখানেই ফিরে আসতে হয়, চান বা না চান! এই নতুন ভবনকে প্রথমে মনে হয় গোলকধাঁধা। তারই মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার এক দিন একটি রাস্তা খুঁজে পেয়েছিলেন যেখান দিয়ে বিরোধী সাংসদরা লোকসভায় প্রবেশ করেন, মন্ত্রীদের বসার জায়গাটিও সেই পথ দিয়ে কাছে পড়ে। কিন্তু প্রথম দিন সেই পথে গিয়েই প্রায় দমবন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছিল, জানালেন বাঁকুড়ার এই ডাক্তার সাংসদ! সুভাষবাবুর কথায়, পারফিউমের গন্ধে সেই লবির বাতাস ভারী। ঠাট্টার ছলে বলছেন বিজেপি সাংসদ, বিরোধীরা এতটাই দুর্নীতির পাঁকে নিমজ্জিত যে, তাকে ঢাকতে এত সুগন্ধীর প্রয়োজন!
সেন্ট্রাল হলের স্মৃতি
কার্যত দেখাসাক্ষাৎ বন্ধ দুই বাড়ির শরিকে। রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদেরা এই অদর্শনের জন্য দুষেছেন নতুন সংসদ ভবনকেই। নতুন সংসদে পুরনো ভবনের মতো কোনও সেন্ট্রাল হল নেই। যেখানে বসে ভূরিভোজনের সঙ্গেই দু’দণ্ড আলাপচারিতা, প্রবীণের সঙ্গে নবীন সাংসদের পরিচয় এমনকি সুযোগ বুঝে রাজনৈতিক ‘ডিল’ চূড়ান্ত করা— সবই অতীত। তাই লোকসভার শেষ দিনের বিদায়ী বক্তব্যে দানিশ আলি, এম এস রেড্ডির মতো সাংসদেরা স্মৃতি উস্কে দাবি করেছেন, নতুন সংসদে ফিরিয়ে আনা হোক সেন্ট্রাল হল। যাতে ফের অতীতের মতো বেঞ্চ কাঁপিয়ে আড্ডা মারতে পারেন সাংসদেরা।
মন্ত্রী যখন গেছোদাদা
মোদীর মন্ত্রিসভায় কোনও ‘গেছোদাদা’ থাকলে তিনি কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ! এই সপ্তাহে দেড় দিনে তিনি সফর করলেন বেঙ্গালুরু, দিল্লি, জম্মু— মন্ত্রকের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। ঝটিকা সফরে নাকি তিনি বরাবর স্বচ্ছন্দ। জীবপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব রাজেশ গোখলের কথায়, “ওঁকে দেখলে মনে হয় সর্বত্র বিরাজমান। সকালে দেখা যাচ্ছে জম্মুতে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন, আবার বিকেলেই দিল্লির একটি অনুষ্ঠানে হাজির। গত কয়েক বছর এমনটাই চলছে।”
অন্য ভূমিকায়
সচরাচর তিনিই পাদপ্রদীপের আলোয় থাকেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী আপাতত দর্শকাসনে। তাঁর স্ত্রী প্রাক্তন কূটনীতিক লক্ষ্মী মুর্দেশ্বর পুরীর বই সোয়ালোইয়িং দ্য সান নিয়ে গোটা দেশে সফর করছেন দম্পতি। প্রতিটি অনুষ্ঠানে মঞ্চে স্ত্রী, দর্শকাসনে মন্ত্রিমশাই! মঙ্গলবার মুম্বইয়ের অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় সারিতে বসেন হরদীপ। দিল্লির বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গেল, তিনি হলের শেষের সারিতে। তাঁর সামনের সারিতে মন্ত্রকের অফিসাররা।