Bijoli Grill

নববর্ষে জমাটি খানা বিজলি গ্রিলের রেস্তোরাঁতে

তিন পয়সার চা আর চার পয়সার টোস্ট, আজ থেকে সত্তর বছর আগে এই মেনু নিয়েই যাত্রা শুরু হয়েছিল ভবানীপুরের বিজলি সিনেমার পিছনে গ্রিল দিয়ে ঘেরা এক চিলতে জায়গায়। কিছু দিনের মধ্যেই আশুতোষ কলেজের ছেলে-মেয়েদের রসনা তৃপ্ত করতে মাংসের চপ ভেজে পেঁয়াজ কুচি সহযোগে পরিবেশন করতে শুরু করলেন দেবু বারিক। জন্ম হল বাংলার প্রথম কেটারিং সার্ভিসের। এর পরের ঘটনা তো ইতিহাস। নতুন বছরে সাদার্ন অ্যাভেনিউএর বিজলি গ্রিল রেস্তোরাঁর স্বর্গীয় স্বাদের খানার রেসিপি দিলেন এক্সিকিউটিভ শেফ শৈলেন হালদার। দীপ্তি কেবিনের টেবিলে বসে চায়ের কাপে তুফান তুলতেন সে কালের উজ্জ্বল ছাত্ররা। আধুনিক কবিতা থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেহাদ অথবা উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতেন তাঁরা।

Advertisement

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ১৫:২৫
Share:

ছবি: মৃণালকান্তি হালদার।

দীপ্তি কেবিনের টেবিলে বসে চায়ের কাপে তুফান তুলতেন সে কালের উজ্জ্বল ছাত্ররা। আধুনিক কবিতা থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেহাদ অথবা উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতেন তাঁরা। সে কালের মধ্যবিত্ত বাড়ির তর্কপ্রিয় ছাত্রদের পকেট যে গড়ের মাঠ, তা উপলব্ধি করেছিলেন দেবু বারিক। তাই চা, চপ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় দফার চা দিতেন ভালোবেসেই। স্বাধীনতার উন্মাদনায় কলেজ ছাত্রদের সঙ্গে সামিল হয়েছিলেন সেই বিশ-বাইশের ছেলেটিও। ১৯৪৭ সালে দীপ্তি কেবিনের নাম বদলে দিলেন। নতুন নাম হল বিজলি গ্রিল। তত দিনে এই এক চিলতে চপের দোকানের ফিশ ফ্রাইয়ের মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়েছে। কলকাতার অভিজাত ক্লাবে প্রথম রেস্তোরাঁ শুরু করার পর সোজা দিল্লি, গুরুগ্রাম, মুম্বই পাড়ি। রাজধানী ও বাণিজ্য নগরীতে বাঙালি রেস্তোরাঁ হৈহৈ করে চলার পর কলকাতার সাদার্ন অ্যাভিনিউতে শুরু হল বাঙালির নতুন ইটারি। খাবারের গুণে ঝাঁ চকচকে নানান নামী-দামি রেস্তোরাঁর থেকে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে বিজলি গ্রিল।

Advertisement

ব্লু স্পার্কল

বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যৎবাণী নস্যাৎ করে ভয়ানক গরমকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে কালবৈশাখী। তবুও বৈশাখের দিনে ঠান্ডা পানীয়তে চুমুক না দিলে কি মন ভরে?

Advertisement

লিচুর রসের সঙ্গে যুবরানি ডায়নার প্রিয় নীল রঙা (ডায়না ব্লু) ঘন সিরাপ। সঙ্গে সোডা আর স্প্রাইট মিলে এক মন জুড়নো ঠান্ডা পানীয়। লেবুর স্লাইস ও বরফ কুচি মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়। বাড়িতেও ট্রাই করা যায় অনায়াসে।

বেকড ফিশ

মুখে দিলেই মধুর বিস্ফোরণ। এমনই মহিমা কলকাতার সেরা ভেটকি দিয়ে বানানো বেকড ফিশের। চিজ ক্রিমের হোয়াইট সসের আবরণ ভেদ করে গোলমরিচে জারানো টাটকা ভেটকি মাছ অসাধারণ স্বাদু। নতুন বছরের শুরুতে একবার ট্রাই করে দেখতেই পারেন।

উপকরণ

ভেটকির ফিলে: ২০০ গ্রাম

নুন, মরিচ গুঁড়ো: স্বাদ অনুযায়ী

লেমন জুস: ২ চামচ

মিক্সড হার্ব ও অলিভ অয়েল: ২ চামচ

সামান্য চিনি

হোয়াইট ওয়াইন: অল্প

হোয়াইট সস

মিহি করে কুচনো পেঁয়াজ ও রসুন: ২ চামচ

মাখন: ১ চামচ

ময়দা: ২ চামচ

দুধ: আধ কাপ

ক্রিম: ১/৪ কাপ

নুন ও গোলমরিচ গুঁড়ো: স্বাদ মতো

সেলারি কুচি: ২ চামচ

চিনি: ১ চিমটে

চিজ: ২৫ গ্রাম

বেকড ভেজিটেবল উইথ পার্সলে বাটার সেভোরি রাইস

ব্রকোলি, বেবি কর্ন, জুকিনি ( টুকরো করে কাটা): আধ কাপ

ছোট আলু, ইয়েলো স্কোয়াশ: ৩/ ৪ টুকরো

বাসমতী চাল: আধ কাপ

পার্সলে কুচি: ২/৩ চামচ

মাখন ও পেঁয়াজ রসুন কুচি: অল্প

রোজমেরি: ১ চামচ

প্রণালী

মাছে সব উপকরণ মাখিয়ে শেষে হোয়াইট ওয়াইন দিয়ে ম্যারিনেশন করে ৩ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। ইতিমধ্যে হোয়াইট সস বানিয়ে রাখুন। মাখনে পেঁয়াজ, রসুন কুচি দিয়ে ময়দা দিয়ে নেড়ে দুধ ঢেলে ফুটিয়ে নিন। সেলারি কুচি যোগ করুন। শেষে ক্রিম যোগ করুন। নামানোর আগে চিজ দিয়ে ফুটিয়ে নিন।

সব সব্জির টুকরো স্টিম দিয়ে রাখুন। বাসমতী চাল পেঁয়াজ, রসুন ও সেলারি কুচি দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। প্যানে মাখন দিয়ে চাল নেড়েচেড়ে সামান্য জল দিন। তৈরি হলে রোজমেরি দিয়ে নামিয়ে নিন।

মাছ ওভেনে বা গ্রিল প্যানে এ পিঠ ও পিঠ করে গ্রিল করে সব্জি ও ভাত সহযোগে পরিবেশন করুন হোয়াইট সস দিয়ে।

গন্ধরাজ ভেটকি

গন্ধরাজ লেবুর টক টক স্বাদ আর অসাধারণ সুগন্ধে ভরা ভেটকির এই পদ না খেলে যেন জীবন বৃথা। চিকেন প্রেমী বাচ্চারাও চেটেপুটে খাবে গন্ধরাজ ভেটকি।

উপকরণ

ভেটকির ফিলে: দু’পিস

গন্ধরাজ লেবুর রস: ২ বড় চামচ

গ্রিন চিলি পেস্ট: ১ চামচ

রসুন আদার রস: সামান্য

গোলমরিচ ও নুন: স্বাদ মতো

কোটিং এর জন্যে

ময়দা: অল্প

দই: আধ কাপ

ক্রিম: আধ কাপ

গন্ধরাজ লেবুর রস ও সবুজ খোসা মিহি করে কুচি করা: আন্দাজ মতো

নুন, চিনি ও গোলমরিচ: অল্প

চিজ: ২৫ গ্রাম

গন্ধরাজ লেবুর স্লাইস: ২ টুকরো

প্রণালী

মাছের পিস সব মশলা দিয়ে ম্যারিনেশন করে কোটিং করতে হবে। ময়দা, দই, ক্রিম সহ প্রতিটি উপকরণ ভাল করে মাছে মাখিয়ে রাখুন। মাছ যেন কোটিং-এ ডুবে থাকে। কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর ১৫ মিনিট স্টিম করে নিয়ে লেবুর স্লাইস দিয়ে পরিবেশন করুন।

চিকেন চিজ মালাই কাবাব

এক কামড়েই বিস্ময়। চিজ আর কাজু বাটার পরতে মোড়া সেরা চিকেনের টুকরো খেলে মন ভরে যাবে। পুদিনা আর ধনে পাতার চাটনি সহযোগে চিকেন চিজ মালাই কাবাব চিবোতে চিবোতে মনে হবে এটই বোধহয় অমৃতের আধুনিক সংস্করণ।

উপকরণ

বোনলেস চিকেন সুপ্রিমোর টুকরো

আদা রসুন বাটার রস: ২ চামচ

নুন মরিচ গুঁড়ো: স্বাদ অনুযায়ী

কাজু পেস্ট, দই, চিজ: ২ চামচ করে প্রতিটি

প্রণালী

সব কটি উপকরণ একসঙ্গে পেস্ট করে চিকেন ভিতরে ঢুকিয়ে চুবিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এ বার তন্দুরি শিকে গেঁথে তন্দুরে এ পিঠ ও পিঠ করে সেঁকে নিন। পুদিনা ও ধনে পাতার চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন।

কষা মাংস পোলাও

উৎসবের দিনে মাংস না খেলে কি মজা জমে! আর তা যদি হয় বাঙলার সেরা রাধুনির রেসিপি। বাঙালি মতে রান্না খাঁটি গাওয়া ঘি জবজবে জাফরানি রঙে রাঙানো পোলাও-এর সঙ্গে জমে যাবে। এই লা জবাব রেসিপি বাড়িতেও ট্রাই করতে পারেন।

উপকরণ

মাটন টুকরো: ৬ টি

পেঁয়াজ রসুন কুচি: ৪ চামচ

হলুদ ও কাশ্মীরী লঙ্কা গুঁড়ো: স্বাদ অনুযায়ী

কাজু টোম্যাটো ও আদা রসুন বাটা: ১ চামচ করে

চারমগজ বাটা: ১ চামচ

ফোড়নের জন্যে: গোটা গরম মশলা ও তেজপাতা

সর্ষের তেল, সামান্য ঘি

নুন স্বাদ অনুযায়ী

পোলাও-এর জন্যে

সিদ্ধ বাসমতী চাল: ১ কাপ

দুধে ভেজানো জাফরান: আধ কাপ

কাজু ও কিসমিস: আধ কাপ

ঘি: ৪ চামচ

গরম মশলা: ফোড়নের জন্য

নুন, চিনি: স্বাদ অনুযায়ী

প্রণালী

টোম্যাটো, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ, গোটা গরম মশলা, পেঁয়াজ, রসুন দিয়ে মাটন সিদ্ধ করে রাখুন। কাজু, টোম্যাটো, আদা, রসুন বাটা ও চারমগজ দিয়ে গ্রেভি বানিয়ে রাখুন। এ বার প্যানে ঘি-তে তেজপাতা, গোটা গরম মশলা ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। এ বার সিদ্ধ মাংস দিয়ে নেড়ে নিয়ে গ্রেভি ঢেলে দিন। শেষে নুন দিয়ে নামিয়ে পোলাও এর সঙ্গে গরমা গরম পরিবেশন করুন। সিদ্ধ বাসমতীতে জাফরান দেওয়া দুধ ঢেলে রাখুন। প্যানে ঘি দিয়ে গরম মশলা ফোড়ন দিন। সুগন্ধ বেরোলে ভাত ঢেলে দিন। নুন চিনি দিন। কাজু ও কিসমিস ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement