চলে এল পয়লা বৈশাখ। নতুন বছরকে ঘিরে নতুন প্রত্যাশা পূরণে বাঙালির থাকে হাজারও পরিকল্পনা। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পোশাকেও থাকুক নতুন চমক। পয়লা বৈশাখর সাজগোজ একটু স্পেশ্যাল হবে তো বটেই। তবে গরমের কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। আর সে জন্য যেটা সবার আগে দেখতে হবে তা হল পোশাকের রং।
পোশাকের রং যেন এমন হয় যা থেকে ত্বকের কোনও সমস্যা না হয়। আমরা বেশির ভাগ সময় পোশাকের বাইরের দিকটা দেখেই মোহে পড়ে যাই। কিন্তু পোশাকটি কী রং দিয়ে ডাই করা হয়েছে তা খেয়াল করি না। কোনও রাসায়নিক রং ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, এই বিষয়গুলো নিয়ে এক্কেবারে মাথা ঘামাই না। তাই পোশাকের কোয়ালিটি, রং এ সব নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করাটা ভীষণ ভাবে জরুরি। খাদি কিংবা হ্যান্ডলুমের পোশাক এখন ফ্যাশন ইন। কিন্তু বাজার ছেয়ে গিয়েছে নকল রং আর নকল সুতোর পোশাকে। তাই বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় পোশাকটি দু-তিনবার ধুলেই রং উঠে যায়। আবার গরমের সময় দেখা যায় ঘামে শরীরে পোশাক আটকে যায়।
পোশাক খোলার পর দেখা যায় শরীরেও পোশাকের রং লেগে রয়েছে। এই রং রোমকূপ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে হতে পারে মারাত্মক চর্মরোগ। তাই গরমের সময় এমন পোশাক বাছতে হবে যেন তা ন্যাচরাল কালারে ডাই করা থাকে। যে সব পোশাক বেশি উজ্জ্বল সেগুলোতে কিছুটা হলেও রাসায়নিক রং মেশানো থাকে।
তাই সুতির পোশাক কেনার সময় একটু বুঝেশুনেই কিনুন।ন্যাচারাল কালারের পোশাক, যেগুলো রঞ্জক, রিঠার মতো ভেষজ উপাদানে রং করা হয়, তেমন পোশাকেই গরমের সময় ঝলমলে হয়ে উঠুন। এ বারের পয়লা বৈশাখে কোনও ব্রাইট কালার ফ্যাশন ইন নয়।
এর সঙ্গে গরমের সময় বেশি জবরজং পোশাক না পরাই ভাল। গরমের সময় হান্ড্রেড পারসেন্ট কটন পোশাক পরুন। এতে আপনার স্কিন পাবে মোলায়েম অনুভূতি। সুতোতেও যেন অন্য কোনও ধরনের মিশেল না থাকে। গরমের জন্য সুতির শিবোরি আই সুদিং পোশাক খুব ভাল মানাবে। যে কোনও আর্থ কালার, যেমন রাস্ট, ব্রাউন, বেজ চলতে পারে।
মেয়েরা সুতি কিংবা মল বা মসলিনে বানানো র্যাপ অ্যারাউন্ড, শর্ট কুর্তি, নি লেংথ ড্রেস, পালাজো পরতে পারেন। শনিবার পয়লা বৈশাখ। অনেকে মহিলাই প্রাইভেট ফার্মে কাজ করেন। বিকেলে হয়তো কোথাও একটা ছোট্ট পার্টি বা বন্ধুদের গেট টুগেদার রয়েছে। কিন্তু তার আগে অফিস রয়েছে, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।
নো টেনশন, ব্যাগে একটা ডিজাইনার স্কার্ফ রেখে দিন। একটু কায়দা করে স্কার্ফটা পোশাকের উপর পরে নিলেই কেল্লাফতে। আপনি হয়ে উঠতে পারেন মধ্যমণি।
পরতে পারেন শাড়িও। যাতে খুব সামান্য কাজ থাকবে। বেশি কারিকুরি না থকাই ভাল। হিউজ প্রিন্ট গরমের সময় মানায় না। তাই হালকা কাজওয়ালা শাড়ি পরুন। হাফ ইঞ্চির গোন্ডেন বর্ডার দেওয়া সাদা খোলের শাড়িতে ছোট্ট ছোট্ট ব্লক প্রিন্ট, শিবোরি বা বাঁধনি প্রিন্ট করা কাজ থাকতে পারে। এ বার একটু ধূসর শাড়িও পরতে পারেন। শাড়িতে এই ধরনের ট্রেন্ড রয়েছে। হ্যান্ডলুম শাড়ি অনেক দিন ধরেই ফ্যাশন ইন। সঙ্গে রয়েছে আরামও। দেখবেন শাড়িতে যেন মার না থাকে। শরীরের সঙ্গে লেগে থাকা শাড়িই দেখতে বেশি ভাল লাগে। সঙ্গে ব্লাউজের দিকটিতেও বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
শাড়ি এবং ব্লাউজ যেন একই রঙের হয়। কিন্তু দেখবেন ব্লাউজ যেন শাড়ি থেকে দু-তিন টোন শেড উপরে এবং নীচের রং হয়। ধরুন ইয়েলো অকার রঙের শাড়ি পরলেন তবে রাস্ট কালারের ব্লাউজ পরুন। মেরুন রঙের শাড়ির ক্ষেত্রে কালচে মেরুন ব্লাউজ চলতে পারে। অলিভ গ্রিন শাড়ি পরলে গ্রেইস গ্রিন ব্লাউজ পরুন। গ্রে কালারের শাড়ির ক্ষেত্রে অ্যাপেল হোয়াইট রঙা ব্লাউজ পরা ভাল।
এ বার আসা যাক ছেলেদের পোশাকের কথায়। ছেলেরা পালাজো দিয়ে লং কুর্তা পরতে পারেন। বেছে নিতেন পারেন সুতির হাফ হাতা কিংবা ফুল হাতা শার্ট। যাতে শিবোরি কাজ কিংবা হ্যান্ড প্রিন্ট করা থাকবে।
পোশাক সৌজন্যে: অভিষেক নাইয়া।
ছবি: তনয় কর্মকার ও রাহুল হালদার।
মডেল: ইমরান, সৌম্য, মঞ্জুরী, মধ্যমা, রিয়া, বিশ্বজিৎ ও তমোনাশ।