নির্বাচিত হাইকু/ জ্যাক কেরুয়াক
ভাষান্তর: শৌভিক দে সরকার
১৫০.০০
কবি প্রকাশনী
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী কালে আমেরিকার সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে বহুলাংশে প্রভাবিত করেছিল সাহিত্য আন্দোলন ‘বিট জেনারেশন’। প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধকে প্রত্যাখ্যান করেছিল বিট সংস্কৃতি। ১৯৫০-এর দশকে সেই আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন জ্যাক কেরুয়াক। গদ্যের পাশাপাশি কবিতাও লিখতেন, নিজেকে বলতেন ‘জ্যাজ় পোয়েট’। সেই সূত্রেই গ্যারি সিন্ডার্স-এর সংস্পর্শে আসেন, পরিচিতি ঘটে জ়েন বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে। জাপানি হ্রস্ব কবিতা হাইকু-র কথা জানতে পারেন কেরুয়াক। এর পর নিজের মতো করে হাইকু লেখা শুরু করেন, যা পরবর্তী কালে ‘আমেরিকান হাইকু পপ্স’ নামে পরিচিত হয়। আমেরিকায় হাইকু কবিতাকে জনপ্রিয় করার পিছনে অগ্রগণ্য ভূমিকা ছিল তাঁর। উপন্যাস, স্কেচ, জার্নাল, নোট বইয়ে প্রায় হাজারখানেক হাইকু লিখেছিলেন কেরুয়াক। ২০০৩ সালে প্রকাশিত হয় বুক অব হাইকুজ়। এক সাক্ষাৎকারে বিট সংস্কৃতির আর এক প্রধান চরিত্র অ্যালেন গিন্সবার্গ বলেন, “আমেরিকায় একমাত্র জ্যাক কেরুয়াকই জানেন, কী ভাবে হাইকু লিখতে হয়।” এই বইয়ে কেরুয়াকের ১৫০টি হাইকু অনুবাদ করে সঙ্কলন করেছেন শৌভিক দে সরকার।
অনু-সঙ্গ
অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়
৪০০.০০
কারিগর
লেখিকা মনোবিদ। কবিও। ‘ভূমিকা’য় লিখেছেন, তাঁর ব্লগের উদ্দেশ্য ছিল ‘মনস্তত্ত্বের লেন্স দিয়ে সমাজের ঘটনাপ্রবাহকে দেখা’, সঙ্গে জুড়েছেন ‘ব্যক্তিগত যাপন’। কোনও খবর বা ছবি তাঁর ‘মেজাজকে নিশপিশ করতে বাধ্য’ করলে কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে উত্তর-সম্পাদকীয় নিবন্ধ। বইটি এই সব নিবন্ধেরই সঙ্কলন। গদ্যগুলি তিনটি বিভাগে সাজানো। ‘উত্তুরে হাওয়া’ পর্বে ফিরেছেন উত্তর কলকাতার অলিগলিতে, আশি-নব্বই দশকের রংচঙে নস্টালজিয়ায়। ‘মনচিত্র’ পর্বটিতে উঠে এসেছে মানুষের মন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তাঁর বিবিধ অনুভব। ব্লগার হত্যা, অরুণা শানবাগের মৃত্যু, কঙ্কালকাণ্ড— ব্যষ্টি ও সমষ্টির মনোজগতের নানা ক্ষত, অন্ধকার অংশ নিয়ে নাড়াচাড়া করেছেন। প্রেম হারানো, সন্দেহ বাতিকের সহজ সমাধান বাতলেছেন। সমকাম, ধর্ষণ, মি টু আন্দোলনের প্রতি পিতৃতন্ত্রের বিকৃত মনোভাবের প্রসঙ্গও এসেছে। ‘প্যাট্রিয়ার্কি নিয়ে ইয়ার্কি’, ‘বোধবুদ্ধির ব্যাটারি’, ‘বিশ্রীতন্ত্র’, ‘মাইক্রোমুহূর্ত’ প্রভৃতি শব্দবন্ধে তাঁর লেখার
ধরন চিনে নেওয়া যায়। তবে উল্লেখ করা প্রয়োজন, মুদ্রণপ্রমাদে মাঝেমধ্যেই পড়ার তাল কেটেছে। সম্পাদনায় যত্নবান হওয়া উচিত ছিল।
সুন্দরবনের পুঁথি পাঁচালি/ রায়মঙ্গল, গাজী কালু চম্পাবতী, বনবিবি জহুরানামা
গৌতমকুমার দাস
৩৫০.০০
সোপান
নিম্নগাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলকে বলা হয় ‘আঠারো ভাটির দেশ’। ভাটির দেশ অর্থাৎ নিম্নভূমি, জোয়ার জলে প্লাবিত হয়। তাকে নদীবাঁধ দিয়ে চাষবাস করে যে মানুষেরা বসবাস করেন, তাঁরা ধর্মে হয় নিম্নবর্ণের হিন্দু, নয়তো মুসলমান; অতি দরিদ্র। নানা সময়ে যাঁরা তাঁদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁরাই পরে হয়ে উঠেছেন লৌকিক দেবদেবী, পির, গাজি। সে সব ঐতিহাসিক কাহিনিতে অলৌকিকত্ব আরোপ করে সৃষ্টি হয়েছে পুঁথি, পাঁচালি, মঙ্গলকাব্য। দক্ষিণ রায় ও বড় খাঁ গাজিকে নিয়ে লেখা হয় রায়মঙ্গল কাব্য ও গাজী কালু চম্পাবতী পুঁথি। বনবিবি ঐতিহাসিক চরিত্র নয়, সম্ভবত বনচণ্ডী বা বনদুর্গার ইসলামিক সংস্করণ। হিন্দু ও মুসলমান উভয়েই তাঁর পুজো করে। সহজ-সরল ভাটির দেশে ব্রাহ্মণ পুরোহিত বিরল, তাই এঁদের পুজোপাঠ হয় নিজের মতো। পুঁথি পড়লেই মন্ত্রপাঠ, আর তা করতে পারেন যে কেউ। সেই দেবীকে নিয়েই রচিত পাঁচালি বনবিবি জহুরানামা। সুন্দরবনের এমন তিন অসামান্য সম্পদ সঙ্কলিত হয়েছে এই গ্রন্থে। বানান অপরিবর্তিত। এই পুঁথি, পাঁচালি ও মঙ্গলকাব্য নিয়ে কয়েকটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধও রয়েছে বইটিতে।