পরিকাঠামো ক্ষেত্র ও ভারী শিল্পকে চাঙ্গা করতে ইতিমধ্যেই তাদের নেওয়া ব্যাঙ্কঋণের শর্ত আরও সহজ করে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি, এই শিল্পে ঋণ দিতে গিয়ে ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা যাতে না-বাড়ে, সেই ব্যবস্থাও হয়েছে।
ঋণের অত্যধিক দায় মেটাতে গিয়ে বড়সড় পরিকাঠামো প্রকল্প যাতে থমকে না-যায়, সে জন্য উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। তাদের সেই প্রয়াস সফল করার জন্যই আরবিআই এই সিদ্ধান্ত নিল। ব্যাঙ্কগুলিও এ ধরনের ঋণ ঢেলে সাজার ব্যাপারে আর্জি জানিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে।
শীর্ষ ব্যাঙ্ক সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যে-সব দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের জন্য নেওয়া ব্যাঙ্কঋণের অঙ্ক ৫০০ কোটি টাকার বেশি, সেগুলিই এই সুবিধার আওতায় আসবে। এ ক্ষেত্রে ঋণটি অবশ্য ২৫ বছরের বেশি মেয়াদের হবে না। এ ধরনের ঋণকে ঢেলে সাজার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। যে-ভাবে তা করা যাবে, তা হল:
• ওই সব ঋণ প্রতি ৫ বছর অন্তর ফিরে দেখা হবে। তা পরিশোধের অঙ্ক এবং প্রকল্প রূপায়ণ কতটা হয়েছে, তা দেখে বাড়তি ঋণ নতুন করে দেওয়া হবে। এই নতুন ঋণ পুরনো ব্যাঙ্ক দিতে পারে। প্রয়োজনে তা নতুন ঋণদাতা গোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করেও দেওয়া যাবে। আবার নতুন-পুরনো সংস্থা মিলেমিশে ওই ঋণ দিতে পারবে। লক্ষ্য, সংস্থা ও ঋণদাতা, দু’পক্ষের উপর চাপ কমানো। ২৫ বছর পর্যন্ত মেয়াদি ঋণের জন্য এই ৫:২৫ ব্যবস্থা এত দিন নতুন ঋণের জন্যই বহাল ছিল। নতুন ঋণ ছাড়া পুরনো ঋণের জন্যও এ বার তা প্রযোজ্য।
• ঋণ ফিরে দেখার সময়ে কর্পোরেট বন্ড ইস্যু করেও অর্থ জোগানের ব্যবস্থা করতে পারবে ঋণদাতা।
• ঋণের মেয়াদ বাড়ানো যাবে, যাতে তা ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ হয়ে না-দাঁড়ায়।
• যে-সব ঋণ ইতিমধ্যেই অনুৎপাদক সম্পদের তকমা পেয়েছে, সেগুলিরও মেয়াদ বাড়ানো যাবে, যাতে ওই বোঝা কমানো যায়।
• মেয়াদ বাড়ানোর অন্যতম শর্ত হিসেবে ঋণের নিট মূল্যায়ন একই থাকবে।
অক্টোবরে দেশের পরিকাঠামোয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৬.৩%। যা গত চার মাসে সর্বোচ্চ। আগের অর্থবর্ষে একই সময়ে ওই হার সরাসরি কমে গিয়েছিল ০.১%। তবে এপ্রিল থেকে অক্টোবর, এই সাত মাসে পরিকাঠামো শিল্পে বৃদ্ধির হার খুব একটা বেশি নয়। আগের বছরের ৪.২ শতাংশের তুলনায় এ বার তা দাঁড়িয়েছে ৪.৩ শতাংশে।
প্রসঙ্গত, মোট আটটি ক্ষেত্র নিয়ে তৈরি হয় পরিকাঠামো শিল্প। এগুলি হল: অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল শোধন ক্ষেত্র, ইস্পাত, কয়লা, সার, সিমেন্ট ও বিদ্যুৎ।