সুব্রত রায়
সুব্রত রায়কে জেল থেকে ছাড়ানোর টাকা জোগাড় করতে একেবারে প্রথম ধাপেই বিদেশের হোটেলগুলি বিক্রি করে দিতে চাইছে না সহারা। বরং এই মুহূর্তে সেগুলি বন্ধক রেখে জামিনের ১০ হাজার কোটি টাকা তুলতেই তারা বেশি আগ্রহী। সংস্থার নিউ ইয়র্ক ও লন্ডনের তিনটি হোটেল বিক্রি নিয়ে সুব্রতবাবুর আলাপ-আলোচনা চালানো প্রসঙ্গে শুক্রবার এই দাবিই করেছেন সহারার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
এ দিকে, এই দিনই তিহাড় চত্বরের বিশেষ জেলে তাঁর অস্থায়ী দফতর চালিয়ে যাওয়ার মেয়াদ আরও ১৫ দিন বাড়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছেন সহারা-কর্তা। শীর্ষ আদালত আগামী সপ্তাহের শুরুতে এ বিষয়ে রায় জানাতে পারে।
টাকা জোগাড়ের মরিয়া চেষ্টায় মাসখানেক ধরে হন্যে হয়ে হোটেলগুলির ক্রেতা খুঁজছেন ছ’মাস ধরে জেলবন্দি সুব্রত রায়। তিহাড় চত্বরের সম্মেলন কক্ষে তৈরি বিশেষ জেলে বসে আগ্রহী ক্রেতাদের সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা চালাচ্ছেন তিনি। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবারই শেষ হয়ে যাচ্ছে সহারা-কর্তার জন্য মঞ্জুর করা এই বিশেষ সুবিধার সময়সীমা। এ দিন সুব্রতবাবুর আইনজীবীর দাবি, অনেক প্রস্তাবই আসছে সংস্থার কাছে। কিন্তু বিক্রি নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও কিছুটা বাড়তি সময় পাওয়া জরুরি।
তবে শুরু থেকে বিদেশের হোটেলগুলি বিক্রি করার কথা বলে আসলেও, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার ওই আধিকারিকের গলায় এ দিন শোনা গিয়েছে অন্য সুর। তাঁর দাবি, “এই মুহূর্তে কোনও ভাবে টাকা জোগাড় করাই প্রথম লক্ষ্য। সে জন্য এখন হোটেলগুলি বন্ধক রেখে ঋণ নিতে চাইছি। সেগুলি বিক্রি করা আমাদের শেষ অস্ত্র।” তবে শেষ পর্যন্ত যদি সত্যিই বিক্রি করতে হয়, সে ক্ষেত্রে তা নির্দিষ্ট সময় ধরে ধাপে ধাপে করা হবে বলেই জানান তিনি।
সহারা আপাতত হোটেল বিক্রির পরিকল্পনা নেই বলে জানালেও, এ দিন অন্য এক সূত্রে খবর, সম্পত্তি বিক্রির ব্যাপারে আচমকাই গুরুতর সমস্যায় পড়েছে সুব্রত রায়ের সংস্থা। বিক্রির চুক্তি প্রায় পাকা হয়ে যাওয়ার পরও তা হঠাৎ ভেস্তে যেতে বসেছে। ওই সূত্রের দাবি, এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চকে সুব্রতবাবুর আইনজীবী জানিয়েছেন, ব্রুনেইয়ের সুলতান সহারার হোটেল কিনছেন বলে আন্তর্জাতিক একটি সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের পর হোটেলের বাইরে বিপুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আইনজীবীর দাবি, এর ফলে হোটেল কেনার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভাব্য ক্রেতা এখন তা ফের খতিয়ে দেখতে চাইছে। যা শেষ পর্যন্ত তাদের সরে যাওয়ার ইঙ্গিতও হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে ওই ক্রেতাকে ধরে রাখার জন্য আরও এক প্রস্ত আলোচনা চালাতে এবং দরকার পড়লে তালিকায় থাকা পরের ৩-৪ জন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলতে বাড়তি সময় দরকার সহারার। এই যুক্তি দর্শিয়েই বাড়তি ১০ দিন তিহাড়ে সংস্থার দফতর চালাতে সায় চাওয়া হয়েছে বলে ওই সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল যে, ব্রুনেইয়ের সুলতানের একটি লগ্নি সংস্থা সহারার হোটেল কিনতে চলেছে। কিন্তু সুলতানের মুখপাত্র ওই সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন।