অর্থনীতির হাল ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে একই দিনে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি নামল ৫.৫২ শতাংশে, শিল্পোত্পাদন বাড়ল ২.৫%।
তবে শঙ্কা যে-পুরোপুরি কাটেনি, সেটাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের আশঙ্কা, এর জেরে এখনই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাবে না। বরং আগামী মার্চ পর্যন্ত তা অপরিবর্তিতই থাকতে পারে। একই পূর্বাভাস দিয়েছে রয়টার্সের সমীক্ষা। তাদের মতে তেল ও খাদ্য- পণ্যের দাম আপাতত কমলেও তা আচমকা বেড়ে গেলে লাফিয়ে বাড়বে মূল্যবৃদ্ধির হারও। তাই এই হার আর একটু থিতু হওয়ার অপেক্ষায় আছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। ফলে সুদ কমানোর পথে হাঁটার জন্য তারা মার্চ পর্যন্ত, অর্থাত্ আগামী বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ডিবিএস ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ রাধিকা রাও বলেন, শিল্পমহল সুদ কমানোর জন্য চাপ দিলেও মনে হয় না শীর্ষ ব্যাঙ্ক তাতে সাড়া দেবে। রয়টার্সের সমীক্ষা জানাচ্ছে, রেপো রেট সম্ভবত ৮ শতাংশেই বেঁধে রাখবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। একই মত বিদেশি আর্থিক সংস্থা এইচএসবিসি-র। তাদের ধারণা, আগামী বর্ষার মরসুম পর্যন্ত সাবধানে চলবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। প্রসঙ্গত, আগামী ২ ডিসেম্বর ঋণনীতি ফিরে দেখবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।
খাদ্য সামগ্রীর দাম কমার হাত ধরে অক্টোবরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি বেশ কিছুটা কমেছে বলে বুধবার জানিয়েছে কেন্দ্র। ২০১২ সালে নতুন দফায় হিসাব শুরুর পর এটাই সর্বনিম্ন। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কমেছে ৫.৫৯%। শাক-সব্জির দর সরাসরি কমেছে ১.৪৫%, যেখানে সেপ্টেম্বরে তা বাড়ে ৮.৫৯%। ফলের মূল্যবৃদ্ধি কমেছে ১৭.৪৯%। সার্বিক (পাইকারি)মূল্যবৃদ্ধির হার জানানো হবে শুক্রবার। ইতিমধ্যেই সেপ্টেম্বরে এই হার নেমেছে ২.৩৮ শতাংশে।
পাশাপাশি, এ দিনই শিল্পোত্পাদন তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে বেড়ে সেপ্টেম্বরে ছুঁয়েছে ২.৫%। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মতে এটা অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোরই ইঙ্গিত। মূলত কারখানার উত্পাদন (২.৫%), খনন (০.৭%) ও মূলধনী পণ্যের (১১.৬%) উত্পাদন বৃদ্ধিই এর কারণ, জানিয়েছে সরকারি হিসাব।
মূলধনী পণ্যের উত্পাদন এতটা বাড়া অর্থনীতিতে চাহিদা বৃদ্ধিরই লক্ষণ বলে মনে করছে শিল্পমহল। এই প্রবণতা চললে ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও কিছুটা স্থিতিশীল হলে সুদ কমে আসবে বলে তারা আশাবাদী।