শুনশান। হিন্দমোটরের তালাবন্ধ কারখানা। —নিজস্ব চিত্র
স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের আবেদনপত্র বিলির সময়ে তেমন একটা সাড়া দেননি হিন্দুস্তান মোটরসের কর্মীরা। মঙ্গলবার আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনেও ছবিটা খুব একটা বদলায়নি বলেই খবর। তবে ঠিক কতজন কর্মী শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছাবসর নিলেন, এ দিন রাত পর্যন্ত তা স্পষ্ট করেননি সংস্থা কর্তৃপক্ষ। যদিও কর্মী মহলের দাবি, যতজন আবেদনপত্র নিয়েছিলেন, তার চেয়ে অনেক কম কর্মীই শেষ পর্যন্ত তা জমা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মে হিন্দুস্তান মোটরসের উত্তরপাড়া কারখানায় কাজ বন্ধ হয়েছিল। তার পর এ মাসের শুরুতে কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের নোটিস ঝুলিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়েছিল, প্রত্যেক কর্মীকে যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বাড়তি ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। ৯ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সংস্থার মোট ২,৩০০ জন কর্মীর মধ্যে আবেদনপত্র নিয়েছিলেন ৯২৫ জন। মঙ্গলবারই ছিল যেগুলি জমা দেওয়ার শেষ দিন।
দেখা গিয়েছে যে-সমস্ত কর্মী স্বেচ্ছাবসর চেয়ে আবেদন করেছেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশেরই আর অল্প কয়েক বছর চাকরি রয়েছে। যাঁদের বেশি দিন চাকরি আছে, তাঁদের তরফে এই প্রকল্প সম্পর্কে খুব বেশি সাড়া মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে সংস্থা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হলেও এ দিন রাত পর্যন্ত তার কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।
এমনকী কতজন শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছাবসর বা ভিআরএস নিলেন, তা স্পষ্ট নয় কর্মী ইউনিয়নগুলির কাছেও। তাদের অভিযোগ, গোটা বিষয়টি চুপচাপ চলেছে। গত ১৫ জুনের পরে কোনও ত্রিপাক্ষিক বৈঠক না-হওয়ার জন্যও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা।
সিটু নিয়ন্ত্রিত হিন্দুস্তান মোটরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মণীন্দ্র চক্রবর্তী জানান, তাঁরা নীতিগত ভাবে এই পদ্ধতিতে কর্মীদের ভিআরএস দেওয়ার বিরোধী। রাজ্য সরকার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি বলেও তাঁর অভিযোগ।
সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আফসার ইমাম খানের দাবি, হিন্দুস্তান মোটরসের স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পটি একটি প্রহসন মাত্র। কারণ নিয়ম মাফিক পাওনার উপরন্তু যে-এক লক্ষ টাকা সংস্থা দেওয়ার কথা বলেছে, তা আজকের বাজারে নামমাত্র। তাই এই প্রকল্পটি অবাস্তব বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
সংগ্রামী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক আভাস মুন্সীর দাবি, কর্মীরা স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প প্রত্যাখ্যান করেছেন। আগামী দিনে আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা।