বাজেটে বরাদ্দ মেলায় বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ার আশা

প্রথাগত জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে বাজেটে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির উপর জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন তিনি। এ ধরনের গাড়ি তৈরি করতে যে-সব যন্ত্রাংশ প্রয়োজন হয়, সেগুলির কয়েকটির উপর আমদানি ও উৎপাদন শুল্ক ছাড়ের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০২:২১
Share:

প্রথাগত জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে বাজেটে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির উপর জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন তিনি। এ ধরনের গাড়ি তৈরি করতে যে-সব যন্ত্রাংশ প্রয়োজন হয়, সেগুলির কয়েকটির উপর আমদানি ও উৎপাদন শুল্ক ছাড়ের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বস্তুত, বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি নিয়ে পূর্বতন ইউপিএ জমানা থেকেই বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা চূড়ান্ত হয়নি। গাড়ি শিল্পের অভিযোগ ছিল, আর্থিক সহায়তা ও গাড়ি চার্জ করার মতো পরিকাঠামোর অভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা তৈরি হচ্ছে না। কারণ এমনিতেই এই গাড়ির দাম খুব বেশি।

জেটলি তাঁর বাজেট প্রস্তাবে প্রাথমিক ভাবে কিছু অর্থ মঞ্জুর করায় অন্তত বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির সহায়ক পরিবেশ গড়ার পথে এক পা এগোনো গেল বলেই মনে করছেন গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম-এর প্রেসিডেন্ট বিক্রম কির্লোস্কর ও মহীন্দ্রা গোষ্ঠীর এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর পবন গোয়েন্কা। বরাদ্দ খুব বেশি না-হলেও এ ধরনের গাড়ি তৈরির প্রয়োজনীয়তার স্বীকৃতি মেলায় খুশি তাঁরা। গোয়েন্কার বক্তব্য, আগে এই গাড়ি কিনলে ক্রেতারা কিছুটা সরকারি আর্থিক সাহায্য পেতেন। কিন্তু এখন তা মেলে না। প্রসঙ্গত, মহীন্দ্রা গোষ্ঠী বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা সংস্থা ‘রেভা’-কে কিনে নিয়েছে। কিন্তু মাসে কমপক্ষে ২০০টি গাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখন তা ৫০-৭০টির আশেপাশেই ঘোরাফেরা করে।

Advertisement

সার্বিক ভাবে গাড়ি শিল্পের জন্য বাজেটে তেমন কিছু আকর্ষণীয় প্রস্তাব এ বার নেই। কিন্তু বৈদ্যুতিক গাড়ির পাশাপাশি দেশেই বাণিজ্যিক গাড়ি তৈরি বাড়াতেও উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। যেমন, সম্পূর্ণ তৈরি বাণিজ্যিক গাড়িতে আমদানি শুল্ক ১০% থেকে বাড়িয়ে ২০% করার কথা বলেছেন জেটলি। এতে খুশি গাড়ি শিল্প। সিয়াম-এর ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর ও টাটা মোটরস-এর মুখপাত্রের বক্তব্য, আমদানি কমলে ভারতের বাণিজ্যিক গাড়ি শিল্প উপকৃত হবে। এবং এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের ‘মেক-ইন-ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

দেশের গাড়ি ব্যবসা এখনও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তবে অশোক লেল্যান্ড-এর এমডি বিনোদ দশারি, জেনারেল মোটরস-এর এমডি অরবিন্দ সাক্সেনা ও পবন গোয়েন্কা-র মতে, সরাসরি করছাড়ের খুব বেশি সুবিধা না মিললেও গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু আনুষঙ্গিক প্রস্তাব বাজেটে রেখেছেন জেটলি। যেমন এক লক্ষ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি বা পরিকাঠামো শিল্পে ৭০ হাজার কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বিশেষ করে বাণিজ্যিক গাড়ির চাহিদা বাড়াবে।

গোয়েন্কা-র মতে, পাশাপাশি বিভিন্ন আর্থিক কর্মকাণ্ড ও সঞ্চয়ের জেরে আমজনতার হাতে বাড়তি অর্থ এলে দু’চাকার গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধিরও সম্ভাবনা। স্বনির্ভর উদ্যোগপতি গড়তেও আর্থিক পরিকাঠামো তৈরির কথা বাজেটে বলেছেন জেটলি। দশারি-র বক্তব্য, এর ফলে কম দামি গাড়ির চাহিদা বাড়লে ছোট বাণিজ্যিক গাড়ির বাজারও বাড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement