বাড়ল মাথাব্যথা! বেজিংয়ে গুগ্লের সদর দফতর। ছবি: এপি
সংঘাতের সম্ভাবনা ফের জোরদার হল গুগল এবং চিনের মধ্যে। এ বার নজরে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটির ই-মেল পরিষেবা ‘জি-মেল’।
গুগলের নিজস্ব পরিসংখ্যান অনুসারে, গত শুক্রবার থেকে হঠাৎ করেই সে দেশে সংস্থার মেল পরিষেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে কমে গিয়েছে। শনিবার যা প্রায় শূন্যের কাছে পৌঁছে যায়। সোমবার অবশ্য তা বেড়েছে সামান্য। সংস্থার তরফ থেকে পরিষেবায় কোনও ত্রুটি হয়নি বলেই দাবি জানিয়েছে গুগ্ল। আর এই বক্তব্যই তুলে আনছে ফের সংঘাতের বিষয়টি।
বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির উপর নজরদারি আরও কড়া করতে এবং চিনা নাগরিকরা যাতে বাইরের কোনও সংস্থার পরিষেবা ব্যবহার না-করেন, তা নিশ্চিত করতে সরকারই তাদের বিশেষ ব্যবস্থা ‘গ্রেট ফায়ারওয়াল অব চায়না’-র মাধ্যমে এই পরিষেবা বন্ধ করেছে। যদিও, সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে চিন। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনিং জানান, এই পরিষেবা বন্ধের সম্পর্কে কোনও কথাই তাঁর জানা নেই। বরং সেখানে যাতে সমস্ত বিদেশি সংস্থাই সুস্থ ভাবে ব্যবসা করতে পারে, সে দিকে নজর রাখছেন তাঁরা।
জি-মেল আটকানোয় গুগ্লের ব্যবসা বিভিন্ন দিক থেকে সমস্যায় পড়তে পারে বলে এ দিন মন্তব্য করেন অনেকে। প্রথমত, চিনের ভিতরে যে-সব সাধারণ গ্রাহক ও সংস্থা জি-মেল ব্যবহার করেন, তাঁরা বাধ্য হবেন অন্য সংস্থার মেল পরিষেবা নিতে। গুগ্লের ব্যবসা মার খাবে। দ্বিতীয়ত, চিনের বাইরে থেকে যে- সমস্ত সংস্থা বা ব্যক্তি সে দেশে মেলের মাধ্যমে কথাবার্তা চালান, তাঁরাও সংযোগ বজায় রাখতে গুগ্লের পরিষেবা ছাড়তে বাধ্য হবেন। ফলে অন্যান্য দেশেও কমতে পারে গ্রাহক।
গুগ্লের সঙ্গে চিনের এই সংঘাত অবশ্য নতুন নয়। কমিউনিস্ট শাসিত চিনে সরকারের সঙ্গে মিলে গ্রাহকদের নেট গতিবিধির উপর নজরদারি করতে সংস্থা অস্বীকার করায় এর আগেও দু’ পক্ষের বিরোধ চরমে উঠেছে। যে কারণে, সে দেশ থেকে ব্যবসা গোটানোর ‘হুমকি’ দেয় গুগ্ল। যা নিয়ে আমেরিকা ও চিনের মধ্যে তৈরি হয় রাজনৈতিক টানাপড়েনও। শেষে ২০০৯ সালে চিনা মূল ভূখণ্ড থেকে সার্চ ইঞ্জিন পরিষেবা বন্ধ করে দেয় মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি। এ বারও জুন থেকে সেখানে জি-মেল বন্ধ ছিল। কিন্তু এত ব্যাপক হারে কখনও ব্যাহত হয়নি পরিষেবা। কারণ, এর আগে মোবাইল অ্যাপ ও অ্যাপল মেল, মাইক্রোসফট আউটলুকের মাধ্যমে জি-মেল ব্যবহার করা যেত।