থমকে যাওয়া খনন শিল্প ক্ষেত্রে গতি ফেরাতে ‘মাইনস অ্যান্ড মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেশন’ আইন সংশোধনে ফের উদ্যোগী হচ্ছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারও যাতে খনন প্রকল্প রূপায়ণে তৎপর হয়, সে জন্য পরোক্ষে তাদের উপর চাপ তৈরির রাস্তাও খোলা রাখতে চায় কেন্দ্র। কারণ নীতি কেন্দ্র তৈরি করলেও তা কার্যকর করার দায়িত্ব রাজ্যগুলিরই।
সম্প্রতি কলকাতায় অনুষ্ঠিত সিআইআই-এর দ্বাদশ ‘ইন্টারন্যাশনাল মাইনিং অ্যান্ড মেশিনারি এগ্জিবিশন অ্যান্ড গ্লোবাল মাইনিং সামিট’ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় খনি সচিব অনুপ পূজারী ওই আইন সংশোধনের কথা জানান। এর আগে ইউপিএ সরকার এই আইন সংশোধনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল। ক্ষমতায় আসার পরে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি।
খনি সচিব জানিয়েছেন, খসড়া সংশোধনী আইন নিয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত খনি মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে মতামত জানাতে পারবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। তারপর সেই মতামত খতিয়ে দেখে শীতকালীন অধিবেশনেই সংশোধিত আইনটি অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
মূলত কয়লা ব্লক বণ্টনের ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তা নতুন করে নিলামে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গত দু’বছর কোনও খনির জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। পূজারীর কথায়, “কী ভাবে খনি বরাদ্দ করা হবে সেটাই মূল বিষয়।” পাশাপাশি, লগ্নিকারীদের আস্থা বাড়াতে আইন সংশোধন করে গোটা পদ্ধতিতে গতি আনাও তাঁদের মূল লক্ষ্য।
শিল্পমহলের দাবি, নীতি তৈরির পাশাপাশি তা চালু করতেও সমান দ্রুততা জরুরি। নীতি কাযর্করে দায়িত্ব রাজ্যগুলিরই। পূজারী জানান, খনি লিজ সংক্রান্ত আবেদন নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে এখনকার নিয়ম অনুযায়ী, তা ৬০ দিনের মধ্যে জানাতে হয়। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও যতক্ষণ না সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার কোনও নির্দেশ দিচ্ছে, ততক্ষণ তার বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকলেও লগ্নিকারী সেই রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের দরবারে যেতে পারেন না।
সংশোধনীতে নির্দেশ ছাড়াও যাতে লগ্নিকারী কেন্দ্রের দ্বারস্থ হতে পারেন, তার ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব রয়েছে। এ নিয়ে সমস্ত রাজ্য সরকারকেই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান পূজারী। তবে এখনও কোনও রাজ্য জবাব দেয়নি।
এ দিকে, সংশোধিত আইন কার্যকরের পরে তিন মাসেরও কম সময়ে খনি নিলাম শুরু করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন পূজারী।