প্রতীকী ছবি।
বড় মাপের আন্দোলনে নামতে চলেছেন বিভিন্ন সরকারি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কর্মীরা। যাঁরা আশা, অঙ্গনওয়াড়ি, মিড ডে মিল, পুরস্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে কাজ করেন। অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দিনভর কাজ করা সত্ত্বেও কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি পান না তাঁরা। বেতন অতি সমান্য। নেই পিএফ, ইএসআইয়ের মতো সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধাও। এ রাজ্যে এমন কর্মী আছেন ৬ লক্ষের মতো। সারা দেশে প্রায় ১ কোটি।
নিজেদের দাবি আদায়ে ইতিমধ্যেই অগস্টের প্রথম সপ্তাহে অসংগঠিত ক্ষেত্রের ওই সব কর্মী দেশ জুড়ে দু’দিনের ধর্মঘট পালন করেছেন। এ বার বড় আন্দোলনে নামতে স্কিম ওয়ার্কার্স ফেডারেশন নামে জাতীয় সংগঠন তৈরি করেছেন তাঁরা। যার ছাতার তলায় রয়েছেন বিভিন্ন রাজ্যে ওই সব সরকারি প্রকল্পের কর্মীরা।
সূত্রের খবর, প্রকল্পগুলির সিংহভাগই কেন্দ্র পরিচালিত। রাজ্য উৎসাহ ভাতা হিসেবে কিছু টাকা দেয়। বাকি খরচ বহন করার কথা কেন্দ্রের। কিন্তু কর্মীদের অভিযোগ, নানা কারণ দেখিয়ে মোদী সরকার প্রকল্পের টাকা ক্রমশ কমাচ্ছে। ফলে তাঁরাও ভুগছেন। আর্থিক সঙ্কটে পড়ার অভিযোগ তুলছেন অনেকেই। বস্তুত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলিতে কেন্দ্রের টাকা দেওয়া কমানোর অভিযোগ ইতিমধ্যেই তুলেছে বহু রাজ্যও।
অভিযোগ
• দিনভর কাজ করেন, কিন্তু কর্মী হিসেবে কোনও স্বীকৃতি নেই।
• বেতন অতি সামান্য।
• প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ), ইএসআইয়ের মতো সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা দেওয়া হয় না।
• যত দিন কাজ, তত দিন মজুরি। ফলে আয়ের অনিশ্চয়তা চূড়ান্ত।
• অনেক প্রকল্পে সাপ্তাহিক ছুটিও নেই।
স্কিম ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইসমত আরা খাতুন বলেন, কিছু প্রকল্পে কর্মীদের আয় মাসে ৩১০০-৭৫০০ টাকা। মিড ডে মিলে ১৫০০-২০০০ টাকা। সমস্ত প্রকল্পেই যত দিন কাজ, তত দিনের মজুরি মেলে। আশার মতো অনেক প্রকল্পে সাপ্তাহিক ছুটিও নেই। এই প্রকল্পে গ্রাম ও শহরে গর্ভবতী মায়েদের এবং শিশুর জন্মের পরে ৫ বছর পর্যন্ত স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন, ওষুধ খাওয়ানো, ইঞ্জেকশন দেওয়া, ওজন ঠিক আছে কি না দেখা। জন্ম নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন রোগ নিয়ে সচেতন করার কাজও করেন কর্মীরা। খাতুনের অভিযোগ, অনেক সময়েই দেখা যায় কর্মীরা কাজের ৯০% শেষ করলেও, অনিচ্ছাকৃত ভাবেই হয়তো বাকিটা % শেষ করতে পারলেন না। সে ক্ষেত্রে ওই ৯০ শতাংশের টাকাও পান না তাঁরা।
কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে ৪৫ ও ৪৬তম ভারতীয় শ্রম সম্মেলনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন ও কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি-সহ নানা শর্ত কার্যকর করার দাবি তুলেছেন খাতুন। এ ছাড়া দাবি-সনদে সবেতন সাপ্তাহিক ছুটি, পিএফ, ইএসআইয়ের সুবিধা, বোনাস এবং পেনশনের দাবিও রয়েছে।
এ দিকে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এআইইউটিইউসির সভাপতি শঙ্কর সাহার অভিযোগ, বিশেষত আশা-সহ কিছু প্রকল্পে কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে পরিষেবা দিতে হয়। কিন্তু করোনা আবহে নিরাপত্তার জন্য পিপিই কিট-সহ কোনও সামগ্রী পাচ্ছেন না তাঁরা।