প্রতীকী ছবি
নতুন গাড়ির চাবি হাতে নিতে এ বার কতটা আগ্রহী হবেন সম্ভাব্য ক্রেতা, এই জল্পনাকে উস্কে দিয়েছে মোদী সরকারের উৎপাদন শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত। একাংশের দাবি, একটু হলেও আগ্রহ ফিরতে শুরু করবে। অন্য অংশের মতে, তেল যে রকম বেড়েছে তার তুলনায় কমেছে সামান্য। এর কোনও প্রভাবই পড়ার কথা নয়। আরও কমলে, তবে বলা যাবে। কেউ কেউ আবার বলছেন, গাড়ির চাহিদায় তেলের দামের প্রভাব সামান্যই। ফলে তেমন কিছু বলা মুশকিল।
অতিমারির আগেই অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে গাড্ডায় পড়েছিল যে গাড়ির বাজার, করোনার আবহে আর্থিক টানাটানির মধ্যে তাকেই আরও ধাক্কা দেয় তেলের চড়া দর। পেট্রল হোক বা ডিজ়েল, লিটার পিছু ১০০ টাকা দামের জ্বালানি কিনতে গিয়ে নাজেহাল বহু মানুষ একান্ত প্রয়োজন না-পড়লে গ্যারাজ থেকে গাড়ি বার করা বন্ধ করেন। মফস্সলে স্কুটি ব্যবহারে অভ্যস্ত একাংশকে ফিরে যেতে দেখা যায় সাইকেলে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বিশেষত মধ্যবিত্ত এবং দু’চাকার মালিকদের অনেকেই বাধ্য হয়েছেন গাড়ি চড়া কমাতে। বহু সম্ভাব্য ক্রেতা কেনার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন। এমন সময় হঠাৎ দেশে তেলের দাম কমায় চর্চা শুরু হয়েছে, যাঁরা গাড়ি কেনার কথা ভেবেও চড়া তেলের জন্য পরিকল্পনা স্থগিত রাখছিলেন তাঁরা কি সিদ্ধান্ত বদলাবেন?
গাড়ি শিল্পের প্রাথমিক প্রক্রিয়া, তেল কিছুটা সস্তা হওয়ায় সম্ভাব্য ক্রেতার একাংশ হয়তো আগ্রহী হবেন। বিশেষত দু’চাকা, কম দামি চার চাকা এবং বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রিবাটা বাড়তে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, তেলের দাম যে রকম বেড়েছে তার তুলনায় কমেছে সামান্য। ফলে গাড়ি শিল্পে তার প্রভাব নিয়ে সংশয় আছে।
ডিলারদের সংগঠন ফাডা আগেই বলেছিল, চড়া তেল এবং করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গ্রামে ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের কারণে কম দামি গাড়ির সম্ভাব্য ক্রেতারা মুখ ফিরিয়েছেন। তবে সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ ভাণ্ডারির বক্তব্য, গ্রামীণ অর্থনীতি ধাক্কা খেলে দু’চাকার গাড়ি বিক্রি কমে। গত বছর আর্থিক কর্মকাণ্ড খোলার পরে সিংহভাগ আগ্রহী ক্রেতার গাড়ি কিনে নেওয়া এবং এ বার অন্যান্য বিনোদনে খরচ বৃদ্ধিও কিছুটা দায়ী, বলছেন রাজ্যে সংগঠনের ডিরেক্টর (দু’চাকা) কুশল বাজোরিয়া। তাঁদের দাবি, এর পরে আসে তেলের দামের জের।
সিদ্ধার্থের অবশ্য আশা, তেলের দাম কমায় দু’চাকার গাড়ি ও বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি কিছুটা বাড়বে। তবে পাম্প মালিকদের প্রশ্ন, দাম কমেছে সামান্যই। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল আরও চড়লে দেশে যে তেল ফের বাড়তে শুরু করবে না, সেই নিশ্চয়তা মেলেনি। সে ক্ষেত্রে এই অল্প স্বস্তি ক্রেতাকে টেনে আনবে শো-রুমে?
আশা আর অনিশ্চয়তার এই দোলাচলে প্রথমটিরই পাল্লা ভারী থাকুক, চাইছে গাড়ি শিল্প।